সিঙ্গারা, Stay Curioussis

বাঙ্গালি-অবাঙ্গালি, ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই সিঙ্গারা ভালোবাসেন । ভোজন রসিক মানুষের গরম গরম তেলে ভাজার প্রতি টান বরাবরই। তেলেভাজার মধ্যে আবার পুরি, চপ, সিঙ্গারা দেখলেই যেন আর লোভ সামলাতে পারে নাl হালকা খাবার হিসেবে সিঙ্গারা সব মানুষের কাছেই বেশ জনপ্রিয় । তবে এটি একটি বিদেশি খাবার। এই সিঙ্গারার জন্ম হলো কি ভাবে??? সিঙ্গারার ইতিহাস কিন্তু অনেক পুরনো । একদল ইতিহাসবিদদের মতে ফারসি শব্দ সংবোসাগ থেকেই এই সিঙ্গাড়া শব্দের উৎপত্তি। আবার কোন কোন ইতিহাসবিদদের দাবি গজনবী সাম্রাজ্যের সম্রাট এর দরবারে এক ধরনের নোনতা মুচমুচে খাবার পরিবেশন করা হতো। যার মধ্যে কিমা শুকনা বাদামজাতীয় অনেক কিছু দেওয়া হতো। এটাই হলো সিঙ্গারার আদি রূপ। ইতিহাসবিদদের মতে সিঙ্গারার আর্বিভাব ঘটে ভারতে।

বিখ্যাত ইরানি ইতিহাসবিদ আবুল ফজল বায়হাকির দাবি ইরান থেকেই নাকি সিঙ্গারা ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছে অর্থাৎ তার মতে সিঙ্গারার জন্ম স্থান ‘ইরান’। আবুল ফজল বায়হাকির “তারিখ – এ – বেহাগি” বইয়েও ‘সাম্বাসা’র উল্লেখ করা হয়েছে, আবুল ফজলের দাবি অনুযায়ী ইরানের এই ‘সাম্বসা’ই সিঙ্গারার আদি রূপ । আমির খসরুর রচনাতেও এর উল্লেখ রয়েছে।

তবে সিঙ্গারার জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ আর বিতর্ক থাকলেও বাংলাদেশে আসার পর এর স্বাদ উপকরণে যে আমূল পরিবর্তন এসেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বাংলাদেশে সিঙ্গারাকে আরও সুস্বাদু করে তোলার জন্য তার মধ্যে মরিচ ও বিভিন্ন মশলা ব্যবহার করা হয় সিঙ্গারাকে মজাদার করে তোলার জন্য পর্তুগিজদেরও বিশাল অবদান রয়েছে। ১৬ শতকে পর্তুগিজরা ভারতের মাটিতে পা রাখার পর এদেশের মানুষের পরিচয় হয় ‘আলু’ নামের চমৎকার এক সবজির সাথে। পরবর্তিকালে এই সবজিকে এ দেশের মানুষ যে কতটা আপন করে নিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। ১৬ শতকের পর থেকে সিঙ্গারার মূল উপকরণ হয়ে উঠে এই আলু।

বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রান্তে আলাদা আলাদা স্বাদের সিঙ্গারা পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও মাংসের সিঙ্গারা, ফুল কপির সিঙ্গারা, পনির সিঙ্গারা, ক্ষীরের সিঙ্গারা ইত্যাদি। নানা রকমের, নানা স্বাদের সিঙ্গারার চল থাকলেও আলুর পুর দেওয়া সিঙ্গারা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় তাইতো আলু ছাড়া সিঙ্গারার কথা আমরা ভাবতেই পারি না।।

সিঙ্গারা, Stay Curioussis
সিঙ্গারা, Stay Curioussis
সিঙ্গারা, Stay Curioussis