৮ই জানুয়ারি ১৬৪২। মৃত্যু হল পরীক্ষানির্ভর আধুনিক বিজ্ঞানের জনক গ্যালিলিও গ্যালিলির। এই মৃত্যু নিয়ে বলতে গেলে পিছিয়ে যেতে হয় বেশ কয়েক বছর আগের একটি বিশেষ দিনে। ১৬৩৩ সালের ২২শে জুন। সপ্তদশ শতাব্দীর এই দিনটি ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের চরম সত্যকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে আত্মসমর্পণ করার দিন। ২২শে জুন রোমের মিনার্ভা কনভেন্ট রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান উপাসনা গৃহ, সেখানে ধর্মযাজকের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং পোপ। প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলা বিচারের আজ শেষ পর্ব। সকলের সামনে উপস্থিত করা হলে বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এক দেহ, যিনি চোখে ভালো ভাবে দেখতে পান না, পরনে চটের পোশাক, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ – “ধর্মশাস্ত্র বিরোধী কথা প্রচার।”

ফ্লোরেন্সের উফিজির বাইরে অবস্থিত গ্যালিলিওর মূর্তি

পোপ তাঁর রায় ঘোষণার পূর্বে অপরাধী পবিত্র ধর্মস্থলে তাঁর অপরাধ স্বীকার করবেন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া বৃদ্ধ বলতে শুরু করলেন, “আমি গ্যালিলিও গ্যালিলেই ফ্লোরেন্সে প্রয়াত ভিনসেনজিও গ্যালিলেইয়ের পুত্র, বয়স ৭০। ধর্মমত বিরোধী নৈতিক বিচ্যুতির অপরাধের বিচারের জন্য আমাকে আপনাদের সম্মুখে সশরীরে হাজির করা হয়েছে। আমার চোখের সামনে আমি দেখছি খ্রিস্টের মহান উপদেশবলী। আমি তা স্পর্শ করে  আপনাদের সামনে নতজানু হয়ে শপথ করছি রোমের পবিত্র ক্যাথলিক এবং দেবতায়ন গির্জা যে অভিমত পোষণ করেন, শিক্ষা দেন ও প্রচার করেন; আমি তার প্রতিটি কথা সর্বদা বিশ্বাস করে এসেছি, ভবিষ্যতেও তা করে যাব। যেহেতু আমাকে এই পবিত্র স্থান থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ‘সূর্যই কেন্দ্র এবং তা স্থির’ এই ভ্রান্ত ধারণা আমি যেন ত্যাগ করি এবং কোনোভাবেই আমি যেন এই মিথ্যা ধারণা মনের মধ্যে না রেখে কাউকে না শেখাই বা প্রচার করি। এই ভ্রান্ত মতবাদ যে ধর্মশাস্ত্রের বিরোধী সে কথা আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার পরও আমি যেহেতু একটি বই লিখে ছাপিয়ে বলেছি সূর্যই বিশ্বের কেন্দ্র এবং তা স্থির, পৃথিবী কেন্দ্র নয় তা গতিশীল, এই কথা বলে আমি তো সেই একই নিন্দিত ধারণাই দিয়েছি এবং কোনো সমাধানের কথা না বলে বেশ জোরালোভাবে আমার মতের স্বপক্ষে যুক্তি খাড়া করেছি। তার থেকে একথা দাঁড়ায়, সূর্য বিশ্বের কেন্দ্র এবং তা স্থির এইমতেই আমার বিশ্বাস বরাবরই ছিল তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই, এই জন্য আমাকে ন্যায্যতই প্রচণ্ড ধর্মবিরোধী হিসেবে ভাবা হয়েছে। আপনাদের সকল সম্মানীয় যাজকদের এবং প্রত্যেক ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের মন থেকে এই ভয়ঙ্কর সংশয় দূর করে দিতে চাই। এই সংশয়ের কথা আমাকে যথার্থভাবে বোঝানো হয়েছে। সেজন্য আমি অন্তর থেকে দ্বিধাহীনচিত্তে, গভীর বিশ্বাসে জানাচ্ছি, ঐরকম অধর্মীয়, অশাস্ত্রীয় ভ্রান্ত ধারণা এবং পবিত্র উপাসনাস্থল গির্জার বিরোধী যেকোনো কথা ও সম্প্রদায়কে আমি ঘৃণা করি, ধিক্কার দিই এবং শপথ করে বলছি আমি সেসব পরিত্যাগ করছি। আমি এও শপথ করছি এমন কোনো কথা যা মানুষের মনে সন্দেহের উদ্রেক করতে পারে, তা লিখিত ভাবেই হোক বা মৌখিক ভাবেই হোক; কোনোভাবেই ভবিষ্যতে আর বলবও না, তা প্রতিষ্ঠা করার কথাও ভাববও না; এমনকি আমি ধর্মবিদ্বেষী কথা জানলে বা কাউকে এ ব্যাপারে সন্দেহ করলে আমি এই ধর্মস্থলে তাকে প্রকাশ্যে অভিযুক্ত করব….”

