রাশিদুন খিলাফতের সময়কাল ছিলো ৬৬১ সালে চতুর্থ খলিফা আলীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। এর পরই প্রতিষ্ঠিত হয় উমাইয়াদ খিলাফত। আসলে উমাইয়াদ বংশ নবী মুহম্মদের বংশেরই একটি শাখা এবং দুই শাখার মধ্যে শুরু থেকেই বিরোধ ছিলো। কিন্তু নবী মুহম্মদের সময় সাম্য ও শান্তি অনেকাংশেই বজায় ছিলো। তার মৃত্যুর পর প্রথম তিন খলিফার সময় তেমন কোনো বিবাদ সৃষ্টি না হলেও চতুর্থ খলিফা আলীর সময় এই বিরোধ চরমে ওঠে। তৃতীয় খলিফা উসমানও ছিলেন উমাইয়া বংশেরই অন্তর্গত। সে হিসেবে খিলাফতের ধারাবাহিকতায় উত্তরাধিকারের প্রশ্ন তৈরী হয়। অন্য দিকে আলীর সমর্থনকারীরা আলীকেই যোগ্য উত্তরাধিকারী মনে করতেন। ফলে মুসলিম উম্মাহ তো দুই ভাগে বিভক্ত হয়েই যায়, এমনকি আলীর সমর্থনকারীরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন, যাদের মধ্যে এক ভাগ আলীর সমর্থন ত্যাগ করে চলে যায়। ইতিহাসে এই ভাগকে ‘খারিজি’ বা ‘আশ-শুরাহ’ বলে অভিহিত করা হয়। এমনই একজন বিদ্রোহী খারিজি আব্দুর রহমান ইবনে মুলজাম আলীকে হত্যা করেন। এই ঘটনার পর আলীর বড় ছেলে হাসান খলিফা হলে বংশানুক্রমে উত্তরাধিকারের এই পুনরাবৃত্তি আলীর বিরোধীরা মেনে নিতে পারলেন না। এতে সংঘটিত যুদ্ধ-বিগ্রহে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। তাই হাসান মানুষের সুরক্ষা প্রদানের খাতিরে সিরিয়ার গভর্নর মুয়াবিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ চুক্তি অনুযায়ী, মুয়াবিয়া নিজেও উত্তরাধিকারের পুনরাবৃত্তি না করবার জন্য প্রতিশ্রুত হন এবং এই মর্মে হাসান তার খিলাফত হস্তান্তর করেন মুয়াবিয়ার কাছে। তবে মুয়াবিয়া পরবর্তীতে চুক্তিভঙ্গ করে উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিরোধ চরমে পৌঁছলে হাসান ও তার ছোট ভাই হোসেনের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যান মুয়াবিয়ার ছেলে ইয়াজিদ। যদিও ইসলাম ধর্মে উমাইয়াদ খিলাফতকে অত্যন্ত ঘৃণার চোখে দেখা হয়, কিন্তু সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক মুসলিম স্থাপত্যগুলো আমরা এ সময়ই দেখতে পেয়েছি। রোমান ও গ্রীক স্থাপত্যে প্রভাবিত এই স্থাপত্যগুলো প্রথম সেক্যুলার মুসলিম সমাজের সবচেয়ে আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বে স্বীকৃত ও প্রশংসিত।
ডোম অফ দ্য রক বা কুব্বাত আস–সাখরা
ইসলামের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান হলো কুব্বাত আস-সাখরা বা ডোম অফ দ্য রক। অষ্টভুজাকৃতির এই গম্বুজবিশিষ্ট স্থাপনাটি ৬৯১ সালে তৈরী করেছিলেন পঞ্চম উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিক। এটি হারাম আল-শরীফ বা টেম্পল মাউন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয় স্থাপনা। স্থাপনাটির গম্বুজের ঠিক নিচে রয়েছে সেই তাৎপর্যপূর্ণ পাথর, যাতে ভর দিয়ে নবী মুহাম্মদ বোরাক নামের ডানাওয়ালা ঘোড়ার পিঠে চড়ে মেরাজে গিয়েছিলেন আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে। এই পাথরটিকেই এখানকার সবচেয়ে পবিত্র বস্তু বলে মানা হয়। ইহুদীরা এই পাথরকে বলে থাকেন ‘ফাউন্ডেশন স্টোন’।
