এই ৪৬০ কোটি বছরের পৃথিবীতে মানুষের অাবির্ভাব হয়েছিলো প্রায় ২মিলিয়ন বছর পু্র্বে বা তার অাগে।তা নিয়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা।সুপ্রাচীচন কালের গুহা মানব থেকে শুরু করে অাধুনিক সভ্য মনুষ্য জাতিতে পরিণত হতে মানুষকে বহুযুগ পাড়ি দিতে হয়েছে।মানব জাতির বয়স জ্ঞানত ২ মিলিয়ন হলেও মোটামোটি সর্বস্তরের মানুষেরা অাধুনিকতা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চা শুরু করে মাত্র ৫০০-৬০০ বছর অাগে।কিন্ত এর পূর্বে দীর্ঘকাল মানবসমাজে সর্বময় কতৃত্ব প্রতিষ্ঠত হয় সম্রাট, পুরহিত, ভূস্বামি দের।ফলে ঐ সময় মানব সমাজে সাহিত্য ও শিক্ষা ছাড়াও জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রে দেবতা,রাজ-রাজড়া, পৌরাণিক কাহিনী প্রভাব ফেলতে থাকে,যার ফল অামরা দেখতে পায় তাদের সমস্ত কর্মকান্ডর বিষয়বস্ত দ্বারা।সময়র বিবর্তনে সে সকল সভ্যতা বিলুপ্ত হলেও তাদের কিছু কর্মফল অাজও বয়ে বেড়াচ্ছি এবং এগুলো অামাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে অাছে।বস্তুত সে সকল উপাদানকে উদ্ধার কার্যে নিমগ্ন যে সকল বিদ্যা তাদের মধ্য অন্যতম ‘এটিমোলজি’।এই বিদ্যাটি নিয়ে প্রাচ্যতে তেমন কাজ না হলেও পাশ্চাত্যে ব্যাপক অাকারে গবেষণা হয়।এটিমোলজি র বাংলা প্রতিশব্দ ‘জ্ঞানতত্ব’।তবে বোঝার সুবিধার্থে একে অামরা নামকরন করতে পারি ‘শব্দ উদ্ধার তত্ব’ বিদ্যা। মূলত শব্দ,শব্দাংশ কিংবা শব্দমালার উৎপত্তি কিংবা অাখ্যান নিয়ে যে বিদ্যা কাজ করে তাই এটিমোলজি।এই সকল তত্ত্বীয় বিষয় সম্পর্কে অালোচনা করলে জানা যায় আমাদের ব্যবহৃত সকল বিষয়ের পিছনে রয়েছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষপট।
এমনকি প্রতিদিন যে শব্দমালা ব্যবহার করি তা অনেকটাই প্রাচীন দেব-দেবি কিংবা দেবত্ববাদ,রাজতন্ত্র,পুরাণতত্ব,ভৌগিলক প্রপঞ্চ দ্বারা প্রভাবান্বিত। উল্লেখ্য, কোনো স্থানের নামকরনে ভৌগলিক বিষয়াবলি যথেষ্ঠ প্রভাব ফেলে,যেমনঃ’ইন্ডিয়া’ নামটি এসেছে ‘ইন্ডাস’ অর্থাৎ সিন্ধ নদীর নাম থেকে।বহু অাগে এ্যাংলো-স্যাক্সন’স নামক জার্মানিক গোষ্ঠী বর্তমান গ্রেট ব্রিটেন এসে তার পূর্ব দিকে বাস করা শুরু করল তাদের নামানুসারে জায়গার নাম ইস্ট এ্যাংলিয়া হলো,এবং তাদের ভাষার নাম হলো ‘এ্যাঙ্গল-ইস’।তা থেকে আসলো ইংলিশ ও বর্তমানের ইংল্যান্ড। শব্দভান্ডারের বিস্তৃতর সাথে এটিমোলজির বিস্তৃতও ব্যাপক। *এখন আপনাদের সামনে হাজির করলাম শুধু ইংরেজি ও বাংলা মাসের নামের ঊৎপত্তি নিয়ে।
ইংরেজি ক্যালেন্ডারের জানুয়ারি মাসের নাম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘জানুয়ারিয়াস’ থেকে,যা ‘জানু’ নামক দেবতার নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছিল।যার অাভিধানিক অর্থ ‘শুরুর দেবতা’ফেব্রুয়ারি মাসের নাম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ফেব্রুয়ারিয়াস’ থেকে।এটি ফেবুরা দেবতার নাম থেকে নেয়া।ফেবুরা নামের অর্থ ‘feast of purification’। মার্চ নামটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘মার্চাস’ ( martias)হতে যার অর্থ (month of Mars)।
