শ্যামল মিত্রের সেই গানটা আজ গুনগুন করে বেসুর গলাতে গাইছিলাম , ” কি নামে ডেকে বলব তোমাকে মন্দ করেছে ………….” I তা কারণ আছে বৈকি !
আচ্ছা জর্জ বার্নার্ড শ (George Bernard Shaw) এর সেই বিখ্যাত নাটক ক্যান্ডিডার (Candida ) কথা মনে আছে ? নাটকটিতে ক্যান্ডিডা এক ধর্মীয় যাজক মোরেলের পত্নী। অসামান্য সুন্দরী এই মহিলা মোরেলের জীবনের যাবতীয় সাফল্যের জিয়নকাঠি। সব ঠিকই চলছিল কিন্তু হটাৎ তাদের মাঝে আবির্ভাব হল এক কবির। নাম ইউজিন। কবি প্রেম নিবেদন করলেন ক্যান্ডিডাকে। ক্যান্ডিডা হয়ে উঠল তার অনুপ্রেরণার স্রোত। শিল্পীর আবেগে ক্যান্ডিডা সাড়া দিলেন।কিন্তু এখন প্রশ্ন হল ক্যান্ডিডা কাকে চয়ন করবেন ? একদিকে শিল্পীর সাহিত্য সুধা তার সাদামাটা জীবনে এনে দিয়েছে বৈচিত্রের সুর আর একদিকে তার স্বামী। রোমান্টিক কল্পনার ফানুস উপেক্ষা করে ক্যান্ডিডা বেছে নিলেন তার স্বামীকে এবং ক্যান্ডিডার এই চয়নের কারণ বড় বিচিত্র। তিনি বেছে নিলেন তার স্বামীকে কারণ সে “weaker of the two” – দুজনের মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল I নারী শক্তির বিজয় নির্ঘোষ শোনা গেল। অবাক বিস্ফোরিত চোখে বিশ্ব দেখল , পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ দগ্ধ হল এই patronization এর কাছে।নবজাগরণের কিছু ছবি শুধু বিখ্যাতই হয়নি তার কিছু আঙ্গিক একেবারে আমাদের শব্দভাণ্ডার বা Vocabulary কে সমৃদ্ধ করেছে। যেমন “Mona Lisa smile- কথাটি বললেই লোকে বুঝবে এক রহস্যময় হাসি।
তেমনি সান্দ্র বত্তিচেল্লির(Sandro Botticelli) বিখ্যাত ছবি “দা বার্থ অফ ভেনাস ” (The Birth of Venus ) সৃষ্টি করেছে আরেক উপমার। হেরবার্ট লিবেরমান (Herbert Lieberman) তো লিখেই ফেলেছেন এক টান টান উপন্যাস ‘The Girl with the Botticelli Eyes’ I তবে কে ছিলেন তার এই ভেনাসের মডেল যার চোখে এতো মাদকতা ? তিনি ছিলেন সিমোনেত্তা ক্যাটানিও (Simonetta Cattaneo)। ইনি ছিলেন এক অসামান্য সুন্দরী। বিয়ে করেছিলেন মার্কো ভেসপুচ্চিকে (Marco Vespucci)। মার্কো ভেসপুচ্চি ছিলেন আমেরিগো ভেসপুচ্চির( Amerigo Vespucci) আত্মীয় যার নামে আজকের আমেরিকা।সান্দ্র বত্তিচেল্লির পাড়াতেই থাকতেন সিমোনেত্তা। ফ্লোরেন্সে সুন্দরী বলে বেশ নামডাক ছিল তাঁর। স্বয়ং মেদিচি (Medici family of Florence) পরিবারের সঙ্গেও ওঠাবসা ছিল তাদের । আর এই সুন্দরীকেই ভালোবেসে ফেললেন বত্তিচেল্লি। তার ভেনাসের মডেলও ওই সুন্দরী যার চোখ দেখে সারা বিশ্ব পাগল। অনেক ছবিতেই এলেন সিমোনেত্তা। জানিনা ক্যান্ডিডার মতো তিনি কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিনা কারণ সিমোনেত্তা বত্তিচেল্লির জীবনে আসেননি । না ভুল বললাম ! থুড়ি ! এসেছিলেন বৈকি !
সিমোনেত্তা মারা যান ১৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে। আর বত্তিচেল্লি মারা যান ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে। বত্তিচেল্লির শেষ ইচ্ছা ছিল যে গির্জায় সিমোনেত্তা শায়িত সেখানেই যেন তার সমাধি হয়। মৃত্যুর পরে তিনি প্রমাণ করলেন তিনি ‘weaker of the two’ ছিলেন না I If Death transcends Life, Love transcends even Death.
*(Sandro Botticelli’s ‘The Birth of Venus’ is currently housed at the famous Uffizi Gallery (first floor) of Florence in Italy.Both of their graves lie at the Chiesa di San Salvatore in Ognissanti Church in Florence, Italy . Know about Simonetta’s last descendant by clicking the video link : https://www.youtube.com/watch?v=Ng0qn-rsdm4&t=26s).* Leave your comments or suggestions.