• হোম
  • আমাদের সম্পর্কে
    • উদ্দেশ্য
    • পৃষ্ঠপোষক
  • গ্যালারি
    • আমাদের বাংলাদেশ
    • লোকসাহিত্য
    • স্বাদের ইতিহাস
    • স্মরনীয় যারা পুরুষ
    • নারী শক্তি
    • সাম্প্রতিক বিশ্ব
    • ছবি থেকে গল্প
  • বিশ্ব ইতিহাস
    • প্রাচীন যুগ
    • মধ্যযুগ
    • বর্তমান যুগ
  • কিউরিসিটি কর্ণার
    • বিজ্ঞান
    • ইতিহাস
    • সাহিত্য
    • পৌরাণিক কাহিনী
    • লৌকিক অলৌকিক
  • ম্যাগাজিন
    • জীবন ও জীবনবোধ
  • যোগাযোগ করুন
ENGLISH
  • হোম
  • আমাদের সম্পর্কে
    • উদ্দেশ্য
    • পৃষ্ঠপোষক
  • গ্যালারি
    • আমাদের বাংলাদেশ
    • লোকসাহিত্য
    • স্বাদের ইতিহাস
    • স্মরনীয় যারা পুরুষ
    • নারী শক্তি
    • সাম্প্রতিক বিশ্ব
    • ছবি থেকে গল্প
  • বিশ্ব ইতিহাস
    • প্রাচীন যুগ
    • মধ্যযুগ
    • বর্তমান যুগ
  • কিউরিসিটি কর্ণার
    • বিজ্ঞান
    • ইতিহাস
    • সাহিত্য
    • পৌরাণিক কাহিনী
    • লৌকিক অলৌকিক
  • ম্যাগাজিন
    • জীবন ও জীবনবোধ
  • যোগাযোগ করুন

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

Posted by Riffat Ahmed | Oct 23, 2023 | গ্যালারি, নারী শক্তি | 0 |

লখনৌ এর বিশাল রাজবাড়ি। অন্দরমহল থেকে ছুটে আসছেন অযোধ্যার রাজমাতা। তার চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট; পা খালি, জুতো ছাড়াই ছুটে আসছেন তিনি; গা থেকে খুলে পড়ে যাচ্ছে চাদর। রাজমাতার এমন অবস্থা দেখে পেছন পেছন ছুটছেন দাসীরা। কি হলো রাজমাতার! নিজের কামরা থেকে কদাচিৎ বের হওয়া রাজমাতার আজ কিসের এতো উদ্বেগ? কেনোই বা দিশেহারা হয়ে এভাবে ছুটে বেরোচ্ছেন তিনি? কেনো আজ টানা টানা চোখ দুটোতে অশ্রু টলটল করছে? সদ্য হাতে পাওয়া চিঠিখানা নিয়ে বেহাল অবস্থায় ছুটতে ছুটতে এসে দাঁড়ালেন ছেলের কাছে। নিঃস্তব্ধ হয়ে বসে আছেন ছেলে, অযোধ্যার নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ। অশ্রু বেয়ে পড়ছে তার গাল বেয়েও। সব যে শেষ হয়ে গেলো! তবে কি আর কিছুই করবার নেই? শেষ পর্যন্ত অযোধ্যাও ব্রিটিশরা দখল করে নেবে? না, রাজমাতা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না এই নিয়তি। তিনি ঠিক করলেন, হাল ছেড়ে দেবেন না। যুদ্ধের পক্ষে নবাব বা রাজমাতা কেউই নন। তাই আপোষের পথে পা বাড়ানোরই সিদ্ধান্ত নিলেন তারা। কিন্তু এতেও এলো বাধা। নবাব যেতে পারলেন না ব্রিটেনে। তাই এবার ছেলের হয়ে দায়িত্বটি নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন রাজমাতা। আজীবন প্রাসাদের বাইরে কদম না রাখা পর্দানশীন রাজমাতা মালিকা কিশোয়ার চললেন লন্ডনের পথে, রাণী ভিক্টোরিয়ার সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে।

