রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসের জটিল সমীকরণে হারিয়ে যাবার আগে বলে নেই যে,  রোমের রাষ্ট্র ব্যবস্থার ইতিহাসকে ভাগ করা যায় তিনটি প্রধান অধ্যায়ে। প্রথমটি ছিল রোমান রাজতন্ত্র,  প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৭৫৩ খ্রীষ্টপূর্বে রোমের প্রথম রাজা রোমুলাসের হাত ধরে (দেখুন রোমান সাম্রাজ্য: পর্ব-১) । দ্বিতীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থাটি ছিল রোমান প্রজাতন্ত্র, এটির সূচনা হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব ৫০৯ সালে। ৭৫৩ থেকে ৫০৯ সাল, ঐ ২৪৪ বৎসরে সাতজন রাজা পর্যায়ক্রমে রোম শাসন করে (দেখুন রোমান সাম্রাজ্য: পর্ব-২)। রোমান রাজতন্ত্রের সাত রাজার মধ্যে সপ্তম রাজা লুসিয়াস তারকুইনিয়াস সুপারবাসের (Lucius Tarquinius Superbus) উৎখাতের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটে রোমান রাজতন্ত্রের। প্রথম ছয় রাজার শাসনই ছিল জনকল্যাণমূলক। কিন্তু শেষজন, রাজা লুসিয়াস সুপারবাস ছিলেন একজন নিষ্ঠুর অত্যাচারী শাসক।

জনবিদ্রোহে লুসিয়াসের পতনের পর ক্লুসিয়ামের ইট্রুস্ক্যান (Etruscan) রাজা পোরসেনা রোমানদের পরাজিত করলে লুসিয়াস রোম থেকে বিতাড়িত হন।  কিন্তু ইট্রুস্ক্যান রাজা পোরসেনাও নিজেকে রোমের রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে না পেরে চলে যান রোম ছেড়ে। রাজতন্ত্রের প্রতি জনসাধারণের আগ্রহ এবং আস্থা না থাকাতে রোমে রাজতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে, রোমানরা প্রতিষ্ঠা করে প্রজাতন্ত্র। আগামী প্রায়  ৪৫০ বছরের জন্য যাত্রা শুরু হলো রোমান প্রজাতন্ত্রের।

নতুন প্রজাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায়, রাজার পরিবর্তে রোমানরা রোম শাসন করার জন্য প্রতি বছর নির্বাচনের মাধ্যমে দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে। যাদেরকে বলা হতো কনসাল।  রাজার স্থলাভিষিক্ত নির্বাচিত দুই কনসাল ছিলেন মূলত সামরিক কর্মকর্তা। তাদের প্রধান কাজ ছিল রাজ্য শাসন করা, এবং যুদ্ধে রোমের সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেয়া। খ্ৰীষ্টপূর্ব  ২৩৫ থেকে ২২৪ সালে এমনি একজন কনসাল ছিলেন টিটুস ম্যানলিউস (Titus-Manlius)। রোমের যুদ্ধকালীন জরুরী সময়ে, যখন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়তো, তখন রোম কনসালদের স্থলে সাময়িকভাবে একজন স্বৈরশাসক নিযুক্ত করা হতো। ঐ স্বৈরশাসকের সর্বোচ্চ মেয়াদকাল ছিল ছয় মাস।

প্রজাতন্ত্রের আগে রোমান রাজতন্ত্রে সিনেট নামের একটি পরিষদ রাজাকে রাজ্য শাসনে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতো। রোমান প্রজাতন্ত্রে ঐ একই সিনেট নির্বাচিত দুই কনসাল বা ম্যাজিস্ট্রেটকে রাজ্য শাসনে উপদেশ দিয়ে সাহায্য করতো। যদিও, তাত্ত্বিকভাবে সিনেটের দায়িত্ব ছিল শুধুমাত্র কনসালদ্বয়কে পরামর্শ দেয়া, আদতে রোমান প্রজাতন্ত্রে সিনেট হয়ে পড়ে অনেক শক্তিশালী। কারণ সিনেটের সব সদস্যরা ছিল রোমের বিত্তবান শ্রেণীর। দ্রুতই, সিনেট হয়ে পড়ে স্বৈরতান্ত্রিক এক স্বত্বা।

