‘alcohol got people drunk Coffee made people think’
ফলে প্রাচীন তুর্কিতে কফি পানে কঠোর শাস্তি দেওয়া হত; ব্রিটেনে দ্বিতীয় চার্লস কফি হাউসগুলো বন্ধ করে দেন।
প্রথম কফি হাউস শুরু হয় কনস্টান্টিনোপলে খিভা হান নামে ১৪৭৫এ। তুর্কি আইন অনুযায়ী মহিলারা দৈনন্দিনের বরাদ্দ কফি না পেলে পুরুষটির বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করতে পারত। এর পর থেকে আরব বিশ্বে কফি সেবন বিদ্যুতের মত ছড়িয়ে পড়তে থাকে; আরব বিশ্বের দেখাদেখি কফি ইওরোপেও বিপুল বিশাল স্থান করে নেয়।
দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম কফি আসে ১৬০০ সালে সুফিসন্ত বাবা বুদানের হাত ধরে। মক্কা তীর্থ করে ফেরার পথে তিনি মোকা বন্দর থেকে লুকিয়ে কফি আনেন দক্ষিণ ভারতের চিকমাগালুরে। লেখক আর কে নায়ায়ণ অসামান্য মন্তব্য করেছেন ভারতে কফির শুরুয়াত হয়েছে সন্তের হাত ধরে, সাম্রাজ্য বদৌলত নয় – তিনি জানতেন কফির উপকারিতা।
লন্ডনে ১৬৫০এর দশকে প্রথম কফিহাউসের জন্ম হয়। এডওয়ার্ড লয়েডের ১৬৯০তে এবচার্চ লেনের কফি হাউসে বিপুল ভিড় হতে থাকে। ইসলাম অঞ্চল থেকে আসার জন্যে ইতালিতে তৃতীয় পোপ ভিনসেন্ট কফিকে শয়তানের পানীয় নাম দেন। কিন্তু শেষ অবদি তিনি কফিতে এতই আসক্ত হয়ে পড়েন যে শেষ অবদি তিনি এটিকে ব্যাপটাইজড করে নেন।
রোমে কফি গ্রেকো(কফি হাউস)তে প্রতিদিন বুদ্ধিজীবিদের আড্ডা বসত। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন কফি হাউস কলকাতায়। কলকাতায় আরও দুটি আছে যাদবপুরে এবং চাঁদনিচক এলাকায়, কিন্তু আড্ডাবাজদের জন্যে কলেজ স্ট্রিটেরটাই সর্বাধিক অগ্রাধিকার পায়। আমি দিল্লি আর ব্যাঙ্গালোরেও কফি হাউসে গিয়েছি, কলকাতার তিনটির তুলনায় বেশ ফিকে।
শাহজাহানের আমলে দিল্লিতে অর্থাৎ শাহজাহানবাদে খাওয়াখানায় চিন্তাশীলেরা আসতেন কিফির স্বাদ নিয়ে আড্ডা দিতে। কবিরাও জড়ো হতেন। বিলায়েতে অর্থাত মধ্য প্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ায় বহু খাওয়াখানা ছিল। সেগুলো মার্জিত রুচির এবং কমনীয়। অভিজাতরাও আড্ডা দিতেন। উচ্চভাবনার মানুষ, সুমিষ্ট বক্তা, কবি এবং গায়কেরা সেসব আড্ডাখানার শান ছিলেন।
শাহজাহানাবাদে এবং চাঁদনিচকে বেশ কয়েকটা দোকান ছিল। চাঁদনিচকের আড্ডাখানায় মহার্ঘ কফি অবলম্বনে অভিজাতরা কাব্যের মত করে সুরেলা ভাষায় আড্ডা দিতেন। মধ্যবিত্তরাও সেখানে যেত কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারত না। অনেকেই অর্থ সাশ্রয় করতে বাজারে তৈরি কফি কিনে খেত। মিতব্যয়ীরা বাড়িতে ভৃত্যর বানানো কফি সঙ্গে করে নিয়ে যেত।
সারনামেইহুমায়ুন থেকে অটোমান পারস্যে উৎসবে বিভিন্ন কারিগর সংঘের মিছিলে অংশ গ্রহনের ছবি। কফি হাউসের কারিগরেরা মিছিলে অংশ নিত। তারা তাদের দোকানের মডেল নিয়ে হাঁটত। তামা কারিগর, স্বর্ণকার, দর্জিরা থাকত। কারিগর প্রধানেরা সামনে থাকতেন। বিভিন্ন মডেল নিয়ে হাঁটত কারিগরেরা। কারিগরদের সঙ্গে হাঁটত সোনা রূপা ইত্যাদি পরিধান করে শয়ে শয়ে শিক্ষানিবিশীরা।