হরপ্পার সিল বা ট্যাবলেট গুলিতে বেশ কয়েকটি প্রাণীর ছবি দেখতে পাওয়া যায় l তার মধ্যে আবার আটটি প্রাণী সবচেয়ে বেশি দেখা যায় l এর মধ্যে চারটি তৃণভূমির বন্য প্রাণী: গণ্ডার, হাতি, মহিষ এবং বাঘ এদের ছবি দেখা যায় । যে সিল-ট্যাবলেটগুলি পাওয়া গিয়েছে তার সম্পূর্ণ নমুনার মধ্যে এগুলি র সংখ্যা খুব বেশী না। অন্য চারটি প্রাণী হ’ল গৃহপালিত: ছাগল, জেবু, ষাঁড় এবং তথাকথিত ইউনিকর্ন ষাঁড়। এটি কোনো পৌরাণিক বা ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে যুক্ত হতে পারে বলে মনে করা হয় l
আমরা এতদিন যা ভেবে এসেছি, সিন্ধু সভ্যতা তার থেকেও পুরনো। ৫,৫০০ নয়, ওই সভ্যতার বয়স ছিল অন্তত ৮,০০০ বছর। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বৈজ্ঞানিকরা বলেন সিন্ধু নদের পাড়ে গড়ে ওঠা হরপ্পা- মহেঞ্জোদড়ো সভ্যতার জন্ম মিশরীয় (৭০০০ খ্রীঃ পূঃ- ৩০০০ খ্রীঃ পূঃ) ও সুমেরীয় (৬৫০০ খ্রীঃ পূঃ- ৩১০০ খ্রীঃ পূঃ) সভ্যতার অনেক আগে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের ইতিহাস গবেষণা ব্রিটিশদের গবেষণার ওপরেই নির্ভর করে থাকাতে এই সত্যের সন্ধান পাইনি আমরা।
সভ্যতার ঊষাকালে গ্রামীণ সভ্যতার প্রাধান্য থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বদলে গিয়ে শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। ফলে হরপ্পার বাড়িঘর, শহরের পরিকল্পনা এমনকী সংস্কৃতিও আগের থেকে অনেক পরিণত রূপ নেয়। আরব ও মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার মানুষদের নিয়মিত বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকারও প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। পরের দিকে নগরায়নের বাড়াবাড়ি, কমে আসা জনসংখ্যা ও বাড়িঘর ছেড়ে মানুষের অন্যত্র চলে যাওয়ার ফলে ধীরে ধীরে লোপ পায় হরপ্পান লিপি। বর্যা কমে আসায় মানুষ যে গম ও বার্লির মত শস্য ফলানো ছেড়ে ধান চাষ শুরু করেছিলেন তারও প্রমাণ মিলেছে।