শারদীয় দুর্গোৎসব; সনাতন ধর্মাবলম্বীদের,বিশেষ করে বাঙালি হিন্দুদের এক বৃহৎ উৎসব। বাঙালির প্রাণের সাথে, আবেগের সাথে জড়িয়ে থাকা এক আনন্দোৎসবের নাম দুর্গাপূজা। মহালয়ায় আগমন বার্তা জানিয়ে, ষষ্ঠীতে আরম্ভ হয়ে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী শেষে দশমীতে সিঁদুরখেলা ভাসানের মাধ্যমে শেষ হয় পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব।

হিন্দুদের এক বহুল আরাধ্যা ও জনপ্রিয় দেবী হলেন দুর্গা। সনাতন হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী মা দুর্গার বাস হিমালয়ের কৈলাসে।দুর্গতি নাশের জন্য পৃথিবীতে নেমে আসেন পাঁচ দিনের জন্য।

হিন্দু পুরান অনুসারে, অসুরদের রাজা মহিষাসুর তপস্যা করে ব্রহ্মার বরে বলীয়ান হয়ে দেবতাদের কাছ থেকে স্বর্গের কেড়ে নেয়। (অসুর হলো অশুভ শক্তির প্রকাশ)।স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালে মহাত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। দেবতার সম্মিলিত তেজ থেকে আবির্ভূতা হয়ে দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন । তাই হিন্দুধর্মাবলম্বীরা অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য ও দুর্গতি নাশের আশায় শ্রদ্ধা ও নিষ্ঠার সাথে প্রতিবছর দুর্গাপূজা করে থাকে।

তবে, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ছাড়াও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দুর্গাপূজার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, বিশেষত প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের একটা অংশ জুড়ে রয়েছে এই দুর্গাপূজা।বিশেষ করে, কৃষি ভিত্তিক গ্রামবাংলার সমাজ,সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সাথে দুর্গাপূজার ঘনিষ্ঠ সংযোগ রয়েছে। সাধারণত শরৎকালেই দুর্গাপূজা হয়। এ কারণেই একে শারদীয় দুর্গোৎসব বলা হয়। তখন বিপুল উৎসাহ,উদ্দীপনা ও আনন্দের সাথে দু্র্গার পূজা করা হয়।  শরৎকালের নীল আকাশ,জলাশয়ে ফোটা পদ্ম, সাদা কাশফুল  আর ভোরের শিশিরভেজা ঘাস ও শিউলি নিয়ে আসে দেবীর আগমনী বার্তা।

ঢাকের বাদ্যি, মঙ্গলশঙ্খের ধ্বনি, কাঁসর,ঘণ্টা, আগুন জ্বালিয়ে যজ্ঞ,আহুতি, মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে অঞ্জলি প্রদান,আরতি,ধুনুচি নাচ এসবের মধ্য দিয়েই  জাঁকজমকপূর্ণভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গোৎসব পালন করে থাকেন প্রতিবছর।

ঢাকের বাদ্য ও ধুনুচি নাচের তালে বাঙালির দুর্গাপূজা এবং বিজয়া দশমীর সিঁদুরখেলা

 

দেবীর বিসর্জন

বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ডসহ বিভিন্ন রাজ্যে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হয়। এছাড়াও ইউরোপ আমেরিকার যেখানে যেখানে বাঙালি আছে সেসব জায়গায়ও দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়।

বাংলাদেশের ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপূজায় প্রধানমন্ত্রী

বর্তমানে বাঙালির দুর্গাপূজার যে সর্বব্যাপী বৃহৎ কলেবর, তা কিন্তু একেবারে হাল আমলের সৃষ্টি। আদিতে বাঙালির দুর্গাপূজা এমন ছিল না। এমনকি যে দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাসের, সংস্কৃতির, জীবনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িত এর প্রচলন মধ্যযুগের পূর্বে ছিলই না।

‘দু্র্গা’ শব্দটি দুর্গ থেকে আগত। পুরাণমতে দুর্গ নামক অসুরকে বধ করার জন্য তিনি দুর্গা। দু্র্গা শব্দের শাব্দিক অর্থ হল ‘অপরাজেয়’, ‘দুর্গম’ ।আবার দুর্গতিনাশিনী অর্থেও দুর্গা শব্দটি ব্যবহৃত হয়। শশীভূষণ দাশগুপ্ত ভারতীয় শক্তি সাধনার গবেষণা দুর্গা শব্দের উৎপত্তির স্তরগুলো পর্যালোচনা করে দেখিয়েছেন। তাঁর মতে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হলো, দুর্গা হলেন ‘দু্র্গের অধিষ্ঠাত্রী দেবী’ অর্থাৎ, দুর্গের রক্ষাকর্ত্রী।

