কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রীস্টাব্দের ২৫ শে মে, ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ সালে ভারতের পশ্চিমবাংলার বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। এই গ্রামের উত্তর দিকে মাত্র তিন কিলোমিটার দুরে অজয় নদী এবং বর্ধমান জেলার সবচেয়ে উত্তরের সিমানা।নদীর ঐ পারেই বিহারের ঝাড়খণ্ড। সেদিক দিয়ে দেখলে, এই শ্রেষ্ঠ বাংগালি কবির জন্ম বঙ্গদেশের একেবারে পশ্চিম সীমান্তে, অল্পের জন্য তিনি বিহারি বলে পরিচিত হননি।
তিনি ছিলেন কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান। তাঁর বাবা ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মাজারের খাদেম। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল “দুখু মিয়া” । তিনি গ্রামের স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন। মক্তবে তিনি কোরান, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব পড়া শুরু করেন। ১৯০৮ সালে যখন তাঁর পিতার মৃত্যু হয়, তখন তাঁর বয়স ছিলো মাত্র নয় বছর। পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তাঁর শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে সংসার চালানোর জন্য তাঁকে কাজে নামতে হয় তাকে।
নজরুলের পিতার মৃত্যুর পর তাঁর মা জাহেদা খাতুন তাঁর স্বামীর চাচাতো ভাই বজলে করিমকে বিয়ে করেন, তিনি ছিলেন একটা লেটো দলের অধিকারী। এরপর থেকে নজরুল খুব একটা বাড়িতে যেতেন না, হয়তো বা মায়ের প্রতি একটা অভিমান ছিলো! কবি নজরুল যখন একবার জেলখানায় অনশন ব্রত পালন করছিলেন তখন তাঁর মা দেখা করতে গেলে তিনি তাঁর সাথে দেখা করেন নি, জাহেদা খাতুন ১৯২৮ সালে মারা যান কিন্তু নজরুল সে সময় তাঁর মাকে দেখতেও যাননি।
এবার ফিরে আসি নজরুলের জীবন কাহিনীতে —-
এসময় তিনি মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সেই মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সাথে হাজি পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াযযিনের কাজ শুরু করেন। এইসব কাজের মাধ্যমে তিনি অল্প বয়সেই ইসলামের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান যা পরবর্তীকালে তার সাহিত্যকর্মে বিপুলভাবে প্রভাবিত করে। তিনিই বাংলা সাহিত্যে ইসলামী চেতনার চর্চা শুরু করেছেন বলা যায়।
কিন্তু এখানে তিনি বেশি দিন ছিলেন না। কম বয়সেই বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি একটি লেটো ( বাংলার রাঢ় অঞ্চলের কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক চর্চার ভ্রাম্যমান নাট্যদল) দলে যোগ দেন। তাঁব চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লেটো দলের অধিকারী ছিলেন, এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দূ ভাষায় তাঁর দখল ছিল। এছাড়া বজলে করিম মিশ্র ভাষায় গান রচনা করতেন। ধারণা করা হয়, বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল লেটো দলে যোগ দেন।
ঐ অঞ্চলের জনপ্রিয় লেটো কবি শেখ চকোর (গোদা কবি) এবং কবিয়াল বাসুদেবের লেটো ও কবিগানের আসরে নজরুল নিয়মিত অংশ নিতেন, সেখানে তিনি গান গাইতেন আর ঢোলক বাজাতেন। লেটো দলেই তাঁর সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। এই কাজে তিনি বিশেষ দক্ষতা দেখিয়েছিলেন কারন কবিত্ব এবং সংগীত তাঁর স্বভাবে ছিল।
এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্য গান ও কবিতা লিখতেন। এসময় তিনি বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য পড়া শুরু করেন, একই সাথে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ পুরানসমূহ পড়তে থাকেন। সেই অল্প বয়সেই তার নাট্যদলের জন্য বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে- চাষার সঙ, শকুনীবধ, রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ, দাতা কর্ণ, আকবর বাদশাহ, কবি কালিদাস, বিদ্যাভূতুম, রাজপুত্রের গান, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ এবং মেঘনাদ বধ। একদিকে মসজিদ, মাজার ও মক্তব জীবন, অপর দিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলকে সাহিত্যিক জীবনের অনেক উপাদান সরবরাহ করেছে। কয়েকবছর লেটোর দলের সংগে থেকে তিনি স্বরবৃত্ত ছন্দে এবং ঝুমুর তালে রীতিমতো দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।
