Attack on Pearl Harbor. Image source: Google

৭ ডিসেম্বর, ১৯৪১ সাল। সকাল ৭ টা ৪৮ মিনিট। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই টেরিটরির হনলুলুর পার্ল হারবারের নেভাল বেসে নোঙ্গর করে রাখা বিভিন্ন ব্যাটেল শিপ, ডেস্ট্রয়ার,ক্রুজার আর এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারগুলো অন্যান্য ব্যাস্তদিনগুলোর মতোই কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠে। নাবিক-সৈনিকদের রেগুলার ড্রিল এবং অফিসারদের রুটিন মাফিক কাজে ব্যাস্ত ছিলো সবাই। হঠাৎ করে উত্তরআকাশ হতে ঝাঁকে ঝাঁকে বোম্বার, ফাইটার বিমান যেন চাকভাঙ্গা মৌমাছির মতই ধেয়ে আসে পার্ল হারবারের দিকে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় মার্কিনিরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই যেন নরক ভেঙ্গে পড়ে। একের পর এক বোমা আর বিমানগুলো হতে ছোড়া টর্পেডোর আঘাতে মুহূর্তে আগুন ধরে যায় ইউএসএস অ্যারিজোনা, ইউএসএস নেভাদাসহ অন্যান্য মার্কিন যুদ্ধজাহাজে।

Battleship attack Pearl Harbor Japanese December-7-1941. Image source: Google

জাহাজগুলোর ভীত সন্ত্রস্ত ক্রু এবং অফিসারদের উপর মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হিসেবে উপর থেকে ফাইটার বিমানগুলো নিরবিচ্ছিন্নভাবে গুলিবর্ষন করতে থাকে। ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পুরো বিশ্ব জানতে পারে যে, কোনোরকম পূর্ব হুঁশিয়ারি ছাড়া সূর্যোদয়ের দেশ জাপান যুক্তরাষ্ট্রের পার্ল হারবারের নৌ ঘাঁটিতে অতর্কিত আক্রমন করেছে।এরফলে যুক্তরাষ্ট্রও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়ে।মূলত এর আগে যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে যুদ্ধ এড়িয়ে চলছিলো। মূল ভূখন্ড থেকে প্রায় ৪০০০ মাইল দূরে জাপানীজ ইম্পেরিয়াল নেভীর এমন সফল আক্রমনে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো সেই সময়ের সমরবিদেরা।পুরো দুই ওয়েভে ছয়টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে প্রায় সাড়ে তিনশ বিমান এ অভিযানে অংশ নেয়। এতেকরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় চারটি ব্যাটেলশিপ পুরোপুরি ডুবে যায় এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরোও চারটি ব্যাটেল শিপ, তিনটি ডেস্ট্রয়ার, তিনটি ক্রুজারসহ অন্যান্য জাহাজের। এছাড়া প্রায় ১৮৮ টি বিভিন্ন এয়ারক্রাফট পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় চব্বিশশো জন নিহত হয় এবং প্রায় এগারশো তেতাল্লিশ জন আহত হয়। জাপানের এই সফল, ভয়াবহ অভিযানের মূল কারিগর ছিলেন একজন প্রতিভাবান এডমিরাল, তিনি এডমিরাল ইয়ামামোতো। যিনি জাপানিজ ইম্পেরিয়াল নেভীর কম্বাইন্ড ফ্লিটের কমান্ডার-ইন-চীফ ছিলেন।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কয়েকজন খ্যাতনামা সমরবিদদের ছোট্ট তালিকায় অনায়াসে তাঁর নাম চলে আসবে।