হিন্দু পুরাণ অনুসারে, দুর্গা দশভুজা, দশপ্রহরণধারিনী, সিংহবাহিনী, মহিষাসুরমর্দিনী। দুর্গাপ্রতিমাতে তাকে সেরূপেই দেখতে পাই।অশুভ শক্তির প্রতীকরূপী মহিষাসুরকে বধ করছেন। আবার, তিনি মাতৃস্বরূপা, শক্তির প্রতীক, সমগ্র জগতের মা।হিন্দুধর্ম মতে, তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের শক্তি, মাতৃরূপ, পরম ব্রহ্মময়ী, সমস্ত সৃষ্টিসংসারকে আগলে রাখেন মায়ের মতো। হিন্দুধর্মের শাক্ত উপাসনা ও তন্ত্র শাখার প্রধান দেবী হলেন দুর্গা।দুর্গাপূজা মূলত শক্তির উপাসনা; মাতৃশক্তি ও নারী শক্তির উপাসনার উৎসব।

দুর্গার অনেক রূপ,অনেক নাম। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা শক্তিপীঠগুলো দেবী হিসেবে দুর্গার জনপ্রিয়তারি সাক্ষী দেয়। সমগ্র ভারতবর্ষের বিশাল ভৌগোলিক পরিমণ্ডলে দুর্গার নাম ও রূপের বহু পরিবর্তন হয়েছে।বিভিন্ন স্থানে তিনি বিভিন্ন নামে পূজিত হন।

কখনো তিনি চণ্ডী, কখনো কালী/চামুণ্ডা, কখনো মহিষাসুরমর্দিনী, কখনো পার্বতী,কখনো বিন্ধ্যবাসিনী, কাত্যায়নী, মহালক্ষ্মী, ভৈরবী, ত্রিপুরসুন্দরী, বৈষ্ণবী,  বিশালাক্ষী, তারা, জয়ন্তী, বর্গভীমা, বিরজা, বিমলা, মীনাক্ষী, কামাখ্যা, জ্বালাদেবী, কন্যাকুমারী প্রভৃতি বহুনামে পরিচিতা। তাঁর দশভুজা,ষড়ভুজা,অষ্টাদশভুজা,শতভুজা,সহস্রভুজা বহুরূপ আছে। এমনকি দেবীর বাহনও একেক জায়গায় একেক রকম। উত্তর ভারতের বিভিন্ন স্থানে তাঁর বাহন বাঘ। কিন্তু বাংলায় তিনি সিংহবাহিনী। আবার এই বাংলাতেই কেবল তিনি সপরিবারে পূজিতা।

‘দুর্গা’ শব্দের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ঋকবেদ ও অথর্ববেদে। তৈত্তিরীয় আরণ্যকে দেবীরূপে দুর্গাকে প্রথম দেখা যায়। এছাড়াও রামায়ণ ও মহাভারতেও দেবী দুর্গার উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে বেদে দুর্গা দেবী হিসেবে এত গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন না। দু্র্গাপূজা ও মহিষাসুর বধের কাহিনী এসব কিছুই হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ বেদে পাওয়া যায় না।

গুরুত্বপূর্ণ দেবী হিসেবে দু্র্গার আবির্ভাব হয় বৌদ্ধ ধর্ম পরবর্তী যুগে; প্রথম মার্কণ্ডেয় পুরাণের ‘দেবীমাহাত্ম্যে’ (৪০০-৬০০ খ্রিস্টাব্দ),যা ৭০০ শ্লোক বিশিষ্ট  ‘দুর্গা সপ্তশতী’ বা ‘চণ্ডী’ নামে পরিচিত। এখানেই রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্যের দুর্গাপূজার কাহিনী, মহিষাসুর বধ, শুম্ভনিশুম্ভ ও চণ্ডমুণ্ড বধের কাহিনী পাওয়া যায়। পরবর্তীতে দেবীভাগবত ও অন্যান্য পুরাণেও দেখা যায় দুর্গার প্রভাবশালী উপস্থিতি।এসব পুরান মূলত ৯ম-১৪শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত, অনেকগুলো আবার মধ্যযুগে পরিবর্তিত। দুর্গাপূজার ভিত্তি মূলত মার্কণ্ডেয় পুরাণ ও দেবী ভাগবতপুরাণ। রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য মেধস মুনির আশ্রমে প্রথম মাটির মূর্তি গড়ে  দুর্গা পূজা করেন বলে মার্কণ্ডেয় পুরাণে উল্লেখ আছে। মূলত হিন্দুধর্মের প্রধান দেবী রূপে দুর্গা আবির্ভাব হয় মার্কণ্ডেয় পুরাণের যুগেই। দুর্গার পূজাও বিস্তার লাভ করে সে সময়েই। অতএব ভারতবর্ষে বা হিন্দুধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার ইতিহাস মোটামুটি ১৫০০ বছরের পুরোনো।

