আমাদের বাড়িটার তিন দিকেই বারান্দা। বাড়ির সামনে বিশাল এক লন। আর পেছনে সবজিবাগান। ১৯৫৮ সালে বাড়িটা তৈরি হওয়ার পর আমেরিকান এম্বাসির ক্যাসেল নামের এক মার্কিনির কাছে ভাড়া ছিল। সে–ই তার দেশের কায়দায় সাজিয়েছিল বাগানটা, দেয়াল ঘেঁষে লাগানো নানা রঙের স্থায়ী ফুলের গাছ, রঙ্গন, খই ফুল, ক্যানা স্থলপদ্ম, পাতাবাহার ইত্যাদি। আর মাঝবরাবর একটা পঞ্চটিয়া। তারপর মাঠের চারপাশ ঘুরে বড় বড় সব মৌসুমি ফুলের বেড। গেট দিয়ে ঢুকে, গাড়িবারান্দা পর্যন্ত বাঁকা বাঁকা করে লাগানো ইটের দুপাশে সার বেঁধে সবুজ পাতার ভেতর ফুটে থাকত গোলাপি লিলি। গেটের ঠিক দশ ফুট ভেতরে ড্রাইভওয়ের দুই পাশে ছাতার মতো ছায়া দেওয়া দুটো চেরিগাছ। একটা দেয়াল ঘেঁষে আর একটা লনের এককোণে। চেরিগাছ দুটোর পাতাগুলো এমনভাবে এক অপরের গায়ে মিশে গিয়েছিল, যেন মনে হতো, তারা একজন আরেকজনের হাত ধরে আছে, যাতে করে তাদের তৈরি তোরণের ভেতর দিয়ে আমরা ওপেনটি বায়োস্কোপ খেলতে পারি। প্রাচীরের বাইরে পুরোটা পথে লাগানো আছে হলুদ রাধাচূড়া আর সাদা ফুলে ছাওয়া কাঞ্চনগাছ। বেশ কিছুটা ভেতরে এলে বাড়ির দুপাশে দুটো কৃষ্ণচূড়া গাছ। সামনের বারান্দা দিয়ে মাঠে নামার সিঁড়িটাকে দুদিক থেকে ঘিরে আছে অপূর্ব এক লতানো ক্যাকটাস। ফুলের মধ্যে ভাসে বলেই হয়তো বাবা বাড়িটার নাম দিয়েছেন ‘রূপকথা’।
আজকের বিকেলটা বেশ সুন্দর। মা লনের এক কোণে সাদা–কালো প্লাস্টিকের বেত দিয়ে বোনা চেয়ারে বসে উল বুনছেন। বাবা বিকেল হতে না হতেই ছুটেছেন কোনো সভা–সমিতিতে। আমরা তিন বোন বাড়ির পাইক বরকন্দাজ মনসুর, সাপ্পাই—এদের নিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলছি। মা–ও আমাদের স ঙ্গে খেলেন, তবে আজ তিনি উল বোনায় ব্যস্ত। দৃষ্টিতে ঘোর তৃপ্তি নিয়ে বারবার চোখ তুলে দেখছিলেন চারপাশের ডালিয়া, কসমস, হোলিহক আর ফ্লক্সের বেডগুলোয়—সত্যি বড় সুন্দর হয়েছে এবারে ফুলগুলো। বিকেলের পড়ন্ত রোদ মায়ের কাঁচা হলুদ রঙের গালে আর সেলাইরত ব্যস্ত দুটো হাতের ওপর পড়ে দারুণ এক ম্যাজিক তৈরি করেছিল। হঠাৎ উল গুটিয়ে বললেন, ‘সন্ধ্যা নামল বলে! রিমা, রিয়া, রিফ্ফি হাত–মুখ ধুয়ে পড়তে চলে যাও।’ তাঁর এই গম্ভীর গলার হাঁকে আর মা নেই; আছে আজিমপুর গার্লস হাই স্কুলের ডাকসাইটে সাঈদা আপা। সুড়সুড় করে সবাই ভেতরে এলাম।
দোনলা কী, আমাদের তো একনলা বন্দুকও নেই। ভয় দেখানোর জন্যই এই হাঁকডাক। এবার ছেলেগুলো ভয় পেল। দেয়াল টপকানো তখন সহজ ব্যাপার। কারণ, তখন দেয়ালগুলো ছিল বড়জোর চার ফুট উঁচু। তা আবার ফাঁক রেখে রেখে ডিজাইন করা হতো। এখনকার মতো ৮/১০ ফুট দেয়াল দিয়ে দুর্গ বানানোর প্রয়োজন তখন পড়ত না। শুকুর আলির চিৎকারে বাবা বেরিয়ে এলেন। জানতে চাইলেন, কী হইছে?
