গৌতম বুদ্ধ ছিলেন প্রাচীন ভারতের এক ধর্মগুরু এবং তাঁর দ্বারা প্রচারিত ধর্ম বিশ্বাস ও জীবন দর্শনকে বৌদ্ধ ধর্ম বলা হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে গৌতম বুদ্ধের জন্ম। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর অনুগামীরা তাঁর জীবনকথা ও শিক্ষা লিপিবদ্ধ করেন। তাঁর শিক্ষাগুলি প্রথম দিকে মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। বুদ্ধের মৃত্যুর প্রায় চারশো বছর পর এগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়। গোটা বিশ্বে শান্তির বাণী শুনিয়েছিলেন যে মানুষটা মৃত্যুর পর তাঁর দেহাংশ কোথায় তাই নিয়ে তো থাকবে নানা জল্পনা কল্পনা l এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছিল অনেক বিতর্ক, অনেক অনুসন্ধান।
সন্দেহ বাড়ে। তবে একটু খুঁটিয়ে দেখতেই তাজ্জব বনে যান ঐতিহাসিকরা। পাত্রের গায়ে খোদাই করা লিপির পাঠোদ্ধার করে তাঁরা জানতে পারেন, এই দেহাংশগুলো স্বয়ং গৌতম বুদ্ধের! শুধু তাই নয়, পরবর্তীকালে ওই অঞ্চলে আরও কিছু পাত্র পাওয়া যায়। সেখান থেকেও পাওয়া যায় বুদ্ধের দেহাংশ!
বুদ্ধের ইতিহাস খুঁটিয়ে দেখলে জানা যাবে, মৃত্যুর পর তাঁর দেহাংশ আটটি পরিবারের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। যার মধ্যে ছিল বুদ্ধের পিতৃবংশ শাক্যরাও। ঐতিহাসিকরা মনে করেছিলেন, সেই শাক্যদেরই প্রাপ্ত দেহাংশেরই খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে উঠে আসে আরও একটি নতুন তথ্য।
বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে যাঁদের নাম জড়িত, তাঁদের মধ্যে প্রথম সারিতে থাকবে সম্রাট অশোকের নাম। ঐতিহাসিকদের গবেষণা বলছে, গৌতম বুদ্ধের দেহাংশ যেসব জায়গায় পোঁতা হয়েছিল, অশোক সেইসব জায়গা থেকে নিয়ে আসেন সেসব। তারপর নিজের বানানো বৌদ্ধস্তূপগুলির ভেতর সেগুলোকে সংরক্ষণ করেন। ঐতিহাসিকরা মনে করছেন, পিপরাহওয়া গ্রামে বুদ্ধের দেহাংশ অশোকই রেখেছিলেন। সেই দেহাংশ রাখা আছে দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামে। তবে পাত্রগুলির দর্শন পেতে গেলে একবার ঢুঁ মারতেই হবে কলকাতার মিউজিয়ামে।