স্কুলে নজরুল যে পুঁথিগত বিদ্যা শিখেছিলেন— বাংলা, ইংরেজি, গনিত, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি— তা নিশ্চয় কাজে লেগেছিল কিন্তু লেটোর দলের শিক্ষা তাঁর পরবর্তী জীবনে অনেক বেশি কাজে লেগেছিল— একথা বললে বাড়িয়ে বলা হয়না। কারন লেটোর দলে তিনি কেবল হিন্দু পুরান এবং মুসলমানী পুরাকাহিনীর খুঁটিনাটি শিখেননি, তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ যা আয়ত্ব করেছিলেন তা হলো— স্বাভাবিক ছন্দবোধ, আর সুর- তালের জ্ঞান। লেটোর পালা রচিত হয় স্বরবৃত্ত ছন্দে, নাচের তালে। কয়েক বছর লেটোর দলের সংগে থেকে তিনি স্বরবৃত্ত ছন্দ এবং ঝুমুর তালে রীতিমতো দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।মুখে মুখে ছড়া এবং গান রচনা করায় বিশেষ পারদর্শী হয়ে উঠেন তিনি। বহু বছর পরে তিনি যখন কবি হিসাবে সার্বজনীন স্বীকৃতি লাভ করেন, তখনও তাঁর বহু কবিতা রচনা করেন লেটোর দলের স্বরবৃত্ত ছন্দে। এমনকি গ্রামোফোনের জন্য বহু গানও রচনা করেন স্বরবৃত্ত ছন্দে এবং ঝুমুরের চটুল তালে। বাড়ির প্রতি তাঁর এমনিতেই ভালবাসার পিছুটান ছিলোনা। যে টুকু বা ছিলো, লেটোর দলের সংগে দুর- দুরান্তে ঘুরে ঘুরে তাও শিথিল হয়ে আসে। নজরুল হিন্দুদের দেবী কালীকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা সঙ্গীত ও রচনা করেন, নজরুল তার শেষ ভাষনে উল্লেখ্য করেন –
“কেউ বলেন আমার বানী যবন কেউ বলেন কাফের। আমি বলি ও দুটোর কোনটাই না। আমি শুধু হিন্দু মুসলিমকে এক জায়গায় ধরে নিয়ে হ্যান্ডশেক করানোর চেষ্টা করেছি, গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছি।”
১৯১০ সালে নজরুল লেটো দল ছেড়ে ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন। লেটো দলে তার প্রতিভায় সকলেই যে মুগ্ধ হয়েছিল তার প্রমাণ নজরুল লেটো ছেড়ে আসার পর তাকে নিয়ে অন্য শিষ্যদের রচিত গান—
‘’আমরা এই অধীন, হয়েছি ওস্তাদহীন
ভাবি তাই নিশিদিন, বিষাদ মনে
নামেতে নজরুল ইসলাম,
কি দিব গুণের প্রমাণ”।
এই নতুন ছাত্রজীবনে তাঁর প্রথম স্কুল ছিল রানীগন্জের শিয়ারসোল রাজ স্কুল, এরপর তিনি ভর্তি হন মংগলকোট থানার মাথরুন উচ্চ ইংরেজী স্কুলে যেটি পরে নবীনচন্দ্র ইনষ্টিটিউট নামে পরিচিত হয়। মাথরুন স্কুলের তখনকার প্রধানশিক্ষক ছিলেন কুমুদরন্জন মল্লিক, তিনি একজন বিখ্যাত কবিও ছিলেন।
তাঁর সান্নিধ্য নজরুলের অনুপ্রেরণার একটি উৎস। মাথরুন স্কুলের শিক্ষক কুমুদরঞ্জনের কাছে নজরুলের কথা জানতে চেয়ে আজহারউদ্দিন খান একটি চিঠি লিখেন, তার উত্তরে কুমুদরঞ্জন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নজরুল সম্বন্ধে লিখেছেন——-
ছোট সুন্দর ছনমনে ছেলেটি, আমি ক্লাশ পরিদর্শন করিতে গেলে সে আগেই প্রণাম করিত। আমি হাসিয়া তাহাকে আদর করিতাম। সে বড় লাজুক ছিল। আর্থিক সমস্যার কারনে তাঁকে ক্লাশ সিক্স পর্যন্ত পড়ার পর আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। প্রথমে যোগ দেন বাসুদেবের কবিদলে, পরে একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা এবং সবশেষে আসানসোলের চা- রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। রুটির দোকানে কাজ করলেও সেখানে তাঁর শোওয়ার জায়গা ছিলনা, তাই রাতের বেলা নজরুল ঘুমাতে যেতেন দোকানের কাছাকাছি একটি তিনতলা বাড়ির সিঁড়ির নীচে। সেই বাড়িতে থাকতেন দারোগা কাজী রফিজউল্লাহ।দোকানে একা একা বসে নজরুল যেসব কবিতা ও ছড়া রচনা করতেন তা দেখে রফিজউল্লাহ তার প্রতিভার পরিচয় পান। তিনি নজরুলকে স্নেহের চোখে দেখতেন।
রফিজউল্লাহ্’র বদান্যতায় ১৯১৪ সালের গোঁড়ার দিকে নজরুল ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে ক্লাস সেভেনে — সেকালে ফোর্থ ক্লাসে ভর্তি হন।
