অতিন্দ্রীয় বিষয়ের দর্শক যারা, তারা সাধারণ মানুষের কাছে মঙ্গলের চাইতে –অমঙ্গলের খবরগুলোই প্রচার করে থাকেন বেশী।বলতে গেলে, সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়েই কিনা জানিনা মানুষের অতি দুর্বল স্থানে তারা আঘাত করেন।অতি সহজেই সরল ও বিশ্বাসী মানুষগণ তাদের উপর অন্ধ আস্থা স্থাপন করে।মিসেস জীন ডিক্সনই অতিন্দ্রীয় দর্শকদের মধ্যে প্রথম যিনি প্রেসিডেন্ট কেনেডির বন্ধুদের বার বার সাবধান করে দেয়াছিলেন যে প্রেসিডেন্টের সামনে কিন্তু বড়ই বিপদ!আর এই সাবধান বাণী তিনি বারবারই উচ্চারণ করেন।প্রেসিডেণ্ট কেনেডির মৃত্যুর ১১ বছর আগে-১৯৫২খৃঃএ ,এই অতিন্দ্রীয় দর্শক জীন ডিক্সন তাঁর অতিন্দ্রীয় ক্ষমতার বলে দেখতে পান যে ১৯৬০ সালে একজন নীল নয়ন বিশিষ্ট লোক আমেরিকার গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট পদে বরিত হবেন এবং এটাও ঠিক যে তিনি গুপ্ত ঘাতকের হাতে নিহত হবেন।
১৯৬৩ খৃষ্টাব্দে প্রেসিডেন্ট কেনেডি যখন গুলিবিদ্ধ হতে যাচ্ছেন জীন ডিক্সন মধ্যাহ্ন ভোজের আসরে তাঁর বন্ধুদের কাছে ব্যক্ত করেন,”এখনই –এখনই-কেনেডির উপর কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।তিনি ইতিপূর্বে ভবিষ্যৎ বাণী করেন যে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের মৃত্যু হবে ১৯৪৫ খৃষ্টাব্দে।মহাত্মাগান্ধী নিহত হবেন ১৯৪৮ খৃষ্টাব্দে এবং মার্টিন লুথার কিংও নিহত হবেন ১৯৬৮ খৃষ্টাব্দে।
১৯৪৫ খৃষ্টাব্দে তিনি যখন চার্চিলের সঙ্গে মিলিত হন তখন তিনি চার্চিলকে বলেছিলেন যে যুদ্ধের পর পরই চার্চিল চাকুরী থেকে সরে আসবেন-তাঁকে অবসর দেওয়া হবে।তবে-আশার বাণীও কিছু তাঁকে শুনিয়ে আসেন।তিনি বলেন ১৯৫২ খৃষ্টাব্দে আবার তিনি ক্ষমতায় যাবেন ।আর সবাইকে আশ্চর্য করে দিয়ে তার উভয় ভবিষ্যৎবাণীই কিন্তু সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল ।
১৯৬৩-৬৪ সালে আমেরিকার বর্ণবৈষম্য বিষয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ বাণীও হয় অভ্রান্ত।মহাশূন্য অভিযান সম্বন্ধে তাঁর ভবিষ্যৎবাণীটিও এখন নির্ভুলভাবেই কিন্তু সত্যে পরিণত হয়েছে।তিনি লিখেছিলেন, মহাষুণ্যের কর্মকাণ্ডে অ্যামেরিকার তুলনায় রাশিয়ার ভূমিকা হবে অগ্রগামী।
১৯৮০ খৃষ্টাব্দের জগত জুরে যে হত্যা কাণ্ড সংঘটিত হয় তার চিত্র তিনি অতিন্দ্রীয় ক্ষমতাবলে পূর্বেই দেখতে পান।আরো দেখতে পান ১৯৬২ খৃঃমধ্য এশিয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন এক বিশ্বনেতার জন্ম হবে।তিনি আরো বলেন যে ১৯৯৯ সালের পূর্বে পৃথিবীতে আর শান্তির দেখা মিলবেনা ।চার শতাব্দীপূর্বে নষ্ট্রাডেমাসও ঠিক এই ভবিষ্যৎ বানীটিই করে গেছেন।তিনি বলেছেন ১৯৯৯ খৃঃ পৃথিবী ব্যাপী একটি মহাযুদ্ধ সংঘটিত হতে যাচ্ছে । ভবিষ্যতের গর্ভে কি নিহিত আছে আমাদের তা জানা নেই-তবে ১৯৯৯ সালের আর ত খুব বেশী দেরী নেই ।বেঁচে যারা থাকবেন তারা অবশ্যই হাতে হাতে তার প্রমাণ পেলেও পেয়ে যেতে পারেন।
ভবিষ্যতদ্রষ্টা হত্যার সর্বনাশা পরিণতি দেখতে পেয়েছিলেনঃ
ষষ্ঠদশ শতকে ব্রাহানসিয়ার নামে স্কটল্যান্ডে এক অতিন্দ্রীয় দর্শকের আবির্ভাব হয়। তিনি বহু ভবিষ্যৎবাণী করে যান।একদিন তিনি সীফোর্থের কাউন্টেসকে জানালেন যে প্যারিসে তার স্বামীর একজন উপপত্নী রয়েছেন।একথা শুনে কাউন্টেস মহাখাপ্পা হয়ে উঠলেন।রাগে অন্ধ হয়ে তিনি আদেশ দিলেন যে সিয়ারকে ফুটন্ত আলকাতরায় ফেলে সিদ্ধ করে হত্যা করা হোক।কাউন্টেসের আদেশ সঙ্গে সঙ্গে পালন করা হয়। সিয়ারকে যারা হত্যা করে তাদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধেও তিনি আলকপাত করে যান ।তিনি বলেন, এই হত্যাকারী দলের শেষ ঘাতকের শেষ বংশধর অচিরেই বোবা ও কালা হয়ে যাবে ।আরতার উত্তরাধিকারী হবে একজন সাদা হুডপরিহিতা মহিলা।মহিলাটি তাঁর বোনকে হত্যা করবে।সিয়ারের হত্যাকারীর শেষ উত্তরাধিকারী ফ্রান্সিস মেকেঞ্জি এমন এক রোগে আক্রান্ত হন যে মৃত্যুকালে তিনি বাক ও শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলেন।তার বড় মেয়ে স্বামীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশের জন্য সাদা হুডবিশিষ্ট পোশাক পরিহিত অনস্থায় পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন।পরবর্তী সময়ে একটি ঘোড়ার গাড়ী চড়ে যাত্রা কালে তিনি তার বোনকে অতর্কিত ধাক্কা দিয়ে গাড়ী থেকে ফেলে দেন।আর তাতে তাঁর বোনের মৃত্য হয় ।এভাবেই ব্রাহানসিয়ারের ভবিষ্যৎ বাণী সফল হয়।