“অড্রে হেপবার্ন” ছিলেন একজন ব্রিটিশ অভিনেত্রী এবং মানব হিতৈষী। হলিউডের স্বর্ণযুগের সময় সক্রিয় থাকায় হেপবার্ন একজন চলচ্চিত্র ও ফ্যাশন আইকন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি বলতে যা বোঝায়, কিংবদন্তি এ ব্রিটিশ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন ছিলেন ঠিক তাই। আর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে তো কমবেশি আমরা সকলেই জানি, তিনি একজন নোবেল জয়ী কবি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ আর অড্রে হেপবার্নের ভেতর কি সর্ম্পক ছিলো তা নিয়ে নিশ্চয়ই সবাই ভাবছেন?
বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে “রোমান হলিডে” ছবিতে অভিনয় করেন অড্রে হেপবার্ন। আর এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি প্রথমবার- অস্কার পুরষ্কার লাভ করেন। এছাড়াও এই ছবির জন্য আরো অনেক পুরষ্কার পান তিনি। ‘রোমান হলিডে’ চলচিত্রে অড্রে হেপবার্নের সহশিল্পী ছিলেন~গ্রেগরি পেক। প্রকৃতগতভাবে সর্বকালের সুন্দরী নারী অড্রে হেপবার্ন আর গ্রেগরি পেকের এই ছবি মুক্তির এক দশক আগেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়। তখন বিশ্বনন্দিত অভিনেত্রী- অড্রে হেপবার্ন আর গ্রেগরি পেকের ব্যাপারে বা রোমান হলিডে চলচিত্রের ব্যাপারে কিছুই জানা নেই কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের।
রোমান হলিডে চলচিত্রটি আমাদেরকে পশ্চিমা চলচিত্রের একটি অন্য ধারার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। এ চলচিত্রটি বিশ্ব চলচিত্রের একটি অন্যতম চলচিত্র হিসেবে আজও সবার কাছে স্বীকৃত। অড্রে হেপবার্ন তার ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে খুব একটা চলচিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিয়োজিত করেছিলেন ইউনিসিফের সেবামূলক কর্মকান্ডে। তিনি একাধারে ইংরেজি, ডাচ, ফরাসি, স্প্যানিশ আর ইতালিয় ভাষায় পারদর্শি ছিলেন।
কিংবদন্তি এ অভিনেত্রী পর্দায় সবসময় উচ্ছ্বসিত থাকলেও বাস্তবে আত্নকেন্দ্রীক এক অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। বই পড়তে তিনি খুব ভালোবাসতেন, এছাড়াও কবিতার ভীষণ ভক্ত ছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের- ‘অশেষ ভালবাসা’ ছিলো তার সবচেয়ে প্রিয় কবিতা। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারীতে অড্রের মৃত্যুর পর টেলিভিশনে স্মৃতিচারণমূলক এক সাক্ষাৎকারে তার বন্ধু এবং সহ-অভিনেতা গ্রেগরি পেক অড্রের প্রিয় কবিতার কিছু লাইন আবৃত্তি করেন। গ্রেগরি পেকের আবৃত্তি করা কবিতাটি ছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মানষী কাব্যগ্রন্থের অর্ন্তভুক্ত।
আমরা ক’জনইবা জানি বা জানতাম এই কাহিনী! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর তাঁর কবিতার প্রতি অনুরক্ত বিশ্ব জনতার হৃদয়জয়ী অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের মধ্যে মিল হলো তারা দু’জনই “মে” মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাদের দুজনের প্রতিই আমাদের অন্তরের শ্রদ্ধা রইল।