পরে ১৯১৪ সালের শেষে তিনি ময়মনসিংহ ছেড়ে আবার রানীগন্জের শিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে যান। এখানে হেডমাষ্টার প্রথমে তাঁকে ভর্তি নিতে চাননি, কিন্তু তিনি এই স্কুলে ভর্তির জন্য হেডমাষ্টারের কাছে একটি দরখাস্ত লিখেন কাব্যের ভাষায়—সেটা পড়ে হেডমাষ্টার এতটাই মুগ্ধ হন যে, তিনি সাথে সাথে নজরুলকে ভর্তি করে তো নিলেন তাও বিনা বেতনে! শিয়ারসোল স্কুলে ভর্তি হয়ে তিনি নানাভাবে লাভবান হয়েছিলেন, বাংলা- ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যর সংগে তাঁর আনুষ্ঠানিক পরিচয় সুদৃঢ় হয়েছিল, ফার্সি ভাষায় হাতে খড়ি হয়েছিল, সংগীতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন আর দেশের প্রতি ভালবাসা এবং দেশকে স্বাধীন করার চিন্তা মনের মধ্যে অংকুরিত হয়েছিলো। এই স্কুলে ভালো ছাত্র হিসাবে তাঁর নাম হচ্ছিলো। ১৯১৭ সাল পর্যন্ত এখানেই পড়াশোনা করেন।
এই স্কুলে পড়ার সময় এখানকার চার জন শিক্ষক তাঁকে বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে। তাঁরা ছিলেন— উচ্চাঙ্গ সংগীতের সতীশচন্দ্র কান্জিলাল, বিপ্লবী চেতনাবিশিষ্ট নিবারনচন্দ্র ঘটক, ফার্সি সাহিত্যের হাফিজ নুরুন্নবী এবং সাহিত্য চর্চার নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষা না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন।সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।সে সময় তিনি কলকাতায় থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মতো কবিতা, ধূমকেতুর মতো সাময়িকী। জেলে বন্দী হলে পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী, এই সব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তাঁর বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালোবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ।
ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন, এটি হল ইসলামি সংগীত বা গজল, পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামা সংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন ‘’নজরুল গীতি” নামে পরিচিত।
১৯২১ সালের এপ্রিল-জুন মাসের দিকে নজরুল মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে গ্রন্থ প্রকাশক আলী আকবর খানের সাথে পরিচিত হন। তার সাথেই তিনি প্রথম কুমিল্লার বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে আসেন। আর এখানেই পরিচিত হন প্রমীলা দেবীর সাথে যার সাথে তার প্রথমে প্রণয় ও পরে বিয়ে হয়েছিল।
তবে এর আগে নজরুলের বিয়ে ঠিক হয় আলী আকবর খানের বোন নার্গির আসার খানমের সাথে কিন্তু বিয়ের আখত হবার পরে কাবিনের শর্ত অনুযায়ী নজরুলের ঘর জামাই থাকার শর্ত নিয়ে বিরোধ বাধে। নজরুল ঘর জামাই থাকতে অস্বীকার করেন এবং বাসর সম্পন্ন হবার আগেই নার্গিসকে রেখে কুমিল্লা শহরে বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে চলে যান। তখন নজরুল খুব অসুস্থ ছিলেন এবং প্রমিলা দেবী নজরুলের পরিচর্যা করেন। এক পর্যায়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নজরুল সাম্যবাদের একজন অগ্রদূত ছিলেন। তিনি মুসলিম হয়েও চার সন্তানের নাম বংলা, আরবি, ফার্সি এই তিন ভাষাতেই নামকরণ করেন। যেমন- কৃষ্ণ মুহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ (বুলবুল), কাজী সব্যসাচী এবং কাজী অনিরুদ্ধ।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই “বিদ্রোহী কবি”। তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপন করা হয়।
মধ্যবয়সে তিনি পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হন, তিনি তাঁর স্মৃতিশক্তি ও কথা বলার সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন।এসময় তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়, তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি। ১৯৭৬ সালে ২৯ আগষ্ট বাংলাদেশের ঢাকায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
# তথ্যসূত্র
# বিদ্রোহী_রনক্লান্ত_নজরুল_জীবনী_গোলাম_মুরশিদ
# ইন্টারনেট