প্রায় ৩,৫০০ বছর আগে, মিশরের প্রাচীন শহর থেবসে বাস করতেন হাটনেফার ও তাঁর ছেলে রামোস। সমাজে তাঁরা ছিলেন সম্মানিত ও প্রভাবশালী মানুষ। মৃত্যুর পর তাঁদের জন্য নির্মিত হয় এক সুন্দর সমাধি। আর সেখানেই, বহু বছর পরে, আবিষ্কৃত হয় এক বিস্ময়কর বস্তু—এক টুকরো রুটি!
হ্যাঁ, সত্যি! মাটির নিচে শতাব্দীর পর শতাব্দী কেটে গেলেও সেই রুটি পুরোপুরি নষ্ট হয়নি। এর কারণ মিশরের শুষ্ক আবহাওয়া। প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করতেন, মৃত্যুর পর আত্মারও খাবারের প্রয়োজন হয়। তাই প্রিয়জনদের সমাধিতে রাখা হতো নানা খাবার, যাতে তারা পরকালে ভালো থাকে।

রামেসেস তৃতীয়ের প্রাসাদ থেকে এই বেকারির দৃশ্য প্রাচীন মিশরীয়দের তৈরি নানা ধরনের রুটির বৈচিত্র্য দেখায়। এতে রুটি তৈরি করার বিভিন্ন ধাপ যেমন ময়দা মেখে গঠন করার প্রক্রিয়াও প্রদর্শিত হয়েছে। © Google Arts & Culture
এই রুটি কেবল খাবার নয়, বরং জীবন্ত ইতিহাসের দলিল। এর গায়ে লুকিয়ে আছে প্রাচীন জীবনের ছাপ। গবেষণায় জানা গেছে, প্রাচীন মিশরীয়রা এমার গম বা যব দিয়ে রুটি বানাতেন। আটা ছিল খানিকটা খসখসে, কারণ ভালোভাবে ছাঁকতে পারতেন না। তবুও রুটি ছিল তাঁদের প্রধান খাদ্য।
তারা কীভাবে রুটি বানাতো? কী ধরনের শস্য ব্যবহার করতো? ইস্ট দিত কি না? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে এই এক টুকরো রুটি থেকেই।
এই ছোট্ট রুটির মধ্যে লুকিয়ে আছে এক পুরো সভ্যতার গল্প—তারা কীভাবে জমি চাষ করতো, খাবার প্রস্তুত করতো, আর মৃত্যুর পরও প্রিয়জনের যত্ন নিতো। এই আবিষ্কার প্রমাণ করে—খাবার কেবল পেট ভরায় না, ইতিহাসও বহন করে।
এক টুকরো রুটি… আর তার ভেতরেই ৩,৫০০ বছরের ইতিহাস।