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

অযোধ্যা রাজ্যর মানচিত্র © Wikimedia

মালিকা কিশোয়ার ছিলেন উত্তর ভারতের সর্বশেষ রাজা ওয়াজিদ আলী শাহের মা। তিনি ১৮০৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। অযোধ্যার দশম নবাব আমজাদ আলী শাহের সাথে তার বিয়ে হয়েছিলো। তাদের চার সন্তানের মধ্যেই একজন ছিলেন ওয়াজিদ আলী শাহ। ১৮৪৭ সালে মালিকা কিশোয়ারের স্বামী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ফলে ৪৫ বছর বয়সে বিধবা হয়ে যান তিনি।

বাবার মৃত্যুর পর ১৮৪৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওয়াজিদ আলী শাহ অযোধ্যার নবাব হিসেবে ক্ষমতায় আসেন। আঠারো শতকে মুঘল সাম্রাজ্যের ক্ষয়িষ্ণুতার যুগে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট রাজ্যের উত্থান ঘটেছিলো। অযোধ্যা ছিলো এমনই একটি রাজ্য। তবে সে সময় এর শক্তি ও প্রভাব কোনোটাই খুব বেশি ছিলো না। কারণ অযোধ্যার নবাবরা আগে থেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন, যা ছোট এই রাজ্যটিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয় নি। তারপরও লখনৌ থেকে মোটামুটি রাজকীয় বেশেই নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন নবাবরা। কিন্তু এক সময় এই ক্ষমতাটুকুও গ্রাস করে নেয় ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়ার সাম্রাজ্যবাদী গভর্নর লর্ড ডালহৌসি নবাব ওয়াজিদ আলী শাহকে ফাঁদে ফেলে ১৮৫৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি অযোধ্যাকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। ডালহৌসির অজুহাত ছিলো যে, ওয়াজিদ আলী শাহ ঠিকমতো রাজ্য পরিচালনা করতে পারছেন না।

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

ওয়াজিদ আলি শাহ, অযোধ্যার শেষ রাজা এবং রানী মালেকা কিশোয়ারের ছেলে  © Wikimedia

ওয়াজিদ আলী শাহ এই অন্তর্ভূক্তিকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অপারগ ছিলেন, কেননা তার কাছে পর্যাপ্ত সৈন্য ছিলো না। এ কারণে তিনি রাণী ভিক্টোরিয়ার সাথে দেখা করতে ইংল্যান্ড যাবার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চেয়েছিলেন আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে নিজের হারানো রাজ্য ফিরে পেতে। ৫০০ লোকের একটি বহর নিয়ে তিনি লখনৌ থেকে কলকাতায় আসেন। দীর্ঘ নৌযাত্রায় ক্লান্ত হয়ে কোলকাতায় এসে ওয়াজিদ আলী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই তিনি এখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং নিজের পরিবর্তে মা ও ভাইকে ইংল্যান্ড মিশনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।

ব্রিটিশ লেখক রোজি লিওয়েলিন জোনসের ‘দ্য লাস্ট কিং ইন ইন্ডিয়া’ বইটিতে ওয়াজিদ আলী শাহের এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। এই বইটি থেকে নবাবের মা মালিকা কিশোয়ার সম্পর্কেও জানা যায়। রাণী কিশোয়ার ছিলেন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে ভীষণ সচেতন একজন নারী। অযোধ্যার অন্তর্ভুক্তিকরণের খবর শুনে ব্রিটিশ জেনারেল স্যার জেমস আউট্রামের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়, কেননা ইতিমধ্যেই ওয়াজিদ আলী অন্তর্ভুক্তিকরণ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেছিলেন।

নবাবের নির্দেশ লাভের পর রাণী মালিকা কিশোয়ার তার আরেক ছেলে, নাতি ও কিছু সংখ্যক লোককে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। প্রথমে সুয়েজ পার হয়ে ভূমিপথে আলেকজান্দ্রিয়া এবং জলপথে সাউদাম্পটন যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন তারা। ১৫ জুন ‘এস এস বেঙ্গল’ নামের জাহাজে করে সুয়েজের উদ্দেশ্যে তারা কোলকাতা ত্যাগ করেন। এ সময় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়। জাহাজ থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস খালি করতে গিয়ে রাণী ভিক্টোরিয়ার জন্য উপহারস্বরূপ নিয়ে যাওয়া ৫০ হাজার মূল্য মানের অলঙ্কার পানিতে পড়ে যায়। যাই হোক, ১৮৫৬ সালের ২১ আগস্ট ‘এস এস ইন্ডাস’ জাহাজে করে সাউদাম্পটনের উদ্দেশ্যে দলটি তাদের যাত্রা অব্যাহত রাখে।

