১৩২১ খৃষ্টাব্দে দান্তে আলিঘিয়েরীর মৃত্যুর পর তার সেরা সৃষ্টি ‘ডিভাইন কমেডির’ কিছু অংশ আর খুঁজে পাওয়া গেল না। তার দুই ছেলে জ্যাকোপো ও পিয়েত্রে । মাসের পর মাস তারা সারা বাড়ী তন্ন তন্ন করে এগুলো খুঁজে বেড়ালেন। পিতার কাগজ পত্র ঘেটে ঘেটে তারা রীতিমত হয়রান হয়ে উঠলেন। কিন্তু বৃথা চেষ্টা। কোথাও সেগুলোর হদিশ মিললো না।
আশা ছেড়ে দিয়ে দুই ছেলেই খোঁজাখুঁজি বন্ধ করলেন। এর মধ্যে জ্যাকোপো হঠাৎ একদিন তার পিতাকে স্বপ্নে দেখলেন। সাদা পোষাক পরিহিত তাদের পিতা যেন ইথারের আলোতে ডুবে তাদের সামনে এসে দাঁড়ালেন। জ্যাকোপো পিতার ছায়া মূর্তিকে দেখে যেন কিছুটা আশ্বস্থ হলেন। তিনি ঐ ছায়া মূর্তিকে সরাসরি প্রশ্ন করলেন ‘ডিভাইন কমেডির’ মহা কাব্যটি তিনি সম্পন্ন করেছেন কিনা। দান্তে মাথা নেড়ে তিনি জানালেন যে, তিনি বইটি শেষ করে রেখে গেছেন। তারপর তিনি তার ঘরের একটি গোপন স্থান দেখিয়ে দিলেন। দান্তের একজন আইনজীবি বন্ধুকে নিয়ে জ্যাকোপো স্বপ্নের নির্দেশিত স্থানে গেলেন। পিতার বন্ধুকে সঙ্গে নেবার কারণ আর কিছুই নয়- তাকে সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত রাখাতাই ছিল তার উদ্দেশ্য।
সেখানে তারা দেখতে পেলেন দেয়ালের সঙ্গে আটকানো একটি ঘুলঘুলি। আর এই ঘুলঘুলিটি তোলার পর দেখতে পেলেন একটি জানালা। তার ভেতর তারা যত্ন সহকারে জড়িয়ে রাখা কতগুলো কাগজ পেলেন। কাগজ গুলো সযত্নে তুলে এনে উপরের জমে থাকা ধুলো গুলো ঝেড়ে ফেলে দিলেন। তারপর তারা দেখলেন তাতে লেখা রয়েছে ‘দান্তে-ও ডিভাইন কমেডি’ ।আর এই পাণ্ডুলিপি প্রাপ্তিতেই কিন্তু ডিভাইন কমেডি সম্পূর্ণ হয়ে উঠল। স্বপ্নে ভৌতিক ছায়ামূর্তির আবির্ভাব না হলে ডিভাইন কমেডির মত একটি মহা কাব্য অসমাপ্তই থেকে যেত। স্বপ্নে দেখা না পেলে চতুর্দশ শতাব্দীর প্রতিভা দন্তের অমর কীর্তি ডিভাইন কমেডির শেষ অংশটি লোক চক্ষুর অন্তরালেই রয়ে যেত।
Images Collected from Wikipedia and Google.