এই মনোমুগ্ধকর স্থাপনাটি লিবিয়ার প্রাচীন শহর ঘাদামেসের l ঘাদামেসের “মরুভূমির মুক্তা” নামেও পরিচিত। এর নির্মাণশৈলীতে ফুটে উঠেছে সাহারা অঞ্চলের মানুষগুলোর শত শত বছরের পুরনো শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা l এখানে বের্বার, রোমান ও ইসলামি ঐতিহ্য একসাথে মিশে গেছে। এই ছবিটি একটি শিল্পীর কল্পনা হলেও , এটি ঘাদামেস শহরের কাদামাটি ও পাথরে গড়া ঐতিহাসিক স্থাপত্যের ছবি অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। শহরটিতে দুই হাজার বছরের আগে থেকে মানুষের বসবাসের প্রমাণ রয়েছে l বর্তমানে এটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
বহুতল এই স্থাপনাটির প্রতিটি ধাপ সূর্যের তাপে শুকানো কাদা ও পাথরের ব্যবহারে তৈরি, যার ভেতরে আঁকাবাঁকা সরু পথ ও ছোট ছোট আঙিনাগুলোতে মানুষের কঠিন কিন্তু নান্দনিক জীবনযাপনের ধারণ করে। পাশের শঙ্কু আকৃতির মিনারগুলো সম্ভবত প্রাচীন শস্যাগার বা মসজিদের মিনার, যা তখনকার সমাজজীবন ও আধ্যাত্মিকতার অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। চারপাশে ছড়িয়ে থাকা টেরাকোটার হাঁড়ি, মাটির পাত্র ও হস্তনির্মিত পণ্য বহু শতাব্দীর বাণিজ্য ও কারুশিল্পের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষ্য দেয়। আর মানুষগুলো যেন এই নিঃশব্দ দেয়ালের মাঝে জীবন্ত চিত্রকর্ম হয়ে উঠেছে।

লিবিয়ার সাহারায় ঐতিহাসিক ঘাদামেসের ছবি ছবির উৎস Dariusz Brzozowski
এই উঁচু নিচু মাটির গ্রামে আলো আসে বৈজ্ঞানিক ভাবে, আর স্থানের গঠন এমনি যেন বাতাস ও স্মৃতির ছোঁয়ায় তৈরি। এটি কি ধ্বংসাবশেষের কল্পনাময় পুনর্জন্ম, না কি ভবিষ্যতের চোখে অতীতের এক স্মৃতি? এই দেয়ালগুলোতে কী গল্প লুকিয়ে রেখেছে খুব জানতে ইচ্ছা করে l নিঃশব্দতার মাঝখানে প্রতিটি পা ফেলার শব্দে, প্রতিটি হাঁড়ির ফাঁকে, প্রতিটি মানবিক উপস্থিতির মধ্যে রয়েছে ফিশফিশ করে কিছু বলার আকুতি l