ক্রিং ক্রিং……… হ্যালো!
বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিস্ময়কর আবিষ্কার এর মধ্যে একটি অন্যতম হলো টেলিফোন। যা আজ বিভিন্ন পথ পরিক্রম করে মোবাইল ফোনে রূপান্তরিত হয়েছে। তবুও সারাবিশ্বে মানুষ ফোন বেজে উঠলে রিসিভার অন করে বলে ওঠে “হ্যালো”. এমনকি আমরা বিভিন্ন মানুষের সাথে মেসেঞ্জারে কিংবা বাস্তবে কথোপকথন শুরু করার ক্ষেত্রে প্রথমেই হ্যালো বলে।
টেলিফোন আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের কথা আমরা কমবেশি অনেকেই জানি। তিনি বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার মা এবং স্ত্রী দুজনেই বধির ছিল। তাদের মেশিনের মাধ্যমে শুনতে পাওয়ার পাওয়া যায় এমন যন্ত্র তৈরি করতে গিয়ে তিনি টেলিফোন আবিষ্কার করে বসেন। যখন প্রথম অপর প্রান্তে ফোন দেয়া সম্ভব হয় তিনি রিসিভার তুলে প্রথম বলেন “হ্যালো”।
অনেকেই বলেন হ্যালো মূলত আলেকজান্ডারের প্রেমিকা “মার্গারেট হ্যালো” এর নাম থেকে এসেছে। মার্গারেট হ্যালো নাম অনুসারে ই তিনি টেলিফোনফোনে সর্ব প্রথম হ্যালো শব্দ ব্যবহার করেন। সেই থেকে আজ সারা বিশ্বের মানুষ আজওফোন তুলেই ”হ্যালো” বলে কথোপকথন শুরু করে।
অন্যভাবে বলে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল কে সবাই না চিনলেও, তার প্রেমিকাকে স্মরণ করছে যুগ যুগ ধরে ফোনের মাধ্যমে; এরকম মিষ্টি প্রেমের গল্প অনেকদিন ধরে প্রচলিত ছিল।
কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে জানা যায় এটা কি ভুল ধারণা!! কারণ আলেকজান্ডারের এক এবং একমাত্র স্ত্রী ছিলেন মার্বেল গার্ডিনার হুবার্ড। এবং বিভিন্ন তথ্যসূত্রে মার্গারেট হ্যালো নামক কোন মহিলার অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
পাশাপাশি বিবেচনা করলে তা বুঝা যায়, টেলিফোন আবিষ্কার হওয়ার প্রথম দিকে কোনো ফোন বেজে ওঠার ব্যবস্থা ছিল না অর্থাৎ রিং ব্যবস্থা ছিল না। একপাশের টেলিফোন লাইনের সাথে অপর টেলিফোন লাইন সবসময় যুক্ত থাকতো। প্রয়োজনের সময় দুই প্রান্তের ব্যক্তিকেই একই সময়ে রিসিভার এর কাছে থাকতে হতো।এক সময়ে এক পাশের ব্যক্তির সঙ্গে অপর পাশের ব্যক্তির কথোপকথন শুরু হওয়ার পূর্বে সম্ভাষণের প্রয়োজন হল। মূলত টমাস আলভা এডিসন ১৮৭৭ সালে ’প্রিন্সিপাল অফ রিকোর্ডেড সাউন্ড’ আবিষ্কারের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে উচ্চস্বরে হ্যালো শব্দটি বা ব্যবহার করছিলেন। ‘হ্যালো’শব্দটি প্রথম এডিসনের উদ্ভাবিত ‘পেপার সিলিন্ডার ফনোগ্রাফ’যন্ত্রের রেকর্ড করেছিলেন।
*উল্লেখ্য, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোনের আবিষ্কার করেছিলেন ১৮৭৬ সালে। এর থেকে ঠিক এক বছর গ্রাহাম বেল সর্বপ্রথম তার সহকারীকে ফোন করেছিলেন। তিনি সম্ভাষণের জন্য হ্যালো বলেনি।তিনি সম্ভাষণের জন্য এমন একটি শব্দ ব্যবহার করেছিলেন
যার উচ্চারণ অনেকটা ‘আহয় ই’ এর মতো। এডিসন ই প্রথম
ফোনে সম্ভাষণের জন্য হ্যালো শব্দের ব্যবহার করেন।
শেষে বলতে পারি, হ্যালো বলার পিছনে যে কাহিনীটাই সঠিক হোক না কেন। আজও বিশ্বের ৯৮ শতাংশ মানুষ ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলে কথোপকথন শুরু করে। এবং এর ইতিহাস ঘাটতে গেলে বেরিয়ে আসে মার্গারেট হ্যালো,এডিসনের কাজ কিংবা আলেকজান্ডার এর আবিষ্কার সমূহ।