এই নানা রঙের তৈরি মোজাইকটিতে রোমান ধর্মীয় উৎসব বা পূজায় সংগীত পরিবেশন করে এমন কিছু গাইকার ছবি তুলে ধরা হয়েছে । ইতালির ক্যাম্পানিয়ার কাপুয়া শহরের কাছে ডায়ানার মন্দির থেকে পাওয়া এই মোজাইকটি ২য় বা ৩য় শতাব্দীর এক শিল্পকর্ম । বর্তমানে এটি কাপুয়ার প্রাদেশিক প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে রয়েছে।
অসাধারণ সুন্দর এই মোজাইকটিতে প্রত্যেকটি মেয়ের চেহারাকে আলাদাভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেন বাস্তব জীবনের কিছু মডেলকে পর্যবেক্ষণ করে নিখুঁতভাবে তিনি চেহারাগুলোকে তুলে ধরেছেন। পিছনে যে একজন পুরুষ চরিত্র দেখা যাচ্ছে সেটি সম্ভবত এই দলের শিক্ষক। এমন সুন্দর করে মোজাইকটি তৈরি করেছেন যাতে পিছনের শাড়ীর মেয়েদেরকেও স্পষ্টভাবে দেখা যায়। সম্ভবত খুব উঁচু মঞ্চে তারা বসে আছে বলেই এমনটি তিনি তৈরি করেছিলেন। একটা ছোট মেয়েকে একেবারে চমকে যাওয়া ভঙ্গিতে দেখা যাচ্ছে—সে হয়তো তার গলার কাপড়কে ঠিক করছে।
এই শিল্পকর্মটি একটা ঐতিহাসিক দলিল। এর মাধ্যমে সেই সময় গানের ছাত্রীরা কেমন পোশাক পরত, তাদের জুতা কেমন ছিল, তাদের চুল বাঁধার ধরন, চুল আঁচড়ানো সমস্তকিছু আজ আমরা এত বছর পরে স্পষ্ট করে দেখতে পাচ্ছি। এই ধরনের সঙ্গীত বিদ্যালয়ে একসময় খ্রিষ্টধর্মীয় গির্জার গায়কদের দল তৈরিতে অনুপ্রাণিত করেছিল। পোপ সিলভেস্টার প্রায় (৩৩৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে) প্রথম ক্যাথলিক গানের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

ডায়ানার মন্দিরের মোজাইক © Capua, The Provincial Museum of Campania, sacristy
মার্বেল এবং কাঁচ দিয়ে তৈরি এই মোজাইকটি সান্ত’আঞ্জেলো ইন ফর্মিস ব্যাসিলিকার মেঝের নিচ থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। এই ব্যাসিলিকাটি ডায়ানার মন্দিরের উপরে তৈরি করা হয়েছিল। ১৮৮০ সালে স্থানীয় নাগরিকদের কাছ থেকে এই ৭টি মোজাইক বেশ চড়া দাম দিয়ে কিনে নিয়েছিলেন।
তবে ১৯৪৩ সালের বিমান হামলায় জাদুঘরের একটি অংশ ধ্বংস হলে তিনটি মোজাইক নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে এর পাঁচটি মোজাইক সংরক্ষিত রয়েছে ।
এই “অ্যাড ডায়ানা” মন্দিরটি অতন্ত জনপ্রিয় ছিল বলে তাদের মানচিত্রেও এই স্থানটির উল্লেখ পাওয়া যায়। দুই একটি প্রাচীন শিল্পকর্ম নয় এর মাধ্যমে ইতিহাস, ধর্ম, নারীর ফ্যাশন এবং সঙ্গীত চর্চার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আমরা জানতে পারি।