ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যাংকাররা সাধারণতঃ ভিন্ন ধাতের লোক। কোন রকম কল্পনা বিলাস তাদের মধ্যে দেখা যায় না।জন উইলিয়াম ছিলেন একাধারে ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যাংকার ।তা সত্বেও ১৮১২ সালের মে মাসের তিন কি চার তারিখ রাত্রে তিনি এমন একটি বিশেষ বিষয় অবগত হলেন যা ইতিপূর্বে কখনও ঘটেছে বলে শোনা যায়নি।একজন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর হত্যা দৃশ্য স্বপ্নে তিনি ছবির মত বিস্তৃত ভাবে দেখতে পেলেন। তিনি তার স্বপ্ন বৃত্তান্ত এবারক্রম্বি নামে একজন বিশিষ্ট লেখকের কাছে ব্যক্ত করেন।এবারক্রম্বি ১৮৩৪ সালে তা নিম্নলিখিত ভাবে বর্ণনা করেনঃ
মিঃউইলিয়াম্স হাউস অব কমন্স সভায় উপস্থিত ছিলেন।সেখানে তিনি নীলকোট ও সাদাওয়েস্ট কোট পরিহিত একজন ছোটখাটো লোককে দেখতে পেলেন।তারপর তিনি দেখলেন ধাতব বোতাম সহ বাদামী রঙের কোট পরিহিত অন্য একটি লোক কোটের ভেতর থেকে পিস্তল বের করল। সে নীলকোট পরা ছোটখাটো লোকটির দিকে পিস্তল তাক করে কয়েকবার গুলি ছুড়লো ।আক্রান্ত লোকটি সঙ্গে সঙ্গে মুখ থুবরে মাটিতে পড়ে গেল।তার বাম বক্ষদেশ থেকে ফিনকী দিয়ে রক্ত বের হতে থাকল। উইলিয়াম্স পিস্তলের গুলির শব্দ স্পষ্ট শুনতে পেলেন। রক্ত বেরিয়ে এসে লোকটির সাদা ওয়েষ্ট কোট ভিজিয়ে একেবারে রাঙিয়ে দিল।তিনি দেখলেন গুলিবিদ্ধ লোকটির চেহারা ধীরে ধীরে রক্তহীন ফ্যাকাসে হয়ে গেল।
আততায়ীকে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলা হল। স্বপ্নের ভিতর উইলিয়াম্স যখন জিজ্ঞাসা করলেন কাকে হত্যা করা হয়েছে-জবাবে তাকে বলা হল, ‘দি চ্যান্সেলার’।
সেই সময় স্পেন্সার পার্সিভাল একাধারে চ্যান্সেলার অব দি এক্সচেকার ও প্রাইম মিনিষ্টারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।এরপর একই রাত্রে আরও দুবার উইলিয়াম্স সেই স্বপ্ন দেখেন।
পরবর্তী সপ্তাহে তার অভিজ্ঞতার কথা তিনি বিভিন্ন লোকের কাছে জানান- তাদের মধ্যে তিনি তার ভাই ও তার ব্যবসার অংশীদার এবং তার নিজের শহর কর্নওয়ালের ফ্যালমাউথের আরো দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
উইলিয়াম্স এর স্বপ্নের পুর্ব বর্ণনা অনুযায়ী ১১ই মে হাউস অফ কমন্সের লবিতে আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পার্সিভাল মৃত্যু বরণ করেন। আততায়ী ছিলেন জন বেলিংহ্যাম। স্বপ্নের প্রতিটি ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সত্যে পরিণত হয় । প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যে হত্যা কারী ও নিহত ব্যক্তির চেহারা থেকে শুরু করে সবকিছু তার দেখা স্বপ্নের সাথে হুবহু মিলে যায়।
জন উইলিয়াম্স এর অভিজ্ঞতার কথা এবং এই হত্যার বিবরণ এই ঘটনার পাঁচদিন পর ‘টাইমস প্ত্রিকায়’ বিশেষ প্রতিবেদন হিসাবে ছাপা হয়।