দুর্গার উৎপত্তি মূলত বৈদিক এবং প্রাক বৈদিক অনার্য ধারার সাথে বহু ধারার সম্মিলনে। অবৈদিক অনার্য সভ্যতাগুলোয় দেবী পূজা, শক্তি পূজা ও মাতৃকা পূজার ব্যাপক চল ছিল।সিন্ধু সভ্যতায় ও প্রাক আর্য দ্রাবিড় জাতির মধ্যেও মাতৃকাউপাসনা বা দেবী উপাসনার প্রমাণ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ঋগ্বেদের দেবী সুক্তে (১০.১২৫) প্রথম সমস্ত সৃষ্টি জগতের অধিশ্বরী,বিশ্ব সংসারের সৃষ্টির মূল,পরমব্রহ্ম স্বরূপা ‘দেবী’ তথা ঈশ্বরের নারীরূপী শক্তির কথা উল্লেখ আছে।দুর্গাকে যে জগন্মাতা, পরমব্রহ্ম, আদ্যাশক্তি মহামায়া, এই সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর নিয়ন্তা হিসেবে দেখা হয় তার উৎস হলো এই দেবী সুক্ত ও অনার্য গোষ্ঠীর মাতৃকা/শক্তি পূজা। বর্তমানে দু্র্গা পূজায় এবং মহালয়ার অনুষ্ঠানে এই দেবীসুক্ত পাঠ করা হয়।

ইতিহাসবিদ রামপ্রসাদ চন্দের মতে, কালে কালে দুর্গার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তাঁর মতে দুর্গার আদিরূপ হলো হিমালয় ও বিন্ধ্যপর্বতের আদিবাসীদের আরাধ্যা পার্বত্য দেবীর সমন্বয়।(যে কারণে সম্ভবত দুর্গার নাম পার্বতী  বা বিন্ধ্যবাসিনী)। এর সাথে বৈদিক ধারার  ‘দেবী’ concept এর সমন্বয় ঘটে। আবার অনেকের মতে মেসোপটেমিয়া অঞ্চলের সিংহবাহিনী দেবী  ‘ইশতার’ বা ‘নানা’ কুষাণ যুগে এসে ভারতের ঐ পার্বত্য দেবীর সাথে একীভূত হয়। তবে কুষাণ যুগে শুরু হলেও দুর্গা কাল্টের পরিপূর্ণবিকাশ ঘটে গুপ্তযুগে,মার্কণ্ডেয় পুরাণের রচনার সময়ে;সিংহবাহিনী মহিষমর্দিনী দেবী রূপে।

অনেক ইতিহাসবিদের মতে, মহিষমর্দিনী দুর্গার পূজা  সম্ভবত আর্য ও অনার্য দ্বন্দ্বের প্রতীক। দু্র্গার এই নায়িকাত্ব এবং মহিষাসুরের খলনায়কাত্ব, অর্থাৎ মহিষাসুরকে বধ করে সাধারণ মানুষকে তার অত্যাচার থেকে মুক্ত করার কাহিনী বহিরাগতদের অর্থাৎ আর্যদের সৃষ্টি। তারা এই আর্য আগ্রাসনের কাহিনী  glorify করেছে। তবে তাদের এ দাবী যে সত্য নয় তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রাচীন ভারতের অনার্য গোষ্ঠীর মাতৃকা বা শক্তি উপাসনা এবং বেদের শক্তি উপাসনার এই সমন্বয়ে।