Marshal Admiral Isoroku Yamamoto. Image source: Wikipedia

অ্যাডমিরাল ১৮৮৪ সালের ৪ এপ্রিল তৎকালীন জাপানিজ এম্পায়ারের নাগাওকাতে এক প্রসিদ্ধ সামুরাই পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।তাঁর পুরো নাম ইসোরোকু ইয়ামামোতো । জাপানী ভাষায় ইসোরোকু শব্দের অর্থ ৫৬। তাঁর জন্মের সময় তাঁর পিতার বয়স ছিলো ৫৬। তাই তাঁর এই উপনাম দেয়া হয়।পরবর্তীতে তাঁকে আরেক প্রসিদ্ধ “ইয়ামামোতো” পরিবার দত্তক নেয়। ১৯০৪ সালে জাপানের তৎকালীন ইম্পেরিয়াল নেভাল একাডেমী থেকে গ্রাজুয়েট হওয়ার পর তিনি একজন তরুন অফিসার হিসেবে ইম্পেরিয়াল নেভীতে যোগ দেন। পরবর্তীতে রুশ-জাপান যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন এবং এক পর্যায়ে তিনি আহত হয়ে বামহাতের দুইটি আঙ্গুল হারান।একজন দক্ষ ও চৌকশ অফিসার হিসেবে তিনি নেভীর নানা গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেন।১৯২৩ সালে তিনি ক্যাপ্টেন পদে প্রমোশন লাভ করেন এবং “ইসুযু” নামক ক্রুজারের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৩০ ও ১৯৩৫ সালে যথাক্রমে তিনি রিয়ার অ্যাডমিরাল ও ভাইস অ্যাডমিরাল পদে উন্নীত হন।তাঁর পেশাগত দক্ষতা ছিলো নেভাল এভিয়েশনে। তিনিই প্রথম জাপানী নৌ কমান্ডারদের মধ্যেই নেভাল এভিয়েশনের গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হন। ভবিষ্যৎ নৌযুদ্ধের জয়-পরাজয়ে যে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার মূলভূমিকা পালন করবে তা তিনিই সবার আগে বুঝতে সমর্থ হন। তিনি ইম্পেরিয়াল নেভীর কর্তাব্যাক্তিদের বোঝান যে বিশাল যুদ্ধ জাহাজ নির্মানে মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ না করে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নির্মানে বেশি মনযোগী হওয়া উচিত।মূলত তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই জাপানিজ ইম্পেরিয়াল নেভী সময়ের অন্যতম ভয়ংকর নেভাল এভিয়েশন ফোর্স তৈরী করতে পেরেছিল।এতেকরে নেভীর কার্যকরিতা ঐ সময়ে বহু গুন বেড়ে যায়।

Isoroku Yamamoto as Admiral, 1942. Image source: Wikipedia

সেইসময়ে জাপানি সশস্ত্র বাহিনীতে উগ্র জাতীয়তাবাদী, সাম্রাজ্যবাদী চক্রের দারুন প্রভাব ছিলো। বিশেষত কোয়ান্টুং আর্মির কর্তাব্যাক্তিরা ছিলেন খুবই যুদ্ধাংদেহী।মূলত পেশি শক্তির প্রয়োগ করে সর্বত্র জাপানের কর্তৃত্ব স্থাপন করাটাই তাঁদের কাছে মূখ্য ছিলো। তাদের সাথে ইয়ামামোতোসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ নেভাল কর্তাব্যাক্তিদের মধ্যে সবসময়ই দ্বন্দ্ব ছিলো। সেইসময় জাপান চীনের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে চীন দখল করে ফেলে।ইয়ামামোতো চীনে জাপানের এই আগ্রাসনের বিপক্ষে ছিলেন।ফলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা যুদ্ধবাজদের চক্ষুশূলে পরিনত হন এবং সেনাবাহিনীর অনেকেই প্রকাশ্যেই ইয়ামামোতো ও তাঁর সমর্থকদের সমালোচনা করতে থাকে।এমনকি অ্যাডমিরাল ইয়ামামোতোকে হত্যার গুজব ও সেইসময়ে ভাসতে থাকে।এরই মধ্যে জাপান সরকার তার সাম্রাজ্যবাদী স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ফ্যাসিস্ট ইতালি ও নাৎসি জার্মানির সাথে ট্রাইপাট্রিট চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।ইয়ামামোতো এই চুক্তির বিরোধিতা করেন। তিনি যুদ্ধবাজ নাৎসী জার্মানির সাথে জাপানের এই আঁতাতকে মানতে পারেন নি। তিনি বুঝতে পারেন এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে জাপান এক দীর্ঘমেয়াদী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।১৯৪০ সালে ইয়ামামোতো এডমিরাল হন। প্রায় সেইসময়ে হিদেকি তোজো ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন। তখন সবাই ভেবেছিলেন ইয়ামামোতোর মিলিটারি ক্যারিয়ার হয়তো শেষ কিন্তু তিনি স্বপদেই বহাল ছিলেন । কারন তোজো ছিলেন ইয়ামামোতোর পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী।অবশ্য এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারন ছিলো যেমন: নৌবাহিনীতে সাধারন অফিসার , নাবিকদের মধ্যে ইয়ামামোতোর জনপ্রিয়তা ছিলো আকাশচুম্বী।এছাড়া জাপানী রাজ পরিবারেও ইয়ামামোতোর জনপ্রিয়তা ছিলো।ব্যাক্তিগতভাবে তিনি জাপানের সাম্রাজ্যবাদী নীতির ঘোর বিরোধী।