রোমান সাম্রাজ্য

কনসাল টাইটাস ম্যানলিয়াস টরকাটাস তার ছেলের শিরচ্ছেদের আদেশ দেন © Wikimedia

প্রজাতন্ত্রের শাসনের সময় ভিন্ন দু’টো জনপ্রিয় সমাবেশ হতো প্রতি বছর; শতবর্ষী (Centuriate) অ্যাসেম্বলি এবং উপজাতীয় (Tribal) এসেম্বলি । শতবর্ষী  সমাবেশটি ছিল মূলত সামরিক বিষয়কে কেন্দ্র করে। এই সমাবেশে ভোট দিয়ে যুদ্ধকালীন সময়ের জন্য একজন স্বৈরশাসক এবং শান্তির সময়ের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট  নির্বাচিত করা হতো। তাদেরকেই নির্বাচিত করা হতো যারা ছিল সামরিক অভিযানে পারদর্শী । উপজাতীয় অ্যাসেম্বলি ছিল একটি বে-সামরিক সমাবেশ, যেখানে সামরিক অভিজ্ঞতাহীন ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচিত করা হতো, যাদের দায়িত্ব ছিল রাজ্যের নাগরিক আইন প্রণয়ন করা এবং গুরুতর অপরাধের বিচার করা।

খ্রীষ্টপূর্ব ৪৫১ সালে রোমান প্রজাতন্ত্র প্রথম লিখিত আইন প্রণয়ন করে। মোট বারোটি ব্রোঞ্জের পাতে (Law of the Twelve Tables)  ঐ আইনগুলোকে খোদাই করে লেখা হয়েছিল এবং সাধারণ জনগণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল পড়ার জন্য। ঐ বিধানগুলো ছিল আর্থিক ঋণ, শিশুদের উপর অভিভাবকের কর্তৃত্ব, সম্পত্তির অধিকার, উত্তরাধিকার, এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত। বারো ব্রোঞ্জ পাতে লিখিত আইনগুলো ছিল পরবর্তী কালে প্রায় সব রোমান ব্যক্তি-আইনের ভিত্তি। যদিও রোমে এগুলো ছিল প্রথম লিখিত আইন, এর অনেক আগে,  খ্রীষ্টপূর্ব ২১০০-২০২৫ সালে মেসোপটেমিয়ায় (বর্তমানের ইরাক) সুমেরীয় ভাষায় প্রণীত উর-নাম্মুর (Ur-Nammu) ছিল বর্তমানে টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীনতম লিখিত আইন।

খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে এসে, রোম লাতিয়ামের (Latium) একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে পরিণত হলো।  লাতিয়াম কি? লাতিয়াম ছিল মধ্য পশ্চিম ইতালীর একটি অঞ্চল, যেখানে রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী রোম শহরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রোমের প্রতিবেশী,  ইট্রুরিয়া (Etruria) এলাকার ইট্রুস্ক্যান (Etruscan) অধিপতিদের সমর্থনের কারণে রোমান প্রজাতন্ত্র হয়ে পড়ে অনেক শক্তিশালী। আরো পরে, খ্রীষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে,   ইট্রুস্ক্যানদের আর্থিক সহায়তা, সমর্থন এবং রোমের দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে রোমান প্রজাতন্ত্রের হতে থাকে দ্রুত সম্প্রসারণ। বৃদ্ধি পেতে থাকে তাদের সীমানা।

রোমান প্রজাতন্ত্রের প্রথম দু’টো বড় যুদ্ধের মধ্যে একটি হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব ৪৩৭-৪২৬ সালে রোমের নিকটবর্তী  শহর ফিদেনার (Fidenae) সাথে । অন্য যুদ্ধটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ ইট্রুস্ক্যান শহর ভেইয়ের (Veii) বিরুদ্ধে। রোমান শক্তি পরিপূর্ণভাবে আরো বৃদ্ধি পাবার আগে, খ্রীষ্টপূর্ব ৩৯০ সালে গ্যালিক (Gallic) নামের এক দূর্ধর্ষ উপজাতি আচমকা পো (Po) নদীর উপত্যকা দিয়ে রোমে প্রবেশ করে শহরে লুটপাট আরম্ভ করে। তাদেরকে রোম থেকে বিতাড়িত করা প্রজাতন্ত্রের হয়ে পড়ে অসাধ্য। অবশেষে, প্রচুর স্বর্ণ মুক্তিপণ হিসেবে নিয়ে গ্যালিকরা চলে যায় রোম ছেড়ে।

গ্যালিকদের হাত থেকে নিস্তার পেয়ে রোমানরা ল্যাটিন লীগে ক্রমবর্ধমান আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে। এখানে বলে নেই, ল্যাটিন লীগ ছিল প্রাচীন রোম শহরের কাছেই লাতিয়াম অঞ্চলের প্রায় ৩০টি গ্রাম ও উপজাতির সম্মিলনে পারস্পরিক প্রতিরক্ষার জন্য এক প্রাচীন কনফেডারেশন বা রাষ্ট্রসংঘ। রোমানদের ক্রমশ আগ্রাসনে আতঙ্কিত হয়ে ল্যাটিনরা তাদের স্বাধীনতা ধরে রাখার জন্য রোমের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়। বেঁধে যায় রোম-ল্যাটিন যুদ্ধ। খ্রীষ্টপূর্ব ৩৪০ থেকে ৩৩৮ সাল চলে ঐ যুদ্ধ।  রোমানরা বিজয়ী হলে, মধ্য ইতালীতে রোম হয়ে পড়ে একচ্ছত্র আধিপত্যশীল রাজ্য। আরম্ভ হয় রোমানদের ইতালী ছাড়িয়ে দূর-দূরান্তে উপনিবেশ এবং সাম্রাজ্য বিস্তারের অভিলাষ এবং  অভিযান।