রোমানরা সেকেন্ড টেম্পল বা দ্বিতীয় বাইতুল মুকাদ্দাস ধ্বংস করে জুপিটারের মন্দির বানিয়েছিলো এই একই জায়গায়, যেখানে বর্তমানে ডোম অফ দ্য রক অবস্থিত। সেই হিসেবে এই ডোম অফ দ্য রক ইসলাম, খ্রিস্টান, ইহুদী ও রোমান –এই চারটি ধর্মের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান।
আল–আকসা মসজিদ
হারাম আল-শরীফের আরেকটি ভবন, যা আল-আকসা মসজিদ নামে পরিচিত, জেরুজালেমের প্রধান মসজিদ। খলিফা উমর সর্বপ্রথম এই জায়গায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফা আল-ওয়ালিদ এই জায়গায় আল-আকসা মসজিদ তৈরী করেন, যদিও মসজিদটি ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। আব্বাসীয় খিলাফতের সময় মসজিদটি পুনঃনির্মিত হয়।
দামেস্কের মহান উমাইয়া মসজিদ
মুয়াবিয়ার শাসনামল থেকেই উমাইয়া খিলাফতের রাজধানী ছিলো দামেস্ক, যা মুসলিম আরবদের দ্বারা ৬৩৬ সালে বিজিত হয়েছিলো। বিজয়ের পর থেকে আরবীয়রা মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে সাথে শহরটিকে তাদের প্রথম মহান শহরগুলোর একটিতে পরিণত করেছিলো। অষ্টম শতাব্দীর প্রথম দিকের খলিফা আল-ওয়ালিদ শহরের খ্রিস্টান বাসিন্দাদের জন্য অত্যন্ত যত্নসহকারে রাজধানীর কেন্দ্রে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। একেই বলা হয় ‘দ্য গ্রেট মস্ক অফ দামাস্কাস’।
রোমান মন্দির ও সেইন্ট জন ব্যাপ্টিস্টের খ্রিস্টান গির্জাসহ পূর্ববর্তী ধর্মগুলোর জন্য নির্মিত উপাসনালয়ের স্তরগুলোতে দামেস্কের মহান মসজিদটি নির্মিত হয়েছিলো। রোমান মন্দিরের দেয়াল এবং গির্জার ধ্বংসাবশেষ মসজিদটিতে পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছিলো। মসজিদটিতে একটি নামাজের হল এবং একটি বড় খোলা উঠান রয়েছে, যার সাথে নামাজের আগে ওযুর জন্য রয়েছে একটি ফোয়ারা। উঠানে একটি কোষাগার এবং ‘ডোম অফ দ্য ক্লক’ বা ‘ঘড়ির গম্বুজ’ নামে একটি কাঠামো রয়েছে। মসজিদটির মিনারগুলি পূর্ববর্তী রোমান-বাইজেন্টাইন টাওয়ারগুলোর উপর নির্মিত হয়েছিলো এবং সম্ভবত এটি সিরিয়ার প্রাচীনতম মিনার। মসজিদটিতে ব্যবহৃত সোনালি মোজাইক এবং উদ্ভিদের চমৎকার উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপত্য ভূমধ্যসাগরীয় শৈল্পিক সংস্কৃতির প্রভাবকেই স্পষ্ট করে তোলে।
কুসায়র আল–মুশাত্তা
আরবীতে ‘খলিফা’ শব্দের অর্থ ‘উত্তরাধিকারী’। আর ‘নবী মুহাম্মদের উত্তরসূরি’ নিশ্চিতভাবেই ইসলামী বিশ্বের সর্বোচ্চ খেতাব। সে হিসেবে খলিফা উপাধিতে কিছু দায়িত্ব ছিলো। খলিফারা মুহাম্মদের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক কাজ ছাড়াও একই সাথে ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা করা হতো।
