আমাদের জীবন আজও ছুঁয়ে আছে আমাদের পূর্বপুরুষদের ছায়া। ভাবুন তো—হাজার বছর আগে যে পোশাক মানুষ পরত, তার রূপ আমরা আজও শালওয়ার কামিজ হিসেবে পরিধান করি!
প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ সালের দিকে, বর্তমান
পাকিস্তানে ইন্দো-স্কিথিয়ান ও পার্থিয়ানরা চলাফেরা শুরু হয় । তখন থেকেই এ অঞ্চলে শালওয়ার কামিজের প্রচলন দেখা যায়। পরে কুশান ও হোয়াইট হানদের আগমনে এই পোশাক আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এর মূল জন্মভূমি ছিল কেন্দ্রীয় এশিয়া, যেখানে মানুষ প্রতিদিন শালওয়ার কামিজ পরে কাজ করত। তুর্কি মুসলিমরা যখন এ দেশে বসতি গড়ে, তখন তারাও এই পোশাক তাদের সাথে নিয়ে এসেছিল, আর তা প্রায় অপরিবর্তিতভাবেই টিকে গেল মুসলিম যুগেও।
শুধু পোশাক নয়, জীবনযাত্রার আরও অনেক কিছু আজও সেই প্রাচীন সময়ের মতই চলছে l ইন্দাস নদীর নৌকাগুলো এখনো হরপ্পা সভ্যতার নৌকার মতো। যেন নদীর ঢেউ আজও আমাদের চোখে দেখিয়ে দেয় অতীতের ভেলা।

পাঞ্জাবি রান্নাঘরে ঐতিহ্যবাহী শালওয়ার কামিজ পরা নারীসমূহ, ১৮৯৯ সাল। © wikimedia
রান্নার ক্ষেত্রেও একই গল্প। নান রুটি বা তন্দুরি চিকেন—এগুলো কি শুধু আধুনিক খাবার? না, এর শিকড় অনেক গভীরে। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০ সালের বালাকোটে খননকার্যে প্রতিটি ঘরে পাওয়া গেছে মাটির চুলা। হরপ্পা ও মোহেনজোদারোতেও দেখা গেছে ছোট ছোট তন্দুর, যেগুলো দরজার পাশেই খোলা থাকত—অদ্ভুতভাবে আজকের তন্দুরের মতোই!
ইতিহাস তাই কেবল বইয়ের পাতায় আটকে নেই। পাকিস্তানের পোশাক, নৌকা, রান্না—সবকিছুতেই এখনো বেঁচে আছে প্রাচীন সভ্যতার রঙ। এ শুধু অতীত নয়, আমাদের আত্মারই এক অনন্ত গল্প।