অনেকে বলেন শপথগ্রহণ শেষে তিনি নাকি বিড়বিড় করে বলেছিলেন “তবুও ইহা ঘুরিতেছে।” এটি একটি গল্প মাত্র। তাঁর কাছে নতিস্বীকার করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না, তাঁর স্বদেশীয় বন্ধু ব্রুনোর চরম পরিণতিই তাঁকে এই পথ নিতে বাধ্য করেছে বলে মনে করা যেতে পারে। গ্যালিলিওর শপথপত্র ইউরোপের প্রত্যেকটি গির্জায় পাঠানো, বিশেষ অধিবেশনে পাঠ করা হয়েছিল।

১৫৬৪ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ব্রুনোর স্বদেশে জন্মগ্রহণ করা এই ব্যক্তি প্রথম দিকে পৃথিবীর ঘূর্ণন সম্পর্কিত সূর্য কেন্দ্রিক বিশ্বের বিষয় নিয়ে আগ্রহ দেখাননি। যদিও পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি প্রথম থেকেই কোপারনিকাসপন্থী। তিনি শুরুতে ব্যস্ত ছিলেন গির্জার অভ্যন্তরে ঝোলানো প্রদীপ দেখে দোলকের সূত্র আবিষ্কারে। একের পর এক কাজ করে চলেছেন বলবিদ্যার নানা বিষয়ের উপর। বলা যেতে পারে, তিনিই প্রথম হাতে-কলমে পরীক্ষার মাধ্যমে আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম দিয়েছেন। কোপার্নিকাসকে নিয়ে তিনি মাথা ঘামাতে শুরু করেন দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কারের পর। এই আবিষ্কারের কৃতিত্ব গ্যালিলিওকে এককভাবে দেওয়া যায় না। গ্যালিলিওর কাছে খবর ছিল ওলন্দাজ এক চশমা বিক্রেতা এমন কিছু একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন যাতে করে দূরের জিনিসকে খুব বড় এবং কাছে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সেই শুনে তিনি আলোকবিজ্ঞানের নীতিগুলি অধ্যয়ন করেন এবং অনুরূপ একটি যন্ত্র বানিয়ে ফেলেন। তিনি এই যন্ত্র রাতের আকাশের দিকে তাক করতেই যা দেখলেন তাতে বিশ্বজগতে অ্যারিস্টটল কথিত প্রশান্ত ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। তিনি দেখতে পেলেন কোপার্নিকাসের বলা জগৎ ব্যবস্থার প্রতিরূপ, যে কথা বলার জন্য ব্রুনো ছুটে বেড়িয়েছেন গোটা ইউরোপ। গ্যালিলিও দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মাটিতে টেনে নামিয়ে আনলেন সেইসব “স্বর্গীয় গোলকদের।”

নিজের আবিষ্কৃত দূরবীক্ষণ যন্ত্রের প্রদর্শন

পর্যবেক্ষণ করেন চন্দ্রপৃষ্ঠে অসমতা, বৃহস্পতির চাঁদ, সৌরকলঙ্ক সহ নানা বিষয়। লিপিবদ্ধ করেন ‘Sidereus Nuncius’ গ্রন্থে।