এপ্রিল মাস হয়েছে ল্যাটিন শব্দ avril হতে।যা প্রেমের দেবি aphrodite এর নামে নামাঙ্কিত।মে মাসের নাম এসেছে গ্রিক দেবি ‘মায়ার’ নাম থেকে যাকে বসন্তর দেবি বলা হয়।জুন মাসটি এসেছে জুনো থেকে যাকে বলা হয় ‘দেবতার রাণী’।তবে জুলাই মাসের নামটি এসেছে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার এর নাম হতে এবং অাগস্ট নামটি এসেছে তাঁর ই উত্তরসরি অগাস্টাস সিজারের নাম হতে।পরবর্তি চারটি মাসের নাম এসেছে রোমান ক্যালেন্ডারের সপ্তম,অষ্টম,নবম,দশম মাস থেকে।অর্থাৎ রোমান ক্যালেন্ডারের ‘সেপ্টেম্বরি'(sept-সপ্তম+member-মাস+ri( prefix), অক্টোবরি ( octa – অস্টম+ member-মাস+,ri ( prefix)।এভাবেই novem-নবম,, decem- দশম অর্থ দ্বারা মাস গুলো নামা করা হয়েছে।
কিছু কথা না লিখলেই নয়;ক্যালেন্ডার শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ক্যালেন্ড্রিয়াম হতে এবং অন্য সব কিছুর মতো ক্যালেন্ডােরের ব্যাপক দেশ কাল ভেদে বিভাজন রয়েছে।যেমনঃ সৌর ক্যালেন্ডার( solar),চন্দ্র ক্যালেন্ডার( lunar)রোমান ক্যালেন্ডার,গ্রেগ্রোরিয়ান ক্যালেন্ডার।এই গ্রেগ্রোরিয়ান ক্যালেন্ডারি বর্তমান এ প্রচলিত।ঊল্লেখ্য,রোমান ক্যালেন্ডারে ১০ টি মাস ছিলো।তাই অষ্টম,নবম,দশম মাসের স্থানে ছিলো যথাক্রমে october november ও december।
তবে অাধুনিক গ্রেগ্রোরিয়ান ক্যালেন্ডারে তাদের নাম অপরিবর্তিত রেখে তাদের স্থান যথাক্রমে দশম, একাদশ,দ্বাদশতম মাসের স্থাল দেয়া হয়েছে।এছাড়াও বহু আঞ্চলিক ও ধর্মীয় ক্যালেন্ডার আছে যেমনঃ হিজরি ক্যালেন্ডার,ঊমা ক্যালেন্ডার,pentacandet calender,four seasons and eight night calender( chaina)six ancient calender ( chaina)nisag’a (north American indigenous calender) ইত্যাদি যার আলোচনা এখন মুলতবি রাখাই শ্রেয়।
*ফিরি এবার বাংলা মাসে,বাংলা মাসের নামের পিছনে রয়েছে সম্পূর্ন রূপে পৌরাণিক ঊপাখ্যান।বাংলা মাসের নাম গুলো বৈশাখ,জৈষ্ট্য,আষাড়,শ্রাবণ,ভাদ্র,অাশ্বিন,কার্তিক,অগ্রহায়ন,পৌষ,মাঘ,ফাল্গুন,চৈত্র এসেছে ”অথর্ব বেদ” এর মতে,১২ টি নক্ষত্র তথা বিশাখা,জৈস্ঠা,উত্তরাষাড়া, শ্রবণা,পূর্বভদ্রাপদ,অশ্বিণী, কৃত্তিকা,মৃগশিরা(যার অপর নাম অগ্রহায়ণী) পূষ্যা,মাঘা,উত্তরফল্গুনী,চিত্রা থেকে। matsya/মৎস্যপুরাণম্ মতে,প্রজাপতি দক্ষ এবং তার স্ত্রী পঞ্চজনি’র বাষট্টি কন্যার মধ্যে সাতাশটি কন্যা( বস্তুত ২৭ টি নক্ষত্র) দেবতা চন্দ্রের( হিন্দু পুরানমতে নবগ্রহের একটি চন্দ্র) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল। এই ২৭ টি নক্ষত্র চন্দ্রের এক কক্ষপথে আবর্তিত হচ্ছে, যার মধ্যে ১২ টু নক্ষত্র হতে বাংলা মাসের নামকরণ করা হয়।বলা হয়,নক্ষত্র গুলোতে চন্দ্রগ্রহণের ক্রমানুসারে মাসগুলোকে নামকরণ করা হয়েছে।
বস্তুত,অতীত থেকেয় বর্তমানের ঊৎপত্তি।চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতাব্দীতে য়ুরোপীয় রেনেসার আবির্ভাব এর পর হতেই মানুষ পুরোনো বিষয়াবলি গুরুত্বহীনতার সাথে দেখছে।যদিও তাদের জানা অজানায় তাদের ব্যবহার্যতা থেকে বিরত থাকতে পারছে না।এটিমোলজি নতুনতর মধ্য থেকে পুরনো কে খোঁজার চেষ্টা করে।
Deva chandra;matsya puranam
Deva chandra;matsya puranam