অল্প কিছু সংখ্যক উমাইয়া শাসক বাদে বাকি সবাই-ই তাদের পূর্বসূরিদের তুলনায় অনেক বেশি ধর্মনিরপেক্ষ জীবনযাপন শুরু করেছিলেন। নতুন ধরনের শহুরে জীবনে মুসলমানদের অভিযোজনের কারণেও হয়তো এই পরিবর্তন এতো প্রকট হয়েছিলো। মরুভূমিতে যাযাবর জীবনযাপনে অভ্যস্ত আরবীয়রা হঠাৎ করেই বিজিত মহান শহরগুলোতে নতুনভাবে বাঁচার সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন, যা ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামিক শিল্পে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলো। এ সময় প্রথমবারের মতো খলিফারা শৈল্পিক পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্যোগী হন এবং তাদের নতুন প্রাসাদ ও বাসস্থানগুলো শৈল্পিক উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত হয়। এমনই একটি মরূপ্রাসাদ ছিলো জর্ডানে অবস্থিত কুসায়র আল-মুশাত্তা।
ইসলামিক পাথর এবং ফুল, প্রাণী ও জ্যামিতিক মোটিফ খোদাইকৃত প্লাস্টার কাজের একটি অনন্য নিদর্শন এই আল-মুশাত্তা। প্রাসাদটির ইটের কারুকার্যে ও নকশায় বাইজেন্টাইন এবং সাসানীয় প্রভাব রয়েছে। এর অনেক আলংকারিক বৈশিষ্ট্যে রয়েছে পার্সিয়ান ও সাসানীয় পৌরাণিক প্রাণী ও মিশরীয় খ্রিস্টান মূর্তিশিল্প, যা নির্দেশ করে যে, প্রাসাদের কারিগরদেরকে পারস্য ও মিশর থেকে আনা হয়েছিলো।
আল-মুশাত্তার সবচেয়ে সুন্দর বৈশিষ্ট্যটি হলো দক্ষিণের দিকের ফেসাড বা প্রাসাদের সম্মুখভাগ, যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগে অটোমান সুলতান আব্দুল হামিদ কায়সার উইলহেমকে উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন। বর্তমানে বার্লিনের পার্গ্যামন জাদুঘরে চমৎকার প্যাটার্নের এই ফ্যাসাডটি রাখা আছে। এর ত্রিভুজাকার প্যানেলের জিগজ্যাগ প্যাটার্নের প্রতিটি অংশ সিংহ, মহিষ, তোতা, লতা-পাতা, প্রাণী ও মানুষ খোদাইকৃত পৃষ্ঠ দ্বারা বেষ্টিত একটি রোজেট বা নকশা তৈরী করে। প্যানেলটি প্রায় তিন মিটার উঁচু এবং আড়াই মিটার চওড়া।
কুসায়র আম্রা
আগেই বলা হয়েছে, খলিফা আল ওয়ালিদের মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরিদের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী শৈল্পিক স্থাপত্য ছিলো ধর্মনিরপেক্ষ মরুভূমির দুর্গ বা প্রাসাদ নির্মাণ, যার মধ্যে জর্ডানের কুসায়র আম্রা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই মরূপ্রাসাদগুলো উমাইয়া খিলাফতের কর্তৃত্ব ও মর্যাদা প্রকাশ করতো।
কুসায়র আম্রা নির্মিত হয়েছিলো দ্বিতীয় আল ওয়ালিদের জন্য। ইসলামী ভবন-সজ্জা এবং উমাইয়া সংস্কৃতির এক অনন্য উদাহরণ এই মরূপ্রাসাদ। ভবনের অভ্যন্তরের দেয়াল ও ছাদ স্নানরত নারীদের চিত্রণ, রাজকীয় পোর্ট্রেইটের একটি সিরিজ, শিকারের দৃশ্য এবং রাশিচক্র সহ একটি উল্লেখযোগ্য সিরিজ-ফ্রেস্কো দিয়ে সজ্জিত। চিত্রশৈলী এবং বাথহাউসের নকশা সম্পূর্ণরূপে বাইজেন্টাইন ধারা থেকে অনুপ্রাণিত।
কুসায়র হিশাম
কুসায়র হিশাম বা খিরবাত আল মাফজার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক ইসলামিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং পশ্চিম তীর এলাকায় রোমান ও বাইজেন্টাইন ধারায় প্রভাবিত কয়েকটি জীবিত পুরাকীর্তিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ফিলিস্তিনি শহর জেরিকোর ঠিক বাইরে অবস্থিত এই মরূপ্রাসাদ কমপ্লেক্সটি উমাইয়া রাজবংশের শাসকদের জীবন সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়। সেই সাথে এই এলাকার প্রাথমিক ইসলামিক শিল্প ও স্থাপত্যের বিবর্তনের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়।
