Folklore ▪️বর্তমানে ফেনী জেলার (আগে নোয়াখালী জেলার মহাকুমা ছিল) পাশেই হজরত শাহ সৈয়দ আমির উদ্দিন নামে একজন কামেল দরবেশ ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন। তাঁর খেয়ালিপনা কথাবার্তার জন্য লোকের কাছে পাগলা মিয়া নামেই তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন। এই পাগলা মিয়া সম্পর্কে লোকশ্রুতি হল যে, হজরত পাগলা মিয়া ফেনীর ফাজিলপুরের ছনুয়া নামক স্থানে আস্তানা করেছিলেন। কবি নবীনচন্দ্র সেন ফেনী মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট থাকাকালীন একবার পাগলা মিয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। একবার নবীনচন্দ্র সেনের বাড়ির সম্মুখে একটি বাঁশের লাঠি পুঁতে দিয়ে পাগলা মিয়া বললেন, ‘দেখ নবীন তোকে এখানে গাইড (পুঁতে) রাখলাম, লাগি থাকলে ভাল হয়’ ইত্যাদি। পরে জানা গিয়েছিল, ওই বাঁশের লাঠিতে যতগুলো গাঁট ছিল নবীন সেন তত বছর ফেনীতে কর্মরত ছিলেন। একবার নবীন সেন কাজের সুবিধার জন্য দেওয়ানগঞ্জ থেকে আদালত অন্যত্র উঠিয়ে আনতে চাইলে উকিল মোক্তারদের ঘোর আপত্তিতে কিছুতেই আনতে পারছিলেন না। উপায় না দেখে তিনি পাগলা মিয়ার কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘পাগলা বাবা! আমি এখন ভীষণ বিপদে পড়েছি, আমাকে দয়া করুন।’ তখন মিয়া সাহেব নবীন সেনের মনের ভাব বুঝতে পেরে বললেন, ‘নবীন, বেশ বেশ, আইনে থাক, আইনে থাকলে ভাল হয়। ওই দেখ তোর কাছারী হাঁইটা আসছে। বাবার হুকুম যে বুঝে সে বুঝে; সকলে না বুঝে’–এ বলে তিনি নবীন সেনের পিঠে তিনটি থাপ্পড় মেরে বিদায় দিলেন। পরের দিন পাগলা মিয়ার দয়ায় নবীন বাবুর আদেশে ফেনীর প্রায় সমস্ত লোক ঘর ভেঙে আনতে গিয়ে, তারা ঘর না খুলে গোটা গোটা চালসুদ্ধ কাঁধে করে নিয়ে আসে। পাগলা মিয়ার কথা সত্যে পরিণত হয়ে ঘরখানা যেন আপনা আপনি হেঁটে চলে এল। এইভাবে হজরত পাগলা মিয়া পীরের কেরামিতর কথা লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।