সময়টা ১৭৫৭ এর পর। ভারতবর্ষের অন্যান্য জায়গার মতো বাংলা, উড়িষ্যা, বিহারের ক্ষমতা বাংলার নবাব থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায়। বাণিজ্য করতে এসে তারা দেশ পরিচালনার ভার নিয়ে নেয়। এখানে এসে প্রথমেই তারা নিজেদের অর্থনৈতিক ভান্ডার বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে।
বাংলা ছিল তখন সমৃদ্ধশালী একটি এলাকা। এর মাটি ছিল উর্বর। তাদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশের খেতে খাওয়া কৃষকদের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ করলো নিজেদের মুনাফার আশায়। কিন্তু ব্রিটিশদের এই অত্যাচার তারা মেনে নেয়নি। সকল অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সংগ্রাম করেছে তারা। প্রতিবারই এই প্রতিবাদের ভাষা ছিল তুখোড়। সব সময় সফলতা না আসলেও আন্দোলনগুলো ছিল বেশ সুসংবদ্ধ। পাগলপন্থী আন্দোলন তেমনি এক প্রতিবাদী আন্দোলন।
কেন এই আন্দোলনের নাম পাগলপন্থী তা নিয়ে একটা মজার গল্প আছে। এই আন্দোলন শুরু হয় ময়মনসিংহের করিম শাহ নামের একজন মুসলিম পাঠানের হাত ধরে। শেরপুর – ময়মনসিংহের যে অঞ্চলে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেখানকার বেশিরভাগই ছিলেন গারো, হাজং, ডলু, রাজবংশী নামক প্রভিতি পাহাড়ি গোষ্ঠী। করিম শাহের লোকজন নিজেদের ‘ভাই সাহেব’ বলে ডাকতো। এই সকল পাহাড়ি মানুষ এবং করিম শাহের ভাষা সমতলের মানুষ বুঝতে পারতো না। তাদের কাছে এগুলো পাগলের প্রলাপ মনে হতো। সেই থেকে এই আন্দোলন পাগলপন্থী আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি পায়।
করিম শাহ তার গুরু মজনু শাহ শাহ দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। মজনু শাহ সুফী ও হিন্দু সন্ন্যাস ভাবাপন্ন ছিলেন। করিম শাহও ছিলেন মনুভব হৃদয়ের অধিকারী। তিনি দয়ালু ও সুদক্ষ সংগঠক ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন সকলেই এক বিধাতার সৃষ্টি। তার মধ্যে এক ধরণের সুফিয়ান মনোভাব ছিল। তার অনুসারীদের মাঝে এক ধরণের কিংবদন্তি ছিল যে, তিনি ভবিষ্যৎ বাণী করতে পারতেন, ভাগ্য উন্নয়ন ও রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রাখতেন। এই কারণেই হাজার হাজার মানুষ করিম শাহের অনুসারী হয়। করিম শাহ এই মানুষগুলোকে সাথে নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৮১৩ সালে করিম শাহের মৃত্যুর পর তার ছেলে টিপু শাহের হাতে এই নেতৃত্বের ভার আসে।
তার নেতৃত্বে এই আন্দোলন সরাসরি জমিদার ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ আন্দোলন ছিল। টিপুর বিদ্রোহের প্রধান কারণ ছিল উত্তর ময়মনসিংহে রায়তদের ওপর জমিদারদের অত্যাচার। ১৮২০ সালে শেরপুর জমিদারি অংশীদারদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়সাপেক্ষ মোকদ্দমা চলতে থাকে । এছাড়া ইঙ্গ-বার্মা যুদ্ধে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কোম্পানি জমিদারদের নিকট থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা নেয়। বাড়তি বোঝা পোষানোর জন্য জমিদারেরা আরও বেশি করের বোঝা রায়তদের ওপর চাপায় ও তা জোরপূর্বক আদায় করতে থাকে। জনগণ এ অন্যায় কর ধার্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে।
করিম শাহ তার গুরু মজনু শাহ শাহ দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। মজনু শাহ সুফী ও হিন্দু সন্ন্যাস ভাবাপন্ন ছিলেন। করিম শাহও ছিলেন মনুভব হৃদয়ের অধিকারী। তিনি দয়ালু ও সুদক্ষ সংগঠক ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন সকলেই এক বিধাতার সৃষ্টি। তার মধ্যে এক ধরণের সুফিয়ান মনোভাব ছিল। তার অনুসারীদের মাঝে এক ধরণের কিংবদন্তি ছিল যে, তিনি ভবিষ্যৎ বাণী করতে পারতেন, ভাগ্য উন্নয়ন ও রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রাখতেন। এই কারণেই হাজার হাজার মানুষ করিম শাহের অনুসারী হয়। করিম শাহ এই মানুষগুলোকে সাথে নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৮১৩ সালে করিম শাহের মৃত্যুর পর তার ছেলে টিপু শাহের হাতে এই নেতৃত্বের ভার আসে।
তার নেতৃত্বে এই আন্দোলন সরাসরি জমিদার ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ আন্দোলন ছিল। টিপুর বিদ্রোহের প্রধান কারণ ছিল উত্তর ময়মনসিংহে রায়তদের ওপর জমিদারদের অত্যাচার। ১৮২০ সালে শেরপুর জমিদারি অংশীদারদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়সাপেক্ষ মোকদ্দমা চলতে থাকে । এছাড়া ইঙ্গ-বার্মা যুদ্ধে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কোম্পানি জমিদারদের নিকট থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা নেয়। বাড়তি বোঝা পোষানোর জন্য জমিদারেরা আরও বেশি করের বোঝা রায়তদের ওপর চাপায় ও তা জোরপূর্বক আদায় করতে থাকে। জনগণ এ অন্যায় কর ধার্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে।