ধরুন একটা গাছের গুঁড়ি এত মোটা যে তার ভিতর দিয়ে একটা বড়সড় গাড়ী অনায়েসে চলে যেতে পারছে ! একটু অবাক হচ্ছেন, বাস্তবে এরকম গাছ আছে, যাকে বলে Baobab tree। Adansonia নামক একটা genus এর ৯টি প্রজাতির সবগুলো গাছকে Baobab tree বা বাওবাব গাছ বলে। ৯টির মধ্যে ৬টি প্রজাতি দেখা যায় মাদাগাস্কারে, ২টি র দেখা মেলে আফ্রিকা এবং আরবদেশে, বাকি ১টি অস্ট্রেলিয়ায়। ৫ থেকে ৩০ মিটার উচ্চতা, কাণ্ডের ব্যাস ৭-১১ মিটার, পত্রঝরা বৃক্ষ । বছরের বেশীর ভাগ সময় এদের পাতা থাকে না, গুঁড়ির উপরে ডাল পালাগুলো এমনভাবে সাজান থাকে মনে হয় যেন মূলগুলো গাছের উপরে বসে আছে। এজন্য বাওবাব গাছকে upside down tree ও বলে।
এরা দীর্ঘজীবী, African baobab tree ১০০০ থেকে ৩০০০ বছরের বেশী বাঁচতে পারে , তবে পরিবেশর পরিবর্তন ও মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত হামলায় বেশীরভাগ পুরানো বড় গাছগুলো আর বেঁচে নেই। খুব কর্কশ, রুক্ষ মাটিতেও এই গাছ দিব্য জন্মায়, বাড়ে এবং ফুল- ফল ধরে। এই গাছগুলোর গুঁড়ি এতটাই লম্বা যে এতে প্রায় ৩o হাজার গ্যালন পানি ধরে। সেই কারণেই এরা রুক্ষ মাটিতে খুবই সতেজ থাকে এবং দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে অনায়াসে।
এরা মানুষ এবং প্রাণীদের খাদ্য, আশ্রয়, দেয়ার সাথে আফ্রিকা অঞ্চলের শুষ্ক মাটিকে আদ্র রাখে, পুষ্টি চক্র কে অণুকুলে রাখে ও ভূমিধ্বস প্রতিরোধ করে। এই গাছের ছাল নরম, তন্তুযুক্ত এবং আগুন প্রতিরোধী হওয়ায় এই বাকল দিয়ে কাপড় এবং দড়ি তৈরি হয়।
গাছের পাতা সবুজ এবং চকচকে। এবং এতে প্রোটিন, খনিজ এবং ভিটামিন এ আর সি প্রচুর পরিমাণে থাকে। ফলে, মশলা এবং ওষুধ হিসাবে এই গাছের পাতার ব্যবহার বহুকাল থেকে হয়ে আসছে।
এদের ফুলগুলো বড় এবং সাদা, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বছরে একবারই ফুল ফোটে। এগুলি বিকেলে পাপড়ি মেলে। সারা রাত ফুটে থাকার পর সকালে এরা ঘুমিয়ে পড়ে । সেই সময় ভীষণ মিষ্টি গন্ধ বের হয়। গাছের ফলগুলিও বড় আকারের। প্রচুর ভিটামিন সি এবং অন্যান্য ভিটামিন, খনিজ সমৃদ্ব এ ফলগুলো শুধু মানুষ নয়, বাঁদরের খুব পছন্দের, এজন্য একে monkey bread ও বলা হয়।