উত্তরে সামনাইটদের (Samnites) সাথে রোমানদের যুদ্ধ হয় তিনটি। সর্বশেষ যুদ্ধটি হয় খ্রীষ্টপূর্ব ২৯৮-২৯০ সালে। রোমানদের হয় জয়। তারপর খ্রীষ্টপূর্ব ২৮০-২৭৫ সালে পিররিক যুদ্ধে (Pyrrhic War) গ্রীকদের পরাজিত করলে রোমানরা হয়ে যায় প্রশ্নাতীতভাবে এক শক্তিশালী রাষ্ট্র। রোমান প্রজাতন্ত্রের দ্রুত সামরিক সাফল্যে এবং আগ্রাসীর কারণে, ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রকারী উত্তর আফ্রিকার বাণিজ্যিক শক্তি কার্থেজের (Carthage) সাথে সংঘর্ষ বেঁধে যায় রোমানদের। দ্বিতীয় পিউনিক ওয়ার (Punic War) নামের ঐ যুদ্ধটি খ্রীষ্টপূর্ব ২৬৪-১৪৬ সাল, প্রায় ১২০ বছর জুড়ে বিস্তৃত ছিল। ২২০-২০০ সাল পর্যন্ত কার্থেজের বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন তখনকার শ্রেষ্ট সামরিক নেতা হ্যানিবল (Hannibal)। অন্যদিকে, রোমান বাহিনীর প্রধান ছিলেন আরেক শ্রেষ্ট জেনারেল স্কিপিও আফ্রিকানাস দ্য এল্ডার (Scipio Africanus the Elder)।

রোমান সাম্রাজ্য

রোমান ভূমধ্যসাগর-২য় পিউনিক যুদ্ধ © Britannica

এই দু’ শ্রেষ্টর লড়াইয়ে, খ্ৰীষ্টপূর্ব ২১৯ সালে জেনারেল হ্যানিবল পরাজিত হন জেনারেল স্কিপিওর কাছে । হ্যানিবলের এই পরাজয়ের অনেক পরে, খ্রীষ্টপূর্ব ১৪৬ সালে রোমানরা সম্পূর্ণভাবে কার্থেজ দখল করে শহরটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে ফেলে। কার্থেজের ধ্বংস ছিল রোমানদের একটি প্রতিশোধমূলক কাজ। পূর্ববর্তী যুদ্ধে কার্থেজেদের কাছে রোমানদের পরাজয়ের প্রতিশোধই ছিল শহরটি ধ্বংসের প্রধান উদ্দেশ্য। এই ধ্বংসের  আরেকটি লক্ষ্য ছিল রোমের শত্রু এবং মিত্রদের মনে রোমানদের প্রতি ভয় এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করা। প্রশ্ন হতে পারে, কার্থেজ কেন রোমানদের কাছে এতো আকর্ষণীয় ছিল? এর  উত্তরে বলা যায়, শহরটির চারপাশে ছিল সমৃদ্ধশীল উর্বর বিস্তীর্ণ কৃষি জমি।

কার্থেজ জয় রোমানদের সাম্রাজ্য বিস্তারের স্পৃহা এবং গতিকে বাড়িয়ে দিলো কয়েকগুন। তারা সমগ্র ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারে আগ্রহী হয়ে পড়লো। পূর্ব দিকে, রোমানরা অতি শীঘ্রই সিরিয়া, মেসিডোনিয়া, গ্রীস এবং মিশরকে সামরিকভাবে পরাস্ত করলো। এই রাজ্যগুলো তখন ছিল ক্ষয়িষ্ণু  দূর্বল হেলেনিস্টিক (Hellenistic) সাম্রাজ্যের অংশ মাত্র। রোমানরা আচিয়ান লীগও (Achaean League) ধ্বংস করে পুরোপুরি এবং শহর করিন্থ (Corinth) পুড়িয়ে দেয় সম্পূর্ণভাবে। একটু  জেনে নেই এখানে  – আচিয়ান লীগ ছিল উত্তর ও মধ্য পেলোপনিসের ক্ষুদ্র গ্রীক রাজ্যগুলোর একটি হেলেনিস্টিক আমলের রাষ্ট্রসংঘ বা কনফেডারেশন।