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

রানী মালিকা কিশোয়ার সাউদাম্পটনে পৌঁছেছেন  © dailyecho.co.uk

মালিকা কিশোয়ারের বিলেত ভ্রমণ নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য লিপিবদ্ধ আছে রোজি লিওয়েলিন জোনসের ‘ট্রু টেলস অফ ওল্ড লাখনৌ’ বইটিতে। সে যাত্রায় রাণীর সাথে সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলো তার ৯ জন দাসী, ১১০ জন অ্যাটেন্ডেন্ট, ৭ জন খোঁজা এবং বেশ কয়েক জন সৈনিক। বিশাল এই দলটির ইংল্যান্ড সফর এবং তাদের বেশভূষা সাউদাম্পটনে সে সময় বেশ আলোড়ন তৈরী করেছিলো। সে সময়কার গুরুত্বপূর্ণ ইংরেজি পত্রিকাগুলোতে এ নিয়ে নজরকাড়া ফিচার ছাপা হয়েছিলো।

রাণী কিশোয়ারের দলটি ‘রয়্যাল ইয়র্ক’ হোটেলে ১০ দিন অবস্থান করেছিলো। আগস্টের শেষ দিকে তাদের ট্রেনে করে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু রাণী মালিকা কিশোয়ার তো কঠোর পর্দা মানতেন। ট্রেনে উঠতে হলে শত শত মানুষের ভিড়ের মাঝে নিজের পর্দার খেলাপ করতে হতো তাকে। এ জন্য রাণীর কর্মকর্তারা সাধারণ জনগণের জন্য কিছুক্ষণ স্টেশন বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন স্টেশন মাস্টারকে। কিন্তু স্টেশন মাস্টার এমনটা করতে অস্বীকৃতি জানান। নিরুপায় হয়ে রাণীর সেবকেরা সাদা কাপড়ের আবরণ দিয়ে ট্রেন ও রাণীকে বহন করা গাড়ির মধ্যখান বরাবর দেয়াল তৈরী করলেন। এই কাপড়ের দেয়ালের আড়ালেই রাণী ট্রেনে আরোহণ করেন।

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

সাউদাম্পটন থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রানীর যাত্রা © dailyecho.co.uk

পরবর্তী ১৩ মাস দলটি লন্ডনের মেরীলেবোন সড়কের একটু দূরে ‘হলি হাউজ’-এ অবস্থান করে। টানা এই ১৩ মাসও মালিকা কিশোয়ার সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। বিশেষ করে মিডিয়াকর্মী ও ফটো-সাংবাদিকরা তার পর্দা-পালন ও সাথে আসা সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখায়। তবে এই পুরো ব্যাপারটিতেই কিন্তু রাণী বেশ অস্বস্তি বোধ করতেন। যদিও তার কর্মকর্তারা মিডিয়ার এই আগ্রহকে ব্যবহার করে রাণীর ছেলের দুরবস্থার পক্ষে কিছুটা সহমর্মিতা আদায়ের চেষ্টা করতেন।

ব্রিটেনের রাণী ভিক্টোরিয়ার সাথে দেখা করতে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয় রাণীমাকে। নানা প্রশাসনিক জটিলতা ও রাজকীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে অবশেষে ১৮৫৭ সালের ৪ জুলাই রাণী ভিক্টোরিয়ার বাকিংহাম প্যালেসে সাক্ষাত হয় মালিকা কিশোয়ারের। তাদের এই বৈঠক রাণী ভিক্টোরিয়ার দিনলিপিতে লিপিবদ্ধ করা হয় এভাবে- “মধ্যাহ্নভোজের পর অযোধ্যার রাণীর সাথে সাক্ষাৎ হলো। এই সাক্ষাৎ আয়োজনে বেশ বেগ পেতে হলো এ জন্য যে, তিনি কোনো পুরুষের দৃষ্টিতে পড়তে চান না। তিনি তার বোরখা খুলে ফেললেন এবং তিনি ও তার নাতি উভয়েই আমার হাতে চুম্বন করলেন। ছোটোখাটো ধরনের নারী হওয়া সত্ত্বেও তার ভারী কাপড়, মুকুট এবং জহরতের জন্য তাকে বেশ বড়সড় দেখাচ্ছিলো। বসা অবস্থায় আমাদের মধ্যে কিছু কথা হলো। অতঃপর আমরা উঠে পড়লাম। কিন্তু তার ভ্রমণের মজাদার ঘটনাগুলো আর জানা হলো না”।

