জুলিয়াস সিজারকে যে সিনেট কমপ্লেক্সের মধ্যে সিনেট সদস্যরা হত্যা করেছিল; সেই জায়গাটি সনাক্ত করা হয়েছে। জায়গাটি হল রোমের লারগো দা টোরে আর্জেন্টিনা, যেখানে রোমান সিনেট ভবন এবং পাশে বড় পম্পেই থিয়েটার হল। স্প্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্স কাউন্সিলের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ঐ বিশেষ স্থানটিতে হত্যাটি সংঘটিত হয়েছিল এবং এর সম্পর্কে বেশ কিছু বস্তুনিষ্ট প্রমাণও উপস্থাপন করেন। জুলিয়াস সিজার ছিলেন একজন কিংবদন্তি রোমান সম্রাট।

তিনি ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের মধ্যে অন্যতম একজন। তিনি সাম্রাজ্যের মানুষের মঙ্গলের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। সেসময় রোমের সংবিধানের ধারাগুলো ছিল অভিজাত শ্রেনীদের পক্ষে। তিনি সেই সংবিধান বাতিল করেন এবং সমস্ত ক্ষমতা তার নিজের হাতে নিয়ে নেন। অর্থাৎ রোমান সাম্রাজ্যকে তিনি একনায়কতন্ত্রের দিকে নিয়ে যান; তাই এই অপ্রতিরোধ্য নেতাকে একনায়কতন্ত্রের সূচনাকারী বলা হয়। সিনেটরদের সিদ্ধান্তের বদলে তিনি নিজেই শহরগুলিতে গভর্নর নিয়োগ দিতেন। জনকল্যাণের জন্য তিনি সিনেটের সদস্য হওয়ার অধিকার সবাইকে দেন। এতে অভিজাত শ্রেনী খুবই নাখোশ হয় এবং তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে। সিনেটের সদস্য সংখ্যা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৯০০ করেন। এই বিরুদ্ধচারীদের ষড়যন্ত্রে তিনি ৪৪ খৃষ্টপূর্বাব্দের ১৫ মার্চ গুপ্তঘাতকদের হাতে নিহত হন। আসলে গুপ্তঘাতকদের সবাই ছিল সিনেটের অভিজাত শ্রেনীর সদস্য। এমনকি তার অতি প্রিয় ব্রুটাসও ছিলেন তার হত্যাকারীদের একজন। সিজার ব্রুটাসকে দেখে বলেন- ‘ব্রুটাস, তুমিও?’ ২০০০ বছর পরে আজও গুপ্তঘাতকদের চিহ্নিত করতে “ইউ ব্রুটাস?” শব্দটি উচ্চারিত হয়। হয়ত সিরাজ উদ-দৌলা, চে-গুয়েভারা, মহাত্না গান্ধী, শেখ মুজিব, জিয়া অস্ফুটভাবে এই শব্দটি বলেছিলেন। যাইহোক, জুলিয়াস সিজারের কাছ থেকে আমরা অনেক এরকম মহামূল্যবান বাণী পেয়েছি। তাঁর অমর বাণী ছিল, “এলাম, দেখলাম, জয় করলাম।” তিনি শুধু দক্ষ সেনাপ্রধান, রাষ্টনায়ক ছিলেন না, একজন কবিও ছিলেন। তিনি কবিতা লিখতেন। ল্যাটিন গদ্য সাহিত্যে তার অবাধ বিচরণ ছিল। এছাড়া, তিনি হলেন- বিশ্বসুন্দরী ও নন্দিত রানী ক্লিওপেট্রার স্বামী। জুলিয়াস সিজারকে হত্যা করা রোমের লারগো দা টোরে আর্জেন্টিনার সিনেট কমপ্লেক্সের জায়গাটি আজ পৃথিবীর কলংকিত স্থানগুলোর মধ্যে একটি। এটি সকলের জন্য দেখার একটি ঐতিহাসিক স্থান। রোমে বেড়াতে গেলে সবাই একবার এই জায়গাটি ঘুরে আসতে পারেন।