বিশ শতাব্দীর ঐতিহাসিকদের ধারণা অনুযায়ী, প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিলো দশম উমাইয়া খলিফা হিশাম ইবনে আব্দুল মালিকের শাসনামলে, যিনি ৭২৪ থেকে ৭৪৩ সাল পর্যন্ত শাসন করেছিলেন। অন্যরা অবশ্য দাবি করেন যে, প্রাসাদটির মালিক হিশামের ভাগ্নে আল ওয়ালিদ ইবনে ইয়াজিদ বা দ্বিতীয় আল ওয়ালিদ। চাচার মৃত্যুর পর তিনি খেলাফত গ্রহণ করেন এবং ৭৪৩ থেকে ৭৪৪ সালে তার হত্যাকান্ডের আগ পর্যন্ত শাসন করেন। দ্বিতীয় আল ওয়ালিদ তার বিলাসবহুল জীবনধারা এবং ব্যয়বহুল রুচির জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
হিশামের প্রাসাদটির সমৃদ্ধ সজ্জা, ভাস্কর্য ও জাঁকজমকপূর্ণ সুন্দর মোজাইকগুলো উমাইয়াদের সম্পদ এবং ক্ষমতাকে প্রতিফলিত করে। প্রাসাদের দেয়াল-চিত্রগুলো প্রাক-ইসলামিক সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের চিত্রকলার একটি অমূল্য রেকর্ড।
কুসায়র হিশামের প্রবেশপথ থেকে কিছুটা দূরেই একটি জ্যামিতিক প্যাটার্নের জটিলভাবে খোদাই করা পাথরের রোজেট পরিলক্ষিত হয়, যার বৃত্তের ভেতর চমৎকার একটি তারকা বিদ্যমান। ধারণা করা হয় এটিকে প্রাসাদের একটি বিশেষ জানালা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। চমৎকার এই রোজেটটি প্রাসাদের প্রবেশপথের সমস্ত মনোযোগকে ধরে রাখে।
উমাইয়া খিলাফতের মুদ্রা
বিশাল বিশাল স্থাপত্য ও প্রাসাদ-দুর্গের বাইরেও ইসলামিক শিল্পে উমাইয়াদের রাজবংশীয় শাসনামলের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয় মুদ্রা উৎপাদনের মাধ্যমে। উমাইয়া খলিফারা নিজেদের পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশের অনুভূতি গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন এবং তা সার্বজনীনভাবে উপস্থাপনের জন্য মুদ্রা প্রণয়নকে উপযুক্ত উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
স্বতন্ত্র ইসলামিক অ্যানিকোনিক ও এপিগ্রাফিক মুদ্রাগুলো ছিলো ৬৯৬ সালের পর উমাইয়াদের একটি অন্যতম উদ্ভাবন। ৬৯৭ থেকে ৬৯৯ সালে আব্দুল মালিকের মুদ্রা সংস্কার পর্যন্ত টাকশাল কর্মীরা তাদের পূর্ববর্তী শাসকদের জন্য মোটামুটি একই ধরনের মুদ্রা তৈরী করতে থাকে। আরব-সাসানীয় মুদ্রা ছিলো এমন একটি মুদ্রা, যার নকশা সাসানীয় মুদ্রার নকশার মতো হলেও তা ছিলো আরবীতে যুক্ত শিলালিপি সহ।
৮ম শতাব্দীর শুরুতে, ক্রমবর্ধমান ইসলামিক এপিগ্রাফিক মুদ্রাগুলো আরবীয় অভিজাতদের, বিশেষ করে খলিফার হস্তক্ষেপের বিষয়টিকে স্পষ্ট করেছিলো। এই মুদ্রা উৎপাদনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো খলিফারা এমন এক উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা শৈল্পিক পৃষ্ঠপোষকতার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। এই সময় থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে নিজেদের বৈশিষ্ট্যের তুলনায় নিজেদের নির্দেশাবলিকেই বিশেষভাবে প্রতিনিধিত্বকারী মুদ্রা তৈরী শুরু হয়েছিলো।
দ্য গ্রেট মস্ক অফ কর্ডোবা