আমাদের পড়ার টেবিলগুলো সব সামনের বারান্দায়। পড়ছি না ছাই! কদিন আগে তামান্না খালার বিয়েতে সিলেটে গিয়েছিলাম। সেখানে একটা গান শুনে এসেছি, ‘ডেগেরও বিতরে ডাউলে চাউলে উতরাইলিল সই’। তখনকার এক নামকরা ব্যান্ড সংগীতের দল ছিল আন্ডারগ্রাউন্ড পিস লাভার্স। সিলেটে গান গাইতে গিয়ে তাদের নাকি পচা ডিম খাওয়ার জোগাড়। কারণ, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গাওয়া তাদের ইংরেজি গান বা ইংরেজি স্টাইলে বাংলা গানের সমঝদার সেখানে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই দ্বিতীয় দিন শো করার আগে কয়েকটা সিলেটি গান শিখে নিয়েছিল। তাদেরই মধ্যে একটা গানের কলি ‘ডেগের বিতরে’, পড়া বাদ দিয়ে রিমা গেয়ে উঠল। রিফিও সঙ্গে সঙ্গে সেটা ধরল। যেহেতু আমিই সিলেট থেকে শিখে এসেছি, তাই ভুল তো একটু ধরতেই হয়। বেশ মাতব্বরির সুরে বললাম, ‘নাহ্ তোদের হচ্ছে না। এমন হবে।’—বলে আমিও গলা ছাড়লাম। পাশে মায়ের শোবার ঘর থেকে হুঙ্কার এল, ‘হচ্ছেটা কী?’ মাঝপথেই থেমে গেলাম। একটু পরই গেটে গাড়ির হর্ন বাজল। বাবা বাইরে থেকে ফিরলেন।
একটু পর হঠাৎ শুনি আমাদের গৃহকর্মী শুকুর আলির চিৎকার। শুকুর আলি আমাদের গ্রামেরই ছেলে। এমনিতেই সে একটু জোরে কথা বলে। তা–ও আবার খাসা টাঙ্গাইলের ভাষায়। কানে এল, ‘ক্যারা রে? এই পোলাই হান আমাইগো না বইলা বাড়ির ভিতরে ঢুকলা ক্যা? ফুলই বা ছিঁড়লা ক্যা?’ ১৩/১৪ বছরের বেশ কজন ছেলে। তারা বেশ অধিকারের সঙ্গেই বলল, ‘পরশুদিন ২১ ফেব্রুয়ারি। আমরা ডালা বানাব, তাই ছিঁড়ছি।’ শুকুর আলির গলা আরও একটু চড়ল, ‘ফুল তো কতজনেই নেয়। আমাইগো কাছে চায়, আমরা কেচি দিয়া কাইটা দেই।’ উঠতি বয়সের ছেলেপেলে! এসব তাদের সহ্য হবে কেন? রেগে গিয়ে উপরেই ফেলে দিল কটা গাছ। এত দিন ধরে যত্ন নিয়ে সবাই মিলে ফুটিয়েছে এই ফুল! তারস্বরে চিৎকার দিয়ে উঠল শুকুর, ‘ওই কে আছস রে? দোনলার বন্দুকটা নুইয়া তরতরি আয়সে।’
দোনলা কী, আমাদের তো একনলা বন্দুকও নেই। ভয় দেখানোর জন্যই এই হাঁকডাক। এবার ছেলেগুলো ভয় পেল। দেয়াল টপকানো তখন সহজ ব্যাপার। কারণ, তখন দেয়ালগুলো ছিল বড়জোর চার ফুট উঁচু। তা আবার ফাঁক রেখে রেখে ডিজাইন করা হতো। এখনকার মতো আট/দশ ফুট দেয়াল দিয়ে দুর্গ বানানোর প্রয়োজন তখন পড়ত না। শুকুর আলির চিৎকারে বাবা বেরিয়ে এলেন। জানতে চাইলেন, কী হইছে। শুকুর আলির ওপরের মাড়িটা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ উঁচু ছিল এবং বেশ কটা দাঁত ছিল গ্যাজা। সে তার উঁচু দন্ত বিকশিত করে হাসতে হাসতে বলল, ‘ফুল চুরি করবার আইছাল। বন্দুকের কথা কওনে পলাইছে।’ বলার ভেতর ছিল এক বিজয়ের হাসি। বাবা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘এমন জোরে আর চিৎকার দিবা না। আশেপাশের মানুষ কী ভাববে?’
