এই গল্পটি প্রায় সাত’শ বছর আগের ঘটনা। জার্মানীর একটি ছোট শহর, যার নাম হ্যামিলিন। ১২৮৪ সালে হঠাৎ করে সেই শহরে প্রচন্ড ইঁদুরের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। পুরো শহর জুড়ে ইঁদুর গুলো প্রচন্ড অত্যাচার শুরু করে দেয়। সেই সাথে শহরের মানুষ ইঁদুর দ্বারা সংক্রমিত হতে থাকে। তারা মহামারীর ভয়ে আতংকিত হয়। একদিন শহরের সব গণ্যমান্য লোক এবং মেয়র মিলে সভা করল। সভায় ঠিক হল, যে তাদের ইঁদুর থেকে বাঁচাতে পারবে, তাকে অনেক বড় পুরস্কার দেয়া হবে। একদিন সেই শহরে হাজির হল সুন্দর এক যুবক। মেয়রের কাছে গিয়ে বলল,সে শহরটিকে ইঁদুর মুক্ত করতে পারবে। তার কথা শুনে সবাই অবাক হল। তখন সেই রহস্যময় লোকটি খুব সুন্দর এক মায়াবী সুরে বাঁশি বাজানো শুরু করল। সেই সুরে শহরের সব ইঁদুর যে যেখানে ছিল বের হয়ে এলো। সেই বাঁশিওয়ালার পিছন পিছন তাকে অনুসরণ করল। বাঁশিওয়ালা তাদের এক সাথে জড়ো করে, তারপর শহরের প্রান্তে ওয়েজার নদীতে ফেলে দেয়। ইঁদুর থেকে মুক্তি পেয়ে সবাই অনেক শান্তি পেল। কিন্তু যখন সেই বাঁশিওয়ালা তার পুরস্কার চাইল, তখন তারা তাকে কোন কিছু না দিয়েই তাড়িয়ে দিল। বাঁশিওয়ালাও রাগ করে চলে গেল। প্রায় এক বছর পরে কোন একটি উৎসবে হঠাৎ সেই লোকটি আবার ফিরে এলো। এবার সে অন্য এক সুরে বাঁশি বাজানো শুরু করল। তার সেই সুর শুনে শহরের সব শিশুরা বের হয়ে আসল। তারাও সবাই বাঁশিওয়ালার পিছন পিছন অনুসরণ করতে লাগল। শহরের সব শিশু নিয়ে বাঁশিওয়ালা একসময় উধাও হয়ে গেল। সে তাদের কোথায় নিয়ে গেল ? কি করল? সেটা কেউ বলতে পারেনা। এই গল্পটি কতটুকু সত্য, না মিথ্যা সেটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। তবে আমরা গল্পটি থেকে এই শিক্ষা পাই যে, উপকারীকে সব সময় তার প্রাপ্য সম্মান ও পুরস্কার দিতে হয়। যদি সেটা না করা হয় তাহলে একদিন অনেক ভয়াবহ বিপদ নেমে আসতে পারে, যার কোন সমাধান কখনো নাও হতে পারে।
Stay Curious SiS team