সরু কাঠির মাথায় বারুদ দেয়া বাক্স দিয়াশলাই যা আমরা প্রতিদিন আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করি।আগুন জ্বালানোর এই ব্যবস্থাটি কিন্তু আগে এত সহজ ছিল না,এর আবিস্কারের পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস। ম্যাচ বা দিয়াশলাইয়ের আবিস্কারক বলা হচ্ছে ইংরেজ জন ওয়াকারকে(১৭৮২-১৮৫৯)। ওয়াকার কর্মজীবনের শুরুতে সার্জন এ্যাসিটেন্ট হিসেবে কাজ করলেও তা ছেড়ে দেন কারণ তার আগ্রহ ছিল রসায়ন বিষয়ে। ওয়াকারের উৎসাহ ছিল কি ভাবে সহজে আগুন জ্বালানো যায় এবং জ্বলন্ত আগুন কে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেয়া যায়। এই কাজটি সেই সময়ে এত সহজ ছিল না। ওয়াকার স্বপ্ন পূরণের জন্য নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। গবেষণাগারে একদিন ওয়াকার অ্যান্টিমনির সালফাইড,পটাশের ক্লোরেট আর আঠার মিশ্রন নিয়ে গবেষণাকালে লক্ষ্য করেন যে সালফার প্রলেপ দেয়া কাঠের টুকরাটি ফায়ার প্লেসের সামান্য ঘর্ষণ লাগতেই আগুন জ্বলে উঠে। ঘটনাটির সময়কাল ছিল ১৮২৬,এর মাধ্যমে ওয়াকার বুঝতে পারেন তার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। ওয়াকার তার এই আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থাটির আবিষ্কারকে সকলের ব্যবহারের জন্য বাজারে ছেড়ে দেন। ওয়াকারের আবিষ্কৃত ম্যাচ বাক্সের তখন দাম ছিল এক শিলিং,যাতে থাকতো ৫০টি কাঠি। বাক্সের কাঠিগুলোতে সালফারের আস্তরণ আর মাথায় থাকতো প্রলেপ, যা বাক্সের গায়ের শিরিষ কাগজের সাথে ঘষা দিলেই জ্বলে উঠতো আগুন। জন ওয়াকার তার ম্যাচ বাক্সের নাম দিয়েছিলেন “Congreves ” যা ছিল ইংরেজ আবিস্কারক ও আর্টিলারি রকেট গবেষণার অগ্রদূত স্যার উইলিয়াম কনগ্রেভ কে সম্মানিত করার জন্য। জনসাধারণের ব্যবহারের সুবিধার জন্য জন ওয়াকার পেটেন্ট না করেই তার আবিষ্কারটি জন সমক্ষে নিয়ে আসেন। স্যামুয়েল জোনস এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে নিজের নামে পেটেন্টটি করে নেন। জন ওয়াকারের আবিষ্কার যাদের সামনে আনা হয় স্যামুয়েল ছিলেন তাদেরই একজন। স্যামুয়েল তার দিয়াশলাইয়ের নাম দেন লুসিফার, যার বিক্রিও ছিল অনেক বেশি। সেই সময় ধুমপানের হারও বেড়ে যায় এই দিয়াশলাইয়ের সহজ্য লভ্যতার জন্য।