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

রয়্যাল ইয়র্ক হোটেল, ১৮৫৭ সাল © dailyecho.co.uk

ওদিকে অযোধ্যায় নবাব ওয়াজিদ আলী শাহের স্ত্রী বেগম হজরত মহলের নেতৃত্বে এক বিপ্লব শুরু হয়ে গিয়েছিলো। এই ঘটনায় ওয়াজিদ আলী শাহকে বিশ্বাসঘাতক গণ্য করে আটক করা হলো। সুতরাং এবার ব্রিটিশ সরকার চাইলেও আর অযোধ্যার জন্য কিছু করতে পারবে না। সমস্ত প্রচেষ্টা যেনো নিমিষেই ব্যর্থ হয়ে গেলো রাণীমার। হতাশ হয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন তিনি। তবে যাবার পথে মক্কায় হজ্ব পালন করেই কোলকাতায় ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্ত তাকে জানানো হলো, যেহেতু অযোধ্যার আর কোনো অস্তিত্ব নেই, তাই তাকে অবশ্যই নতুন ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে মক্কায় যেতে হবে। আসলে অযোধ্যার নিয়ন্ত্রণ স্থায়ীভাবে দখল করে নেবার জন্য এটি ছিলো ব্রিটিশদের একটি ধূর্ত চাল, যেনো রাজপরিবার সহজেই এই দখলীকরণ মেনে মেয়। কিন্তু মালিকা কিশোয়ার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় ফ্রান্স রাণীমার সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং ফ্রান্স থেকে তাকে মক্কায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।

তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, ২৪ জানুয়ারি প্যারিসে পৌঁছানোর পর দিনই অযোধ্যার এই রাণীমার মৃত্যু হয় এবং তার কিছু দিন পরই তার সাথে থাকা ছেলে ও নাতিরও আকস্মিক মৃত্যু ঘটে। নব্যনির্মিত পিয়ার ল্যাশেইজের মুসলিম কোয়ার্টারে তাদেরকে দাফন করা হয়।

অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার, ১৮৫৬ © dailyecho.co.uk

১৮৮৪ সালে ফরাসি কূটনীতিবিদ ইউজিন রেনে পাউবেল প্যারিসের ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে নবাব পরিবারের কবরের অবহেলায় পড়ে থাকার বিষয়টি অবহিত করেন। এ বিষয়টি ওয়াজিদ আলী শাহকেও জানানো হয়। কিন্তু সে সময় ওয়াজিদ আলী শাহের নিজের অবস্থাই এতো নাজুক ছিলো যে, তিনি এই কবরগুলোর দেখাশোনার ব্যাপারে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন নি।

রাণী মালিকা কিশোয়ারের কবরটিও অন্য আট-দশটা কবরের মতোই অবহেলায় পড়ে থাকে। তবে হঠাৎ করেই কয়েক বছর আগে শবে বরাতে মালিকা কিশোয়ারের পঞ্চম বংশধর আমান খান এই কবরগুলো পরিদর্শনে যান এবং কবরগুলো খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়।

অযোধ্যার রাণী মালিকা কিশোয়ার যা করে গিয়েছেন, তা আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ছোটোখাটো কোনো ঘটনা মনে হতে পারে। তবে এমন একটা সময়ে যখন নারীদের মতামতেরও তেমন গুরুত্ব ছিলো না, তখন তার ভূমিকা ছিলো সাহস ও ভালোবাসার এক অপূর্ব নিদর্শন। শুধুমাত্র ছেলের জন্য ন্যায়বিচার আদায় করতেই প্রাসাদের চার দেয়ালের বাইরে বিশাল মহাসাগর পাড়ি দিয়ে বিলেত যাত্রা এবং পরবর্তীতে প্যারিস গমন ছিলো তার মতো নারীর জন্য ভীষণ দু:সাহসিক কাজ।

