চটপট মুখরোচক খাবার বলতে প্রথমেই মাথায় আসে ফুচকা। পাড়ার মোড় বা স্কুলের গেটের বাইরে সব জায়গাতেই ফুচকার দাপট। বাঙালির জন্মদিন থেকে শুরু করে পুজা, ঈদ-পার্বন, পহেলা বৈশাখে ফুচকা থাকবেই। কিন্তু, এই ‘ফুচকা’ কেমন করে কোথা থেকে এলো ? এই নিয়ে আছে নানান গল্প ও বিতর্ক। কোনটি সঠিক- তা বলা অসম্ভব। তবে আমরা একটু তার ইতিহাস ঘেটে দেখতে চাই।

গ্রীক রাষ্ট্রদূত লেখক মেগাস্থিনিস এবং চায়নার বৌদ্ধ ভিক্ষু হিউয়েন সাং

সেই প্রাচীন মৌর্য আমলে গঙ্গা নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল মগধ রাজ্য। মগধের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র। সেই সময়কার গ্রীক রাষ্ট্রদূত লেখক মেগাস্থিনিস এবং চায়নার বৌদ্ধ ভিক্ষু হিউয়েন সাং বাংলার বিভিন্ন খাবারের নাম তাদের বইতে বলেছেন। তারা এদেশের পথে-ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর সময় অনেক সুস্বাদু বাঙালী খাবার খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেসকল খাবারের নামের মধ্যে তারা “ফুল্কিস নামে এক খাবারের কথা বলেছেন। যার বর্তমান নাম ফুচকা।

মহাভারতের দ্রৌপদী

আবার মহাকাব্য মহাভারতের গল্পে আছে, একদিন পঞ্চপান্ডবের মা, দ্রৌপদীকে অনুরোধ করেছিল তার ছেলের জন্য এমন একটা খাবার তৈরি করতে, যা হতে হবে- বেশ মুচমুচে এবং সুস্বাদু, যাতে টক, ঝাল, মিষ্টির স্বাদ সমানভাবে থাকবে। সেই সময় শাশুড়ির দেয়া রান্না পরীক্ষায় পাস করতে- দ্রৌপদী অনেক ভেবে চিন্তে একটি খাবার বানান, সেটার নাম ছিল ফুচকা। বর্তমান এ উপমহাদশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে এটি পরিচিত; যেমন: গোল গাপ্পা, ফুচকা ও পানিপুরি। ধীরে ধীরে ফুচকা আমাদের খাবরের ঐতিহ্যের তালিকায় ঢুকে গেছে। ছোট বড় সবাই এই খাবারটি পছন্দ করে। দেশের নানান জায়গায় নানান নামে এই ফুচকা জাত-বর্ণ-ধর্মহীন সকলের কাছে খুবই জনপ্রিয়। খাবারের যে কোন ধর্ম নেই তার প্রমান এই ফুচকা।