অনেক প্রচেষ্টা এবং প্রচুর ক্ষতির মাধ্যমে নতুন সব অঞ্চল জয় করলেও, অধিকৃত অঞ্চল শাসন করা রোমানদের জন্য হয়ে পড়ে অনেক চ্যালেঞ্জিং। বিজিত রাজ্যের বৈচিত্র্যময় জনগণ, অপরিচিত জনবসতি, ভিন্ন সংস্কৃতি রোমানদের জন্য ঐ অঞ্চলগুলো শাসন করা হয়ে পড়ে অনেক কঠিন। রোমানরা বিজিত জনগণকে বিভিন্ন প্রদেশে ভাগ করে সেখানে নিযুক্ত করে রোমান গভর্নর। সমস্ত অ-রোমান নাগরিকদের ন্যস্ত করা হলো রোমান গভর্নরদের অধীনে। শহরগুলোর প্রতিটি স্থানে স্থাপন  করা হলো রোমান সৈন্য। অবাধ্য অ-রোমান জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সৈন্যদের দেয়া হলো অপরিসীম ক্ষমতা।

এতো যুদ্ধ-বিগ্রহ করে রোমান সাম্রাজ্য বিস্তারলাভ করলেও রোমের সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার হলো না কোন উন্নতি। তাদের জীবনযাত্রার মানের হলো অবনতি, আর্থিক অবস্থা হয়ে পড়লো দূর্বল। এই অবস্থার মূল কারণ ছিল, প্রজাতন্ত্রের শাসকদের সকল মনোযোগ এবং প্রচেষ্টা ছিল কি করে সাম্রাজ্য বিস্তার করা যায়। তাদের কাছে রোমের জনগণের উন্নয়ন ছিল সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত। গ্রাম অঞ্চলের রোমান কৃষকরা বিজিত প্রদেশগুলো থেকে উৎপাদিত পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতে অক্ষম হয়ে পড়লো। ফলশ্রুতিতে, অনেক রোমান কৃষক কৃষি-আবাদ ছেড়ে শহরে চলে যায় জীবিকার জন্য।

রোমের সাধারণ জনগণের সাথে অভিজাত শাসক সম্প্রদায়ের ব্যবধান বেড়ে গেল। অনেক শাসকরা সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে আকর্ষণীয় সার্কাস প্রদর্শনী করে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করলো তাদেরকে। শাসকদের অনেক প্রচেষ্টার পরও জনগণের ক্ষোভ উপশমিত হলো না। রোমে মানুষের উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকে দিন দিন। সমাজে দেখা গেল চরম অস্থিরতা। বিপ্লব আসন্ন। চলে এলো আত্মঘাতী গৃহযুদ্ধ। বিশৃঙ্খলায় গ্রাস হলো রোমান প্রজাতন্ত্র।

রোমান সাম্রাজ্য

রোমান সম্প্রসারণ ইতালি ২৯৮ – ২০১ © Britannica

রোমান গৃহযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী  উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন  সামরিক অধিনায়ক গাইউস মারিয়াস (Gaius Marius), যিনি সাতবার সরকারের কনসাল নির্বাচিত হয়েছিলেন; এবং সুল্লা (Sulla), আরেক সেনা কর্মকর্তা। রোমান প্রজাতন্ত্রের গৃহযুদ্ধ এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করলো স্বৈরশাসনের জন্য উপযুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ। ঐ রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা থেকে পরিত্রান পেতে, নির্বাচনের মাধ্যমেই রোম শাসনের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়  স্বৈরশাসক কর্নেলিয়াস সুল্লাকে। তিনি রোমান রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন খ্রীষ্টপূর্ব ৮২-৮০ সাল পর্যন্ত। খ্রীষ্টপূর্ব  ৭৯ সালে সুল্লার পদত্যাগের পর, প্রজাতন্ত্রে ফিরে আসে আবারো অস্থিরতা। রোমের রাজনীতির মঞ্চে আগমন ঘটলো পম্পেই (Pompey), সিসেরো (Cicero), এবং ক্র্যাসসুসের (Crassus) মতো অভিজ্ঞ রাজনীতির খেলোয়াড়দের। রোম আরও ৫০ বছর প্রজাতন্ত্র হিসাবে শাসিত হওয়ার পর, খ্রীষ্টাব্দ ৬০ সালে জুলিয়াস সিজার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে রোমান প্রজাতন্ত্র রূপান্তরিত হতে শুরু করে রোমান সাম্রাজ্যে। সূচনা হলো নাটকীয় অনেক নতুন-নতুন অধ্যায়ের। রোমান সাম্রাজ্য: পর্ব-৪ বলবে সে সব নাটকীয় আখ্যান।

(চলবে)