বর্তমানে দুর্গার যে ত্রিশূল হাতে মহিষাসুরকে বধ করার দৃশ্যটি দেখা যায় সেটি অপেক্ষাকৃত নতুন সংস্করণ। দুর্গা আদিতে মহিষাসুরমর্দিনী নয় .বরং মহিষমর্দিনী ছিলেন। বহু সুপ্রাচীন ভাস্কর্যে দেখা যায়, দেবী দুর্গা কেবলই মহিষমর্দিনী, অর্থাৎ তার শত্রুটি কেবলই মহিষ। কোনো অসুর বা ভয়ংকর দর্শন কোনো মানব নয়। ৬ষ্ঠ শতাব্দীর বাদামি গুহা মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা ও রাবনাফাড়ি গুহা মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা এবং ৮ম শতাব্দীর আইহোল মন্দির স্থাপত্যের দুর্গা প্রতিমায় দু্র্গাকে কেবল মহিষকে বধ করতেই দেখা যায়। এসব ভাস্কর্যে কোনো অসুর চিহ্নমাত্র নেই।

ভারতের উত্তর প্রদেশে প্রাপ্ত খ্রিস্টিয় দ্বিতীয় শতাব্দীর দুর্গা প্রতিমা;এখানে দেবী কেবল মহিষই বধ করছেন,কোনো অসুর নেই।

 

মহিষমর্দিনী দুর্গা ; (ঘড়ির কাঁটার দিকে,উপর থেকে নিচে)বাদামি গুহা(গুহা-১) মন্দিরের ৬ষ্ঠ শতাব্দীর দুর্গা প্রতিমা, ৬ষ্ঠ শতাব্দীর রাবনাফাড়ি গুহা মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা, উদয়গিরি গুহার (গুহা-৬) ৬ষ্ঠ শতাব্দীর দুর্গা ভাস্কর্য, ৮ম শতাব্দীর আইহোল মন্দির স্থাপত্যে দুর্গা প্রতিমা

মহাভারতের ভীষ্মপর্বে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে অর্জুনকৃত দেবীস্তবে তিনি  ‘মহিষসৃকপ্রিয়ে’, মহিষের রক্ত তাঁর প্রিয়। দাক্ষিণাত্যের বিষ্ণুদুর্গা মূর্তিতে তিনি মহিষের মুণ্ডে দণ্ডায়মানা। এইসব ক্ষেত্রে কোথাও মহিষের মনুষ্যোচিত রূপের  ইঙ্গিত নেই।

মহাবলিপুরমের পাহাড়ের গায়ে খোদাইকৃত চিত্রে ৮ম শতাব্দীর দুর্গা প্রতিমা; দু্র্গা এখানে মহিষরূপী অসুরের সাথে যুদ্ধ করছেন

দুর্গা মহিষাসুরমর্দিনী রূপ ধারণ করেন সম্ভবত পাল-সেন আমলে। কারণ পাল এবং সেন রাজাদের আমলেই দুর্গার মোটামুটি একটি  consistent  সিংহবাহিনী মহিষমর্দিনী রূপ দেখা যায়। তবে আজও দুর্গা ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নরূপে পূজিত হন।

পাল আমলের সিংহবাহিনী মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গা প্রতিমা

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে, মহিষমর্দিনী দুর্গাই কালের বিবর্তনে  ‘মহিষাসুরমর্দিনী’  দুর্গায় পরিণত হন। এই মহিষমর্দিনীর ধারনার পিছনে ও রয়েছে বাংলা তথা ভারতীয় উপমহাদেশের কৃষিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা। বাংলা তথা ভারতীয় উপমহাদেশে মহিষ অতিপরিচিত প্রাণী। প্রাচীনকালে এই মহিষ ( water buffalo) ছিল কৃষির শত্রু৷ ফসলের মৌসুমে প্রায়ই খেতে ঢুকে ফসল বিনষ্ট করত।তাই কৃষির বিকাশের বনের মোষকে দমন করে কৃষিকাজে ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা থেকেই মহিষমর্দিনীর উদ্ভব। আর কৃষির সাথে নারী যোগ এই উপমহাদেশে আদিমকাল থেকে।সেই থেকেই মহিষকে শত্রুরূপে কল্পনা করে দেবীকে মহিষমর্দিনী বানিয়ে পূজার রীতি শুরু হয়। হিন্দু পুরাণে খারাপ বা ক্ষতিকর কোনো কিছুকে অসুর বা অশুভ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা দেখা যায়। সে কারণেই সময়ের সাথে সাথে মহিষ হয়ে যায় মহিষাসুর।