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

প্যারিসের পেরে লাচেইস কবরস্থানে মালিকা কিশোয়ার কবর © Wikimedia

খুব বেশি মানুষ মালিকা কিশোয়ারের এই গল্পটি জানে না। তবে যারা জানে, তাদের জন্য তিনি আজীবনই অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে জীবন্ত থাকবেন। কখনোই লখনৌ এর রাজকীয় প্রাসাদের বাইরে বের না হওয়া রাণীমার শেষ আশ্রয়স্থলটিও হয়েছে মাতৃভূমি থেকে বহু দূরে প্যারিসে। বহু বিখ্যাত মানুষের সমাধির ভিড়ে তার কবরটা হয়তো বেশ অনেকটাই নিষ্প্রভ। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, তিনি তার জীবদ্দশায় যা কিছু করে গিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে আলোচনার দাবি রাখে। আমাদের এই অযোধ্যার রাণীমাকেই কিন্তু ডাকা হতো ‘জনাব-ই-আলিয়াহ’ বলে, যার অর্থ ‘মহান শ্রেষ্ঠত্ব’। এমন সম্মানিত উপাধি ইতিহাসের খুব অল্প সংখ্যক নারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিলো।

Share:

Rate:

Previousপারস্যের সবচেয়ে বিতর্কিত শাসক: জার্জেস দ্য গ্রেট
Nextমধ্য এশিয়ার ইতিহাসের গৌরব: সমরখন্দ নগরী

About The Author

Riffat Ahmed

Riffat Ahmed

My mother was a history teacher. From my childhood, I was fascinated by stories on the Indus Valley Civilization, King Porus demanding respect from Alexander, the wisdom of Akbar the Great, humility of Aurangazeb, the betrayal of Mir Zafar during the battle of Plassey and many many others. As I was a student of science I didn't get the opportunity to know more about the past. I feel young people should be groomed in history. It is out of that urge I have decided to write short pieces on individuals who made an imprint or event that shaped our history. This is first among that series. Happy reading, if you have the time. Chairperson, Siddiqui's International School Treasurer- Bangladesh English Medium Schools' Assistance Foundation (BEMSAF)

Related Posts

ভুলে যাওয়া শেষ অটোমান রাজকন্যা দুরুশেহভার

ভুলে যাওয়া শেষ অটোমান রাজকন্যা দুরুশেহভার

June 15, 2023

টিপু সুলতান

টিপু সুলতান

October 6, 2020

হাপু গান

হাপু গান

August 10, 2020

মানুষের কঙ্কালে তৈরি এক অদ্ভুত গির্জা !!

মানুষের কঙ্কালে তৈরি এক অদ্ভুত গির্জা !!

September 2, 2020

সহজে খুঁজুন

Akbar (1) Anarkali (1) Archaeological (6) Atgah Khan (1) Aurangzeb (1) Babur (1) Battle of Plassey (3) Great Ashoka (1) Gulrukh Banu (2) Humayun (1) Indo-Greek (1) Inquisition (1) Isa Khan (1) Mir Madan (2) Mirza Aziz Khoka (1) Movie (1) Mughal (2) Mughal history (1) Mughal painting (1) Mughals (1) Omichund (2) Plassey (3) Sirajuddaula (1) Temple (1)

Previous Posts

সাম্প্রতিক পোস্ট

  • সুরের জাদুকরের উত্থান ও করুণ পরিণতি: কমল দাস গুপ্তের জীবনসংগ্রাম
    সুরের জাদুকরের উত্থান ও করুণ পরিণতি: কমল দাস গুপ্তের জীবনসংগ্রাম
    Feb 27, 2025 | গ্যালারি, স্মরনীয় যারা
  • লস্কর: ব্রিটিশ নৌবাণিজ্যে উপমহাদেশীয় শ্রমিকদের নিদারুণ ইতিহাস
    লস্কর: ব্রিটিশ নৌবাণিজ্যে উপমহাদেশীয় শ্রমিকদের নিদারুণ ইতিহাস
    Feb 23, 2025 | ইতিহাস, কিউরিসিটি কর্ণার
  • নরওয়ের বিশ্ব বীজ সংরক্ষণাগার
    নরওয়ের বিশ্ব বীজ সংরক্ষণাগার
    Feb 5, 2025 | কিউরিসিটি কর্ণার, বিজ্ঞান
  • ডুনহুয়াং গুহার গুপ্ত পাঠাগার ও সিল্ক রোডের অমর কাহিনি
    ডুনহুয়াং গুহার গুপ্ত পাঠাগার ও সিল্ক রোডের অমর কাহিনি
    Jan 22, 2025 | ইতিহাস, কিউরিসিটি কর্ণার

Designed by WebzMart | Powered by Staycurioussis