১৮১২ খ্রিষ্টাব্দ ।নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী রাশিয়ার দিকে পূর্ণোদ্যমে এগিয়ে চলেছে।ট্ট্স্খফ্ তখন রাশিয়ান সেনা বাহিনীর জেনারেল। দেশরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত জেনারেল তখন শত্রু সৈন্য দমনে নিজকে ব্যস্ত রেখেছেন। তাঁর অন্য কিছু ভাববার সময় নেই। ঠিক এমনই সময় তাঁর স্ত্রী একটি স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নে তিনি নিজেকে একটি অচেনা শহরের সরাইখানার ঘরে আবিস্কার করেন ।–শহরাটিতে যাওয়াতো দুরের কথা-জীবনে কোনদিন এর নামও তিনি শোনেননি।
মহিলাটি স্বপ্নে দেখেন তিনি যেন বিশ্রামরত অবস্থায় নিজেকে বিছানায় এলিয়ে দিয়েছেন। তিনি হঠাৎ দেখলেন তাঁর পিতা তাঁর ছোট ছেলেটির হাত ধরে পর্দা সরিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন। তাঁর চেহারা অত্যন্ত বিমর্ষ। দুঃখের সাথে তিনি তাকে জানালেন যে তাঁর স্বামী ফরাসী বাহিনীর আক্রমণে নিহত হয়েছেন। তিনি বিলাপ করে তার কন্যাকে বলতে লাগলেন, মাগো, তোমার সুখের দিন শেষ হয়ে গেল-তিনি নিহত হয়েছেন, বোরোডিনোতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন।
আরও দুবার তিনি এই একই স্বপ্ন দেখলেন। অবশেষে তার স্বপ্নের কথা তাঁর স্বামীর গোচরে আনলেন। দুজনে একত্রে বসে রাশিয়ার মানচিত্র ঘাটলেন।–উদ্দেশ্য, কোথায় এই বোরোডিনো তা খুঁজে বের করা । তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তারা বোরোডিনোর অস্তিত্ব মানচিত্রে আবিস্কার করতে পারলেননা। অবশেষে ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই সেপ্টেম্বর রাশিয়ার সেনাবাহিনী পিছু হটতে হটতে হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ালো। তুমুল শৌর্যের সঙ্গে তারা ফরাসী বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে লাগলো। যে জায়গায় তারা ঘুরে দাঁড়ালো সেই স্থানটি ছিল বোরোডিনো নামে একটি গ্রাম।যুদ্ধে রাশিয়ার বাহিনী পরাজিত হল।
কাউন্সেস্ টুট্স্খফ্ ও তার পরিবারের লোকজন একটি সরাইখানায় আশ্রয় নিলেন। সরাই খানাটি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত ।তার স্বামী রিজার্ভ সৈন্য দলের ভারপ্রাপ্ত অফিসার হিসাবে দায়িত্ব ভার পালন করছিলেন।
পরদিন সকাল বেলা তার পিতা তার কনিষ্ঠ পুত্রটির হাত ধরে এসে কন্যার কাছে তার স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ জ্ঞাপন করেছেন ।তিনি তোতলাতে তোতলাতে বললেন ,বোরোডিনোতে তার পতন হয়েছে ।তিনি নিহত হয়েছেন-বোরোডিনোতেই তার মৃত্যু হল।