বাংলায় দুর্গাপূজা বৌদ্ধ বা বৌদ্ধত্তর যুগে আসে নি। যদিও পাল যুগে, সেন যুগেও বাংলায় দুর্গাদেবীর উপাসনা প্রচলিত হলেও শারদীয় দুর্গোৎসব ছিল না। যদিও বাংলাদেশের ঢাকেশ্বরী মন্দির বল্লাল সেনের প্রতিষ্ঠিত বলে মনে করা হয়।একাদশ শতাব্দীর বাঙালি পণ্ডিত ভবদেব ভট্ট মাটির মূর্তি গড়ে দুর্গপূজার বিধান দিয়েছেন। এছাড়াও স্মার্ত রঘুনন্দনের ‘দুর্গাপূজা তত্ত্ব’ (১৫৪০-১৫৭৫), মিথিলার কবি বিদ্যাপতির ‘দুর্গাভক্তি তরঙ্গিনী’ (১৪শ শতক) এসবেও দুর্গাপূজার কথা আছে।

যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধির মতে, ‘দুর্গাপূজা বৈদিক যজ্ঞের রূপান্তর, তন্ত্র দ্বারা সমাচ্ছন্ন।বৈদিক যুগে প্রত্যেক ঋতুর প্রারম্ভে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হত। শরৎঋতুর আরম্ভেও হত।’ বৈদিক যজ্ঞ ও দুর্গাপূজায় অনেক প্রভেদ থাকলেও উদ্দেশ্য একই, রোগমুক্তি,আয়ু বৃদ্ধি,যশ,বিজয়, ধন,ধান্য,সন্তান ইত্যাদি লাভ।যোগেশচন্দ্রের তাই অনুমান, বৈদিক শারদ যজ্ঞই তন্ত্রের প্রভাবে পর্যবসিত হয়েছে আধুনিক দুর্গোৎসবে।

বাংলায় শারদীয়া দুর্গোৎসব শুরু করেন রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের রাজা কংসনারায়ণ রায়। এটা মুঘল সম্রাট আকবরের আমলের ঘটনা, সম্ভবত ১৫৮২ সালে শরৎকালে। সে হিসেবে বাংলার দুর্গাপূজার ইতিহাস মোটামুটি ৪০০ বছরের পুরোনো।  আদিতে দূর্গাপূজা বসন্তকালেই হতো, মার্কণ্ডেয় পুরাণে সুরথ রাজা ও সমাধি বৈশ্যের পূজার কথাও বসন্তকালেই বলা আছে।

তবে চণ্ডীতে আছে ‘শরৎকালে মহাপূজা ক্রিয়তে যা চ বার্ষিকী'(১২/১২)। এছাড়াও বিভিন্ন পুরাণে শরৎকালে পূজার কথা পাওয়া যায়। কংসনারায়ণ ছিলেন জমিদার, রাজা নয়, তবে রাজ্য বেশ বড় ছিল।(পরবর্তীতে অবশ্য সম্রাট আকবর কর্তৃক ‘রাজা’ উপাধি পান)। তিনি ‘রাজসূয়’ বা ‘অশ্বমেধ’ যজ্ঞ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পণ্ডিতদের বিধানে তিনি এসব যজ্ঞ না করে মার্কণ্ডেয় পুরাণে বর্ণিত দুর্গাপূজা করার উদ্যোগ নেন। এ কাজে সহায়তা করেন কবি কৃত্তিবাস ওঝা (সম্ভবত কংসনারায়ণর সভাকবি)।

রাজা কংসনারায়ণের দুর্গা মন্দির

কৃত্তিবাস বাংলায় রামায়ণ অনুবাদ করেন এবং সেখানে তিনি লঙ্কার রাজা রাবণের হাত থেকে স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করার জন্য রামচন্দ্র কর্তৃক শরৎকালে দুর্গাপূজা বা অকালবোধনকরার কথা উল্লেখ করেন।তবে মূল বাল্মিকী রামায়ণে এ কাহিনী নেই। তবে কৃত্তিবাসের পূর্ববর্তী ‘কালিকাপুরাণ’(৭ম-১১শ শতাব্দী) এবং ‘বৃহদ্ধর্মপুরাণ’ এ (১৩শ শতাব্দী) অনুরূপ ঘটনা পাওয়া যায়৷ এছাড়া দেবী ভাগবতেও রামচন্দ্রের শারদ নবরাত্রি উদযাপনের  উল্লেখ আছে। কৃত্তিবাস এসব কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের মতো করে রামের দুর্গাপূজার কাহিনী তাঁর বাংলা রামায়ণে প্রবিষ্ট করেন। কৃত্তিবাস রচিত এ বাংলা রামায়ণ সমগ্র বাংলা অঞ্চলে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং সেই সাথে কংসনারায়ণের দুর্গাপূজাও ব্যাপক প্রচার পায়। ফলে গোটা বাংলা জুড়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পায়।

