১৮৭০ সালে তোলা অজানা ফটোগ্রাফার এর তোলা পাগলা পুল l

পাগলার পুল একটি মোঘল আমলের ঐতিহাসিক সেতু। এটি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কের পাগলা এলাকায় অবস্থিত। মোঘল সুবাদার মীর জুমলা আরাকানি জলদস্যু ও মগদের দমনের জন্য সোনাকান্দা, হাজিগঞ্জ প্রভৃতি জল দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন । ঐসব দুর্গের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের জন্য যেসব রাস্তা তৈরি করেছিলেন; সেখানে অনেক সেতু বা পুল তৈরি করেছিলেন। ঢাকা থেকে প্রায় ৫ মাইল পূর্ব দিকে নারায়ণগঞ্জ রাস্তায় পাগলা নামে একটি নদী ছিল । নদীটির উপর মীর জুমলা ১৬৬২ সালে একটি সেতু নির্মাণ করেছিলেন; যা পাগলার পুল নামে পরিচিত। সেতুটির চার কোনায় চারটি ফাঁপা টাওয়ার ছিল। টাওয়ারগুলোর উপরে গম্বুজ ছিল। পুলটির নিরাপত্তা প্রহরীরা এসব টাওয়ারে অবস্থান করত । ১৬৬৬ সালে ফরাসী ব্যবসায়ী ট্যাভেরনিয়ার বলেন, তিনি ঐ পুলের পাশে থাকা উঁচু উঁচু থামে দস্যুদের কাটা মাথা ঝুলিয়ে রাখতে দেখেছিলেন । আরাকানী ও মগদস্যুদের সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঠেকাতে পরবর্তীকালে মোগলরাই এই পুলের একটি স্প্যান ভেংগে দিয়েছিল বলে জানা যায়।

চার্লস ড’য়লির আঁকা ছবিতে পাগলা পুল

১৮২৪ সালে বিশপ হেবার পাগলার পুলের স্থাপত্যশৈলী দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং তাঁর বইতে চমৎকার বর্ণনা লিখেছেন। এছাড়া চার্লস ড’য়লির আঁকা ছবিতে ভাংগা পাগলার সেতুটির যে চিত্র পাওয়া যায় তাতে সেতুটি যে দৃষ্টিনন্দন ছিল; তার প্রমাণ আমরা পাই। যদিও পাগলা নদী এখন মৃত। তবুও সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত পাগলার পুলের মিনারের মত কয়েকটি পিলারের ধ্বংসাবশেষ এখনো রয়েছে। বাংলার ইতিহাসের নিরব স্বাক্ষী এই পুলটি জাতীয় প্রত্ন নির্দশন হিসেবে সংরক্ষণ করা উচিত ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য l

1890 from the book of Prof. Muntasir Mamun

অ্যাটকিনসন জানান, ‘পুলের জায়গাটিতে এক ধরনের আলো-ছায়ার খেলা দেখা যায়। দূরের ঢাকার ইউরোপিয়ান অধিবাসীদের সাদা ঘরবাড়িতে সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ে যে উজ্জ্বলতার সৃষ্টি করে, তার সঙ্গে পুল ও পুলের নিকটবর্তী ভূমির ছায়া মিলে অদ্ভুত এক ভাবপ্রবণ দৃশ্যের অবতারণা করে।’হসূত্র : ড’য়লির ঢাকা
Images Collected From Google