Yamamoto onboard the battleship Nagato in 1940. Image source: Wikipedia

এডমিরাল ইয়ামামোতো জাপানের নেভাল এভিয়েশনে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত বৈল্পবিক পরিবর্তন সাধন করেন।তাঁর তত্ত্বাবধানেই মিৎসুবিশি G3M মিডিয়াম বোম্বার এবং G4M মিডিয়াম বোম্বারের উৎকর্ষ সাধিত হয়।তিনি জানতেন যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জাপানের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন এক সময়ে জাপানকে আমিরিকার মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেবে।তাই তিনি আমেরিকার প্যাসিফিক ফ্লিটে হামলাপোযোগী করতে জাপানী বিমান গুলোতে টর্পেডো বহন করার সামর্থ্যের দিকেও মনযোগ দেন।এরই মধ্যে ১৯৪১ সালে জাপান আমেরিকাকে একটা বড়সর ধাক্কা দেয়ার পরিকল্পনা করেন।তারা আমেরিকার প্যাসিফিক ফ্লিটকে ধ্বংস করার এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করে।ব্যাক্তিগতভাবে ইয়ামামোতো এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি জানতেন আমেরিকার সামরিক সক্ষমতার ব্যাপারে।দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ হলে জাপানের পক্ষে জয়লাভ করা কঠিন হবে এটাও তিনি বুঝেছিলেন।আমেরিকা সম্পর্কে তাঁর দীর্ঘদিনের জানাশোনা ছিলো।তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েটও ছিলেন। দুবার ওয়াশিংটনে মিলিটারি অ্যাটাশের দায়িত্ব পালন করেন।তিনি দেখেছিলেন আমেরিকার সমৃদ্ধি ও শিল্পায়নকে খুব কাছ থেকে।তাই স্বাভাবিকভাবে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তার মত ছিলো না।কিন্তু যখন পার্ল হারবারে অ্যাটাকের দায়িত্ব তাঁকেই দেয়া হয় তিনি ঝটিকা আক্রমনে শত্রু জাহাজ ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন।

 

Yamamoto with the staff of the Combined Fleet onboard Yamato. Image source: Wikipedia

পার্ল হারবারে সফল অভিযান শেষে জাপানিজ ইম্পেরিয়াল নেভী তাঁর তত্ত্বাবধানে একে আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান, ব্রিটিশ ও ডাচদের উপর ব্যাপক সাফল্য পায়। ফিলিপাইন, ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি একে একে জাপানের দখলে চলে আসে।জাপানের সর্বত্র তখন এডমিরাল ইয়ামামোতোর জয়-জয়কার। “বানজাই”, ”বানজাই” শব্দে তখন জাপানের রাজপথ মুখরিত।ইতিমধ্যে মিত্র পক্ষও প্রশান্ত মহাসাগরে জাপানকে মোকাবেলা করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করে। এরপর ইয়ামোমোতো মিডওয়ে যুদ্ধের পরিকল্পনা করেন। জাপানিজ হাই কমান্ড তা অনুমোদনও করে। অ্যাডমিরাল ইয়ামামোতোকে প্রতিহত করার জন্য আমেরিকান নেভী তাদের হাই প্রোফাইল এডমিরাল চেস্টার ডব্লিউ নিমিৎটজকে দায়িত্ব দেয়।মিডওয়ে আইল্যান্ডে বেজে ওঠে ইতিহাসের ভয়াবহ এক নৌ-যুদ্ধের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া যুদ্ধগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে “ব্যাটল অব মিডওয়ে”।আমেরিকান কোডব্রেকাররা জাপানিজ নেভাল কোড D সফলতার সাথে ব্রেক করে ফেলে, ফলে এডমিরাল নিমিৎটজ জাপানিজ পরিকল্পনা সম্পর্কে ভালোমতোই অবগত ছিলেন । ব্যাপক ও ভয়ংকর যুদ্ধের পর জাপান “ব্যাটেল অব মিডওয়ে “ তে পরাজিত হয়। এটাই মিত্রপক্ষের কাছে জাপানের প্রথম পরাজয়। এই পরাজয়ের ফলে জাপানের অপ্রতিরোধ্য জয়যাত্রা প্রথমবারের জন্য থমকে যায়।এই যুদ্ধে পরাজয়ের পরও জাপানিজ নেভী শক্তিশালী ছিলো।এর পরেও বিভিন্ন স্থানে জাপানিজ ইম্পেরিয়াল নেভীর সাথে মিত্র শক্তির ভয়াবহ সংঘর্ষ চলতে থাকে।ধীরে ধীরে নেভীর সামর্থ ও কমতে থাকে।বিভিন্ন যুদ্ধে ধীরে ধীরে সাফল্য পেতে থাকে মিত্রশক্তি।