পরদিন সকালে যথানিয়মে বাবা অফিসে গেলেন। মা–ও কোথায় বেরিয়েছিলেন। আমি তখন নতুন নতুন মেশিনে সেলাই শিখছি। মা একটা জামা ছেঁটে দিয়ে গেছেন। তাই সেলাই করার কসরত করছি। রিমা ড্রয়িংরুমের সোফায় শুয়ে মা বাসায় না থাকার সময়টার সদ্ব্যবহার করে মনের সুখে ‘বিচিত্রা’ আর ‘চিত্রালী’ পড়ছিল। সে আমাকে ডেকে বলল, ‘শোন শোন, জোর গুজব! ববিতা আর জাফর ইকবাল নাকি বিয়ে করতে যাচ্ছে। গুলশানে কোন ডিপলোম্যাটের বাড়িতে তাঁদের বিদেশি ফার্নিচার কিনতে দেখা গেছে।’ আমি উৎসুক হয়ে বললাম, তা–ই নাকি? রিমা বলল, এমনটাই তো লিখেছে। পাশের ঘর থেকে আনোয়ার ভাই বলে উঠলেন, ধুর ধুর এগুলো সব গাজাখুরে কথা। পত্রিকাগুলো এসব লিখে তাদের কাটতি আর তারকাদের জনপ্রিয়তা বাড়ায়। আনোয়ার ভাই আমাদের চাচাতো ভাই, তিনি আমাদের বাড়িতে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তাঁর চেহারায় সিনেমা অভিনেতা লালুর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য আবিষ্কার করে তাঁকে ডাকতাম লালু ভাই। খুব খেপে যেতেন তিনি। একটু পর তিনিও কোনো কাজে বেরিয়ে গেলেন।
আমার মা সিলেটি। সিলেটিদের ঐতিহ্য অনুযায়ী, মায়ের বিয়ের পর নানা–নানি শ্বশুরবাড়িতে তাঁদের মেয়ের দেখভাল করার জন্য চৌরীবুকে সঙ্গে দিয়েছিলেন। আমরা সব ভাইবোন তার হাতেই বড় হয়েছি। তাঁর ছেলে সাপ্পাই। সাপ্পাই আর রিফ্ফি গাড়িবারান্দার পাশে মার্বেল খেলছিল। তারা দুইজন ঊর্ধ্বশ্বাসে বাড়ির ভেতর ছুটে এল। আমাদের গেটের সামনে নাকি ৩০/৪০ জন ছেলে নিয়ে একটা ট্রাক থেমেছে।
আমি আর রিমা তো তখনো ববিতা-জাফর ইকবাল গুজব নিয়েই জল্পনা করছি। ওদের কথায় দ্রুত ড্রয়িংরুমের পর্দা সরিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি, সত্যিই তা–ই। ট্রাক থেকে নামছেন কিছু যুবক। যুবকদের মুখ থমথমে, চোখে যেন কিসের আক্রোশ! একটা অশনিসংকেত শিড়দাঁড়া বেয়ে নেমে গেল। সে সময় গেটে কোনো তালা–ফালা থাকত না। গেটটা ভেজানো থাকত, ওপরে একটা অংশ এ পাশে টেনে দিলেই খুলে যেত। বাড়ির দরজা–টরজা ততটা লাগানো থাকত না। তা ছাড়া আমাদের বাড়ির চারদিকেই তো বারান্দা। নেট দিয়ে ঘেরা। যে কেউ নেটের দরজা খুলে ঢুকে পড়তে পারে। তা–ই হলো। হুড়হুড় করে সবাই বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ল। ছোট বোন রিফিফের গলার চেইন ধরে টেনে তাঁকে চ্যালা কাঠ দিয়ে বাড়ি দিতে যাচ্ছিল। রিফ্ফি হাত জোড় করে বলল, ‘আমি ছোট আমাকে মারবেন না।’ রাগত স্বরে একজন বলল, ‘কালকে যে দোনলা বন্দুক দিয়ে গুলি ছুড়েছে, সে কই?’ শুনতে পেলাম, সমবয়সী গৃহকর্মী মনসুর বলে উঠল, ‘বড়রা তো কেউ বাইত্যে নাই।’ তা ছাড়া আমাদের তো কোনো দোনলা বন্দুক নেই। এ ঘর–ও ঘর খুঁজে তারা আবার গাড়ির দিকে দৌড়াল। হয়তো বড় নেতার সঙ্গে পরামর্শ করতে গেল। চৌরীবু এই সুযোগটা নিল। তাড়াতাড়ি আমাদের সবাইকে এক ইশারায় পেছনের বাড়ির পাঁচিলের দিকে দৌড়াতে বলল। আমরা সবাই একছুটে পেছনের বারান্দা দিয়ে বের হয়ে সবজিবাগান পেরিয়ে পাঁচিল টপকে ওই পাশে গিয়ে বসে গেলাম। ঠকঠক করে কাঁপছিলাম সবাই। আমাদের পুরো বাসাটা তখন রাগত ৩০/৪০ জন ছেলেদের পদচারণা আর আওয়াজে সরগরম।