ইউরোপে উমাইয়া খিলাফতের উৎকৃষ্ট নিদর্শন হলো দ্য গ্রেট মস্ক অফ কর্ডোবা। ৯২৯ সালে যখন তৃতীয় আব্দুল রহমান নিজেকে নবীর একমাত্র সত্যিকারের উত্তরসূরি ঘোষণা করলেন, তখন আল-আন্দালুস হয়ে উঠেছিলো ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শৈল্পিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র। উমাইয়াদের দামেস্কের পূর্বপুরুষদের শৈল্পিক ও সাংস্কৃতিক শোষণ অনুসরণ করে তারা ইতিমধ্যেই বিদ্যমান স্প্যানিশ প্রাক-ইসলামিক দেশপ্রেমকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং নিজস্ব চাক্ষুষ ও প্রতিমাগত পরিচয় তৈরী করেছেন।
আন্দালুসীয় উমাইয়ারা নিজেদেরকে হেলেনিস্টিক যুগ থেকে সবচেয়ে শিক্ষিত শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেললেন এবং রোমান ও হিস্পানো-ভিসিগোথের উত্তরাধিকারী বলে দাবি করলেন। তারা সেখানে বিজ্ঞান ও শিল্পকলা চর্চা, জ্ঞানী ও শিক্ষিতদের চারপাশে বিচরণ এবং ভবিষ্যৎ রাজকুমারদের শিক্ষার যত্ন নেয়া শুরু করেছিলেন। এ সবই আন্দালুসের অনন্য নিদর্শন মাদিনাত আল-জাহরার প্রাসাদ শহর এবং কর্ডোবার মহান মসজিদ তৈরীতে শক্তিশালী ভূমিলা পালন করেছে।
কর্ডোবার মহান মসজিদের স্থানে আগে ছিলো রোমান দেবতা জানুসের মন্দির এবং ৫৭২ সালে ভিসিগোথ আক্রমণ করে এটিকে গির্জায় রূপান্তরিত করা হয়েছিলো। নির্বাসিত উমাইয়া খিলাফতের বংশধরেরা স্পেনে আসার পর তারা ভবনটিকে সম্পূর্ণরূপে পুনঃনির্মাণ করেন। ৭৮৮ সালে স্পেনের উমাইয়া খিলাফতের প্রথম শাসক আব্দুল রহমান মারা যাওয়ার পর ভবনটি পরবর্তী দুই শতাব্দী ধরে সম্প্রসারিত হয়।
রেফারেন্স:
- https://www.thecollector.com/art-of-umayyad-caliphate/
- https://jordan-travel.com/qasr-al-mshatta-desert-castles-in-jordan/
- https://www.metmuseum.org/exhibitions/listings/2012/byzantium-and-islam/blog/where-in-the-world/posts/qusayr-amra
- https://www.ancient-origins.net/artifacts-other-artifacts/hishams-palace-0017407
- https://www.khanacademy.org/humanities/art-islam/chronological-periods-islamic/islamic-art-early/a/the-great-mosque-of-cordoba
- https://brahmanbaria24.com/2012-02-11-05-43-29/%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%86%E0%A6%B8-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE-%E0%A6%A1%E0%A7%8B%E0%A6%AE-%E0%A6%85%E0%A6%AB/
- https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE_%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6#:~:text=%E0%A6%89%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%20%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6%2C%20%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%20%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9F%20%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6,%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%9A%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%20%E0%A6%AA%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A5%A4