বাংলার এই ‘একচালা’ কাঠামোয় ‘সিংহবাহিনী মহিষাসুরমর্দিনীরূপে’ প্রতিমা নির্মাণ করে দুর্গাপূজার রীতি শুরু হয় রাজা কংসনারায়ণের হাত ধরেই। একচালা প্রতিমা মানে হলো একই কাঠামোর মধ্যে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ সহ সপরিবারে দুর্গার প্রতিমা তৈরি করে পূজো করা। পিছনে প্রতিমার ‘চালি’ তে নানারকম নকশা ও পৌরাণিক ছবি চিত্রিত হতো।

ঐতিহ্যবাহী’একচালা’ প্রতিমা; আবহমান বাংলার যৌথ পরিবারের প্রতীক।

এই একচালা কাঠামো বাংলার একান্নবর্তী যৌথ পরিবার কাঠামোকে নির্দেশ করে। এ পূজায় রাজা কংসনারায়ণ সাত লক্ষ টাকা ব্যয় করেন। তাঁর দেখাদেখি পরের বছর যশোরের রাজা জগদ্বল্লভ রায় সাড়ে আট লাখ টাকা খরচ করে দুর্গা পূজা করে। দু্র্গাপূজার অনুষঙ্গে  প্রাচীন বাংলা তথা ভারতের  বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও লোকজ উপাদান যুক্ত হয় কালে কালে।  মার্কণ্ডেয় পুরাণে প্রাচীনকালে নবপত্রিকার নবরাত্রি উৎসবের কথাও বলা আছে। উত্তর ভারতের লোকেরা এই থেকে নবরাত্রি উৎসব করে। বাঙালির দুর্গাপূজায়ও নবপত্রিকার পূজা করা হয়।

‘নবপত্রিকা’ মানে নয়টি গাছের পাতা। নবপত্রিকা তৈরি হতো বাংলা অঞ্চলে বহুল প্রাপ্ত নয়টি বিশেষ ঔষধিগুণ সম্পন্ন গাছ যথা, কলা, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, অশোক, বেল, ডালিম, মানকচু আর ধান।  একটি সপত্র কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করে একজোড়া বেল সহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়; স্ত্রীরূপের জন্য দু’টি বেল দিয়ে করা হয় স্তনযুগল। তারপর সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দেবীপ্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম ‘কলাবউ’। এই নয়টি গাছ দেবীর নয় রূপ বা নবদূর্গার প্রতীক বলা হয়। এই নবপত্রিকার পূজা থেকে তৎকালীন বাংলার সমাজে কৃষি ও ঔষধি উদ্ভিদের গুরুত্ব বোঝায়।

নবপত্রিকা বা ‘কলাবউ’ স্নান

এছাড়াও দুর্গাপূজায় অশ্বত্থ, বট, যজ্ঞডুমুর, পদ্ম, অতসী ফুল, আমের শাখা, অপরাজিতা লতা, বেলপাতা, তুলসীপাতা প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়। আরও লাগে ধান, দূর্বা, তিল, সরিষা, হরতকী, পান, সুপারি, চাল, যব, কলাই, নারিকেলসহ বিভিন্ন ফল, ফুল, অন্ন, ব্যঞ্জন, মিষ্টান্ন, দুধ, দই, ঘি, খই।  এমনকি গোময়, গোমূত্র, কাঠ, চন্দন, সিদ্ধি, মাটি, বালি, জল ইত্যাদি সবই দেবী দুর্গার পূজায় সমাদরে আহৃত ও ব্যবহৃত হয়। এই সব কিছুই বাংলাদেশের চিরন্তন কৃষি-সম্পদ-নির্ভর সমাজব্যবস্থার প্রকাশক।

দু্র্গা বিভিন্ন লোকায়ত রূপেও বাংলায় গৃহীত ও সমাদৃত। যেমন,ফসলের দেবী শাকম্ভরী, মহামারী ও কীটপতঙ্গ দমনকারী ভ্রামরী, খরা দূরকারী শতাক্ষী। এসবই আবহমান গ্রামবাংলার চিত্রই তুলে ধরে।