Admiral Yamamoto, a few hours before his death, saluting Japanese naval pilots at Rabaul, April 18, 1943. Image source: Wikipedia

১৯৪৩ সালের ১৮ ই এপ্রিল, সকালবেলা।এডমিরাল ইয়ামামোতো সলোমন দ্বীপপুন্জের কাছে এক এয়ারফিল্ডে সেখানে অবস্থানরত মিলিটারি ইউনিট পরিদর্শনে যাবেন। ডিউটিরত অফিসার অনেকবার নিষেধ করলেন যে শত্রুর অ্যামবুশে পড়তে পারেন তিনি। কিন্তু তিনি রওনা দিলেন। একটি মিৎসুবিশি G4M T1-323 বিমানে ছিলেন এডমিরাল ইয়ামামোতো।ছয়টি মিৎসুবিশি A6M Zeros ফাইটার বিমান ছিলো এসকর্ট হিসেবে। অনুকূল আবহাওয়ায় চলছিলো প্লেন গুলো। হঠাৎ ইয়ামামোতোর বহরকে এক স্কোয়াড্রন P-38 লাইটনিং বিমান ঘিরে ধরে তাঁদের। শুরু হয় ডগফাইট। কারন আমেরিকান ক্রিপ্টোগ্রাফাররা জাপানী কোড ব্রেক করে আগে থেকেই এ ব্যাপারে অবগত ছিলো।একপর্যায়ে ইয়ামামোতোকে বহনকারী বিমানটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে নিচে বিধ্বস্ত হয়।নিহত হন জাপানের স্বপ্ন সারথি এডমিরাল ইয়ামামোতো। তাঁর দেহে দুইটি .50 ক্যালিবারের বুলেট পাওয়া যায়।১৯৪৩ সালের ৫ই জুন রাস্ট্রীয়ভাবে ফিউনারেল অনুষ্ঠিত হয়।তাঁকে মার্শাল এডমিরাল এবং সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব “অর্ডার অব ক্রিসেনথিমাম” (ফার্স্ট ক্লাস) প্রদান করা হয়।তাঁকে নাৎসি জার্মানির “নাইটক্রস অর্ডার (ওক লিভস এন্ড সোর্ড)” পদকও প্রদান করা হয়।জাপানের সর্বসাধারন শোকসন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে।

Yamamoto’s state funeral, 5 June 1943. Image source: Wikipedia

এডমিরাল ইয়ামামোতো ইতিহাসের সেইসমস্ত সমরনায়কদের অন্যতম ছিলেন যারা যুদ্ধকে কখনও সমাধান ভাবেন নি। কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসে কর্তব্যের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে যুদ্ধে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি যেনো মহাভারতের কর্ণ বা ইলিয়াডের হেক্টর, যিনি শুধু কর্তব্য নির্বাহের জন্যই পরাজয় জেনেও অন্যায় মহাসমরে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন।ইতিহাস বিজয়ীদের কথাই মনে রাখে । কিন্তু কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা পরাজিত পক্ষে থেকেও অক্ষয় ও চিরন্জীব হন।পরাজয়ের মধ্যেই তাঁরা অমরত্ব লাভ করেন। তাই তো, জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরাজয়ের পরও ইয়ামামোতো ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে আছেন।