পেছনের বাড়িতে থাকতেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সন্জীদা খাতুনের বড় বোন যোবায়েদা মির্জা। চুপ চুপ করে বসা অবস্থায় হেঁটে হেঁটে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে সব জানালাম। তাঁদের বাসা থেকেই ফোন করলাম বাবাকে। যোবায়েদা খালার স্বামী আমাদের একবারেই পছন্দ করতেন না। এতে তাঁর কোনো দোষ নেই। তাঁদের আর আমাদের বাড়ির পাঁচিল ঘেঁষে লাগানো ও বাড়ির পেয়ারা আর বরইগাছের ফলের বেশির ভাগ আমাদের পেটেই যেত। এ বিষয়ে বড় অপরাধী ছিল সাপ্পাই আর মনসুর। তারাই চুরি করে এনে আমাদের ভাগ দিত।
খবর পাওয়ামাত্রই মাকে তুলে বাড়িতে এলেন বাবা। পুলিশ ডাকলেন। পুলিশ সব শুনে, খোঁজ নিয়ে জানাবে বলে চলে গেল। বিকেল নাগাদ তারা খবর নিয়ে এল। ফুল নিতে আসা ছেলেগুলো কাল রাতে পাড়ার দাদাদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করেছে যে তারা মহান ২১ ফেব্রুয়ারির জন্য ফুল নিতে এলে তাদের উদ্দেশ্যে দোনলা বন্দুক দিয়ে গুলি ছোড়া হয়েছে। তারা যে পাড়ার, তাদের সঙ্গে ধানমন্ডির অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্য থাকায় সহজ ব্যাখ্যা হয়ে দাঁড়াল, ‘এটি বর্ধিষ্ণুদের অন্যায় অত্যাচার’। দাদারা তো আর চুপ থাকতে পারেন না। দোষী ব্যক্তিকে খুঁজে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্যই তাঁরা এসেছিলেন। না পেয়ে বিকেলে আসবেন বলে শাসিয়ে গেছেন। আমাদের গজদন্তী অতি উৎসাহী শুকুর আলির ভয় দেখানোই হয়ে দাঁড়িয়েছিল পুরো পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কারণ। বাবা পুলিশদের জানালেন, পুরোটাই গুজব। আমাদের কোনো দোনলা বন্দুক নেই। পরবর্তী সময়ে বাবা এবং অন্য মুরব্বিরা তাঁদের নানা রকম সামাজিক নেটওয়ার্ক খাটিয়ে দাদাদের নিরস্ত করেন। মামা, খালা, ফুফু—সবার কাছেই শুকুর আলি একচোট বকাবাদ্য শুনল।
ঘটনা মিটে গেলেও আমাদের আতঙ্ক তো সহজে যায়নি। সেসব মুহূর্তের স্মৃতি তাড়া করে বেরিয়েছে অনেক দিন। এরপর আমাদের গেটে তালা লেগেছে। দরজা বন্ধ রাখার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে বারান্দাগুলো ঘিরে ফেলা হয়েছে। বেশ ক বছর মা আর মৌসুমি ফুল লাগাননি। তবে রিমা বরাবর ডেয়ারিং। কিছু দিন পরই সে হাসতে হাসতে বলছিল, ‘জাফর ইকবাল আর ববিতার বিয়ের গুজব নিয়ে আমরা যখন পুলকিত, তখন কি আমরা জানতাম যে আমরাও ভুক্তভোগী হব দোনলা বন্দুকের গুজবের?’ আমার বামপন্থী লেখক শিবির করা ফুফাতো ভাই শামিম। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল বেশ গভীর, ‘দেশে অনেকে থাকার জায়গা পায় না, আর তোমরা ফুল দিয়ে বাগান সাজাও! এটা তো তোমাদের ফুলে হ্যাভ-নটদের অধিকার প্রতিষ্ঠার চিরন্তন দ্বন্দ্ব। যে দেশে সমতা নেই, সে দেশে এমনটা তো হবেই। শুধু শুধু নিজেদের প্রবোধ দিও না যে এটা সময়ের অস্থিরতা।’
যা হোক, ৪৫ বছর পার হয়ে গেছে তারপর। আমরা সব ভাইবোনই কিন্তু মায়ের ফুল ফোটানোর শখটা চালু রেখেছি। আমি ফোটাই আমাদের বনানীর বাসার ছাদে। পুরো ছাদে যখন ডালিয়া, ক্রিসানথিমাম, ফ্লক্স ফুটে থাকে, তার ভেতরই যেন বেঁচে থাকে আমার চির–আদরের ধানমন্ডির ৫৫১ নম্বর বাসা—আমার পরিচয়। তার মধ্যেই যেন হেসে বেড়ান আমাদের মা আর বাবা।
– লোকগবেষক আশরাফ সিদ্দিকীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে মা–বাবার স্মৃতিচারণা করেছেন তাঁদের মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী।