সময়টা ১৫৩১। তখন দক্ষিণ আমেরিকায় চলছে স্প্যানিশ বাহিনীর হামলা।আর উপনিবেশ স্থাপনের প্রতিযোগিতা। এমনই এক সময় অভিযাত্রী Diego de Ordaz ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ওরিনোকো নদীর আশেপাশে সোনা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। সেখানে তিনি শুনতে পান এল ডোরাডো নামে এক সোনার রাজ্যের কথা।যে রাজ্যের আকাশে বাতাসে সোনা উড়ে। এল ডোরাডো স্প্যানিশ শব্দ। ‘এল’ অর্থ The আর ‘ডোরাডো’ অর্থ golden অর্থাৎ পুরো নামটি দাঁড়ায়, The golden one. পরবর্তীতে একজন স্প্যানিশ অভিযাত্রী জুয়ান মারটিনেজ -এর কাছ থেকে এই সোনার নগরীর ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানা যায়। তখন এ অভিযাত্রী মৃত্যুপথযাত্রী। তিনি যেন এক বোমা ফাটালেন। প্রকাশ করলেন সাউথ আমেরিকার গভীরে এই অদ্ভুত নগরীর কথা।
Diego de Ordaz এর নেতৃত্বে একটি অভিযানের মূল দল থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এবং একটি ছোট নৌকায় ভাসতে ভাসতে একসময় সোনায় মোড়ানো শহরটিকে খুঁজে পান। এদিকে দিয়াগো ডি ওরডাজ এই নগরীর অনুসন্ধান করে, কোন কিছু না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। জোয়ান মার্টিনেজ এর কাছ থেকে জানা যায়, শহরটির মানুষজন খুবই বন্ধত্বু পরায়ন এবং শান্তিপ্রিয়। তাদের সম্রাট ইঙ্গা নাকি মারটিনেজ এর সাথে রাজকীয় অতিথির মতো আচরণ করেন। তাকে পুরো শহরটা ঘুরে দেখার সুযোগও দেন। শহরটিতে সোনালী পানিতে পরিপূর্ণ একটি জলাশয়ও ছিল অদ্ভুত নগরীর প্রাসাদ থেকে শুরু করে জলাধার পর্যন্ত প্রায় সবকিছুই ছিল স্বর্ণখচিত।জুয়ান এখানে কতদিন ছিলেন? কিভাবে ফিরে এলেন এবং কেনই বা তিনি মৃত্যুর প্রাক্কালে এসব তথ্য প্রকাশ করেছিলেন – তা নিয়ে বহু গল্প প্রচলিত আছে। তবে তিনি এ নগরীকে ‘মানোয়া’ বলে অভিহিত করেন, কারণ তিনি সেখানকার অধিবাসীদের কাছে থেকে এ নামটি জেনেছিলেন।
দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন জায়গা চষে ফেলে ইউরোপীয়রা। কিন্তু এল ডোরাডো ধরা দেয়নি।
উনিশ শো শতাব্দীর প্রথম ভাগে এসে মানুষ মেনে নেয় এল ডোরাডো বলতে কোন শহর ছিল না। এটা কেবলই পৌরাণিক কাহিনী। কিন্তু আসলেই কি তাই? এ শহরকে স্বচক্ষে দেখার একমাত্র দাবিদার মৃত্যুপথযাত্রী মার্টিনেজ কেন মিথ্যা বলতে যাবেন? প্রাচীন আমেরিকার ইতিহাস অনুযায়ী এটা অকল্পনীয় কিছু নয। ধারণা করা হয়ে থাকে, বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১৮০ টন স্বর্ণ এবং ১৬০০০ টন রৌপ্য এসব অঞ্চল থেকে লুট করে নেওয়া হয়েছিল। যদিও হিসাবটা অনুমান নির্ভর , বলা হয় সে সব স্বর্ণ গলিয়ে পৃথিবীর নানা স্থানে পাচার করে দেওয়া হয়েছে।
Stay Curious SiS team