গোঁড়া অ্যারিস্টটলপন্থীরা অবশ্য এই দুরবীক্ষণে চোখ রাখতে রাজী হননি। ১৬১৩ সালে সৌরকলঙ্কের পত্রবলী প্রকাশিত হলে কোপার্নিকাস বিরোধী দল এই গ্রন্থে সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদের প্রতি সমর্থন সম্পর্কে পোপের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১৬১৫ সালে পোপ পঞ্চম পল গ্যালিলিওকে সরকারিভাবে রোমে ডেকে পাঠান তাঁর আবিষ্কার ও মতবাদ নিয়ে ব্যাখ্যা করার। এর ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ১৬১৬ সালে সংস্থা কর্তৃক পৃথিবীর গতি সম্পর্কে সমস্ত আলোচনা ও রচনা নিষিদ্ধ হয়, নিষিদ্ধ হয় কোপার্নিকাসের সেই বিখ্যাত গ্রন্থ। গ্যালিলিওকে সাবধান করে দেওয়া হয় এ ব্যাপারে আর মুখ না খুলতে। তিনি প্রকাশ্যে আর এগোলেন না, কিন্তু গোপনে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন কোপার্নিকাসের ও টলেমি মতবাদ সম্পর্কে বিতর্কের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করতে। অবশেষে ১৬৩২ সালে তিনি প্রকাশ করেন’ Dialoge concerning the two Chief systems of the world, the ptolematic and the copernican’ বইটি। তিনি অভিনব উপায়ে বইটিতে সরাসরি আলোচনা করার পরিবর্তে তিনটি চরিত্রের অবতারণা করেন যথাক্রমে স্যালভিয়াতি (কোপার্নিকাসপন্থী), সাগ্রেদো (অ্যারিস্টটলপন্থী), সিমপ্লিসিও (নিরপেক্ষ শ্রোতা তবে কোপার্নিকাস মতবাদে ঝোঁক)। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই অ্যারিস্টটলপন্থীরা তৎপর হয়ে ওঠে। তারা তৎকালীন পোপকেও বোঝাতে সক্ষম হয় যে, এতে গ্যালিলিও ১৬১৬ সালের নিষেধাজ্ঞাই শুধু অমান্য করেননি; এতে তিনি সিমপ্লিসিও নামে চরিত্র অঙ্কন করেছেন যেটি আর কেউ নন স্বয়ং পোপ। ইতিমধ্যে তৎকালীন পোপের সাথে গ্যালিলিওর আগে থেকেই সৌর কলঙ্ক আবিষ্কার নিয়ে বসচা ছিল। সেই বচসাই পর্যবসিত হল প্রতিহিংসায়। ১৬৩৩ সালের জুন মাসে তাঁর বিচার আরম্ভ হল।

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ক্রিস্টিয়ানো বান্টি দ্বারা অঙ্কিত চিত্র: গ্যালিলিওকে রোমান কর্তৃপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদ

বিচারপর্ব শেষে তাঁকে প্রথমে তাকে আজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরবর্তীতে চার্চের আদেশে আজীবন নজরবন্দী থাকেন। মৃত্যুর পরও চার্চ কর্তৃপক্ষ থেমে থাকেননি। অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে তাঁর মরদেহ গোপন স্থানে সমাধি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এই শর্তে যে তাতে কোনো স্মৃতিফলক রাখা চলবে না। তাঁর পরিবারের কাছ থেকে অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি আটক করে রাখা হয়েছিল। এতকিছুর পরও সূর্যকে পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরাতে পারেননি চার্চ কর্তৃপক্ষ। বর্তমান সময়ে এশিয়াজুড়ে মৌলবাদীদের বাড়বাড়ন্ত দেখে যাঁরা উদ্বিগ্ন, তাঁদের ভেবে দেখা উচিত পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বনিকৃষ্ট ও ভয়ঙ্কর মৌলবাদ হল খ্রিস্টান মৌলবাদ যা আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে; ভারতীয় উপমহাদেশে মৌলবাদের কফিনে শেষ পেরেক গাঁথবেই সদা গতিশীল বিজ্ঞান।

লেখা – Krantikari Subhasish

ডিজাইন – Raja

শিউলি ফুলের বিষণ্ণতার গল্প

শরতের রাতের সৌন্দর্য বলতে যে ফুলকে বোঝানো হয়, তা হলো শিউলি ফুল। তবে এ সৌন্দর্য আনন্দের নয়, বেদনার প্রতীক। শিউলি ফুলের নাকি সব সময়ই মন খারাপ থাকে। সূর্যের ওপর তার এক রাশ অভিমান। তাই তো রাতের আঁধারেই নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পছন্দ করে সে এবং সূর্য ওঠার আগেই লুকিয়ে ঝরে পড়ে।...

মিশরীয় সিন্ডারেলা

মিশরে তখন ১৬ তম রাজবংশের যুগ। পার্সিয়ান আক্রমনের সম্ভাবনায় দিন গুণছে মিশর। সে সময় মিশরীয় সৈন্যদের তুলনায় গ্রীক সৈন্যদের কদর ছিলো অনেক বেশি। কারণ গ্রীক সৈন্যদের দক্ষতার গল্প প্রচলিত ছিলো বিশ্ব জুড়ে। এমন সময় ফারাও এপ্রিয়েজকে হত্যা করে মিশরের নতুন ফারাও হলেন রাজবংশের...

প্রাচীন সভ্যতায় ঈশ্বরের ধারণার উৎপত্তি ও সংখ্যাগত অবনমন

যে কোন সভ্যতার প্রাচীন ইতিহাস ঘাটলেই আমরা বহু ঈশ্বর বা গডের অস্তিত্বের কথা জানতে পারি। তবে আজকের প্রেক্ষাপটে ঈশ্বর সম্পর্কে এ ধারণা অনেকটাই পাল্টেছে। কেননা বর্তমান বিশ্বে বহু ধর্মমত এখনও বিদ্যমান থাকলেও ঈশ্বরের সংখ্যার বিষয়টি কমে এসেছে। একেশ্বরবাদ কিংবা বহুঈশ্বরবাদী...