দু্র্গাপূজা নারীশক্তির পূজা। নারীশক্তিকে সম্মান জানিয়ে দুর্গা পুজোয় ব্যবহৃত হয় নবদ্বার মৃত্তিকা বা  সমাজের বিভিন্ন স্তরের নবকন্যার ঘরের মাটি। এবং এই নবকন্যা হলেন (১) নর্তকী/ অভিনেত্রী, (২) কাপালিক, (৩) ধোপানী, (৪) নাপিতানি, (৫) ব্রাহ্মণী, (৬) শূদ্রাণী, (৭) গোয়ালিনী, (৮) মালিনী ও (৯) পতিতা।

তবে বাংলার দুর্গাপূজার শুরুতে এতো সার্বজনীন ছিল না। বাঙালির কাছে দুর্গাপূজার বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করলেও তখনও তা সর্বসাধারণের সাধ্যের মধ্যে আসে নি। কারণ দুর্গাপূজার খুবই ব্যয়সাপেক্ষ ছিল। এই দুর্গাপূজা তখন মূলত জমিদারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাঁদের বৃহৎ আয়োজন তাঁদের প্রজারা সামিল হতেন।সাধারণত ‘একচালা’ প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা হত। প্রতিমা তৈরি, পূজোর ঢাক, দেবীর সাজসজ্জা, বস্ত্র,গয়না, পূজোর ভোগ রান্না, পরিবেশন ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে প্রজারা যুক্ত হতো।

অষ্টাদশ শতাব্দীতে বাংলার সর্ববৃহৎ দুর্গাপূজার আয়োজনের করতেন নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়।তাঁর  দুর্গাপূজার জাঁকজমকের কথা গোটা বাংলায় চর্চিত ছিল।বিপুল ধনসম্পদ ও ঐশ্বর্যের মালিক কৃষ্ণচন্দ্রের দুর্গাপূজাও সেরকম বড় মাপেরই হতো।

১৭৫৭ সালে রাজা নবকৃষ্ণ দেব তাঁর শোভাবাজার রাজবাড়িতে পলাশীর যুদ্ধজয়ী লর্ড ক্লাইভের সম্মানে বিশাল আয়োজন করে দুর্গাপূজার করেন। সে পূজার চল আজও আছে।

কলকাতার বিখ্যাত শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপূজা

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে দুর্গাপূজার জৌলুশ আরো বাড়ে। জমিদাররা ইংরেজদের নিমন্ত্রণ করতেন উৎসবে। প্রচুর ঝাড়বাতি, প্রদীপ জ্বালানো হতো,প্রচুর খাবারদাবার তৈরি হতো,অতিথি শিল্পী আনিয়ে, বাঈজীদের আনিয়ে নাচগান হত প্রচুর। এমনকি ইউরোপ থেকেও লোক আসত উৎসবে অংশ নিতে। ইংরেজদের কাছে এ উৎসব  বিনোদন ও উপভোগের বিষয় ছিল।

ব্রিটিশ আমলের দুর্গোৎসবের উপভোগরত ইংরেজরা

 

১৯ শতকের দুর্গাপূজার বিরল একটি ছবি

 

বনেদি বাড়ির দুর্গাপূজো

‘বারোয়ারি’ দুর্গাপূজার প্রথম শুরু হয় ১৭৯০ সালে হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়ায়। বারোজন যুবক মিলে চাঁদা তুলে এ পূজা শুরু করে। তারা দেখে দুর্গাপূজায় প্রচুর খরচ, সর্বসাধারণের সাধ্যের বাইরে। তাই তারা সর্বসাধারণের জন্য এ ‘একচালা’ প্রতিমা নির্মাণ করে পূজার আয়োজন করে। বারো জন বন্ধু বা ‘ইয়ার’ (ফারসিতে ‘ইয়ার’ মানে বন্ধু) মিলে এ পূজো আরম্ভ করায় একে বলা হয় বারোয়ারি দুর্গাপূজা।

আর এরপর কালের বিবর্তনে দুর্গাপূজা বর্তমান  সার্বজনীন রূপ নেয়। কালে কালে পূজার জৌলুশ বৃদ্ধিতে নিত্যনতুন অনুষঙ্গ যোগ হয়। আজকাল ঐতিহ্যবাহী একচালা ভেঙে বহুচালা বিশিষ্ট দুর্গাপূজা হয়। কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের, এমনকি বাংলাদেশের কুমারটুলিগুলোতেও বিভিন্ন আঙ্গিকে নানা ঢঙের, নানা রূপের বৈচিত্র্যময় প্রতিমা নির্মান হয়। বর্তমানকালে ভারতে ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশাল আকৃতির দৃষ্টিনন্দন পূজা মণ্ডপে বিভিন্ন থিমে দুর্গাপূজার করা হয়। বিশেষ করে কলকাতা শহরের বিভিন্ন থিমের বর্ণিল দুর্গাপূজা সারা বিশ্বে বিখ্যাত। এ পূজো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। কলকাতার দুর্গাপূজাকে বলা হয় ‘বিশ্বের বৃহত্তম পাবলিক আর্ট শো’। প্রতিবছর কলকাতার দুর্গাপূজা দেখতে ভারতের বিভিন্ন স্থান এমনকি সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকেও বিপুল পরিমাণ পর্যটক আসেন।

কলকাতার কুমারটুলিতে প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

কালে কালে দুর্গাপূজার  বহু বিবর্তন হয়েছে। ইতিহাসের রাস্তায় অনেকটা পথ অতিক্রম করে দু্র্গাপূজা আজকের রূপ নেয়। পর্বত থেকে সমতলে নেমে বৈদিক সভ্যতার মূলস্রোতে মিশে গিয়ে সারা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়া সেই সিংহবাহিনী দেবী হয়ে ওঠে বাংলার মহিষাসুরমর্দিনী।বাংলার কৃষিভিত্তিক সমাজ সেই দুর্গাদেবীকে আপন করে নেয় নিজেদের ঘরের মেয়ের মতো করে। ধীরে ধীরে পূজার কলেবর বাড়তে থাকে। এককালে যে পূজা কেবল রাজা রাজড়াদের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল, সময়ের সাথে তা সর্বসাধারণের হয়ে ওঠে। সিংহবাহিনী মহিষাসুরমর্দিনী দেবীর পূজা হয়ে ওঠে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব। অতঃপর প্রাচীন গ্রামবাংলার কৃষিভিত্তিক সমাজের সেই দুর্গাপূজা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।  দুর্গাপূজার সাথে কেবল সনাতন হিন্দুধর্মের ইতিহাস নয়, প্রাচীন বাংলা তথা গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। যতই বিবর্তন হোক, যতই অাধুনিক হোক,দুর্গাপূজার যে মূল উদ্দেশ্য, তা যেন সাধিত হয়। অশুভের উপর শুভ শক্তির জয় হোক, মাতৃশক্তির জয় হোক। এই শারদোৎসব যে নারীত্বের জয়গান গায়, মাতৃত্বের জয়গান গায় তা বর্তমান সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ুক। সকলের অংশগ্রহণে সর্বাঙ্গীণ সুন্দর হোক। এই ই আমাদের কাম্য। বর্তমান সমাজের অত্যাচারিত মেয়েরা দুর্গার ন্যায় সাহসী,শক্তিশালী হয়ে উঠুক;নিজের উপর আগাত এলে যেন তা দশহাতে প্রতিহত করতে পারে। প্রতি মা-তেই, প্রতি নারীতেই দুর্গা জেগে উঠুক, জেগে উঠুক সকলের অন্তরে।

২০১৫ সালে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে নির্মিত বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু দুর্গা প্রতিমা

তথ্যসূত্রঃ  ১) ঋগ্বেদ দেবীসুক্ত (১০.১২৫)

২) শ্রী শ্রী চণ্ডী, মার্কণ্ডেয় পুরাণ, দেবী ভাগবত

৩) কৃত্তিবাসী রামায়ণ,  মহাভারত

৪) Bongobharati.wordpress.com

৫) ‘দুর্গা যুগে যুগে’- দিলীপ রায়, abasar.net

৬) ‘ বাংলা ও বাঙালি’ – শ্রীশ্রী আনন্দমূর্তজী

৭) ‘Studies in Goddess cult in Northern India’ – Jagadish Narain Tiwari

ছবি সূত্রঃ গুগুল, পিনইন্টারেস্ট, টাইমস অফ ইণ্ডিয়া, ঢাকা ট্রিবিউন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম।

ছবি কৃতজ্ঞতায়ঃ জয়ীতা তিথি, অম্লান দাশ পিয়াল, কল্লোল দেব।