হিন্দু দেব-দেবীর ধারণা প্রাচীন মধ্য এশীয় বিশ্বাসেরই প্রতিরূপ নয় তো?

সিংহবাহনের ওপর এক হাতে চাঁদ ও এক হাতে সূর্য নিয়ে চার হাতবিশিষ্ট এক দেবী যুদ্ধবাজ ভঙ্গিমায় আসীন নিজের সন্তানদের প্রতিরক্ষার জন্য। খুব পরিচিত লাগছে তাই না? নিশ্চয়ই দেবী দুর্গার সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন। কিন্তু এ তো দুর্গা নয়, ব্যাক্ট্রিয়ান মাতৃদেবী ‘নানায়াহ’ বা ‘ননা’...

মহাবীর কর্ণের অন্তিম যাত্রা

সূর্যদেব অস্তে চলে যাচ্ছেন। গোধূলিবেলার লালচে আলোতে আমি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি আমার এই জন্মের শত্রুকে। তার গান্ডিব ধরা উদ্ধত হাতে চকচক করছে অঞ্জলিক বাণ, যা আমার মস্তক ছেদ করার জন্য একটু পরেই ছুটে আসবে।পান্ডব বীর অর্জুন, যে আমার চরম শত্রু আবার আমার সহদর কনিষ্ঠ ভ্রাতা।ওই...

মীরাবাঈ, লেডি ম্যাকবেথ, বিনোদিনীর রুপে মঞ্চ মাতিয়ে রাখা তিনকড়ি দাসী

ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও বড়লোক বাবুর রক্ষিতা হতে হয়েছিল তাকে। আর সেই রক্ষিতার পুরস্কার হিসেবেই পেয়েছিলেন তিন তিনটে বাড়ি। তিনটি বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও তা নিজের করে ধরে রাখার কোন ইচ্ছে ছিল না তার। বাড়ি তিনটির একটি তার রক্ষক বাবুর ছেলেকে এবং বাকি দুটো মৃত্যুর আগে...

নারীকে ‘দ্বিতীয় শ্রেণী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সৃষ্টির শুরুর ইতিহাসের সাথে পরবর্তী ইতিহাসের সংঘাত

প্রত্যেক সময়ের প্রেক্ষাপটেই দেখতে পাওয়া যায়, নারীর ওপর সমাজ কতোগুলো বিধি-নিষেধ আরোপ করে থাকে। তাদের চলা-ফেরা, বাক-স্বাধীনতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সমস্ত কিছুর উপর প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে সমাজ। তবে এতো বাধা-বিপত্তির পরও প্রতিটি যুগে অসংখ্য নারী...

তিন সম্রাটের শাসনের প্রত্যক্ষদর্শী মুঘল রাজকন্যা গুলবদন বানু বেগম

“ইতিহাসের বই দিয়ে ব্যক্তিত্ব বিচার করলে এটি দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, পুরুষরাই ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক চরিত্র ছিলেন। অন্তত মনে রাখার মতো কোনো চরিত্র যদি থেকে থাকে, তবে পুরুষরাই সবার সামনে চলে আসেন। অবশ্যই এটি একটি অসত্য বিষয়। কিন্তু আমরা এই অসত্য বিষয়টিকেই...

আমার চোখে ‘বড় আপা’, অগ্রণী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ড. কাজী আনোয়ারা মনসুর

ছেলেবেলা থেকে আমার গড়ে উঠবার প্রতিটি ধাপে আমার অন্তরাত্মাকে পরিশুদ্ধ করবার ক্ষেত্রে, আমার অনুধাবন ও উপলব্ধিকে গঠনমূলক রূপ প্রদানের ক্ষেত্রে এবং আমার স্বশিক্ষাকে পরিপূর্ণ করবার ক্ষেত্রে বেশ ক’জন ব্যক্তির অবদান রয়েছে। এই তালিকায় অবশ্যই আমার মা, বাবা, খালাসহ পরিবারের...

বিস্মৃতপ্রায় অযোধ্যার রাজমাতা: মালিকা কিশোয়ার

লখনৌ এর বিশাল রাজবাড়ি। অন্দরমহল থেকে ছুটে আসছেন অযোধ্যার রাজমাতা। তার চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট; পা খালি, জুতো ছাড়াই ছুটে আসছেন তিনি; গা থেকে খুলে পড়ে যাচ্ছে চাদর। রাজমাতার এমন অবস্থা দেখে পেছন পেছন ছুটছেন দাসীরা। কি হলো রাজমাতার! নিজের কামরা থেকে কদাচিৎ বের...