শিল্পীর চোখে চেঙ্গিস খান

ছোট্ট ছেলে তেমুজিন। যার শৈশব হওয়ার কথা ছিল আনন্দের। কিন্তু মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর জীবনটা যেন একেবারে থমকে যায়। নিজের অধিকারের জন্য পদে পদে পেয়েছে শুধু বাঁধা আর অপমান। সেই ছোট্ট বয়সেই সে বুঝতে পেরেছিলো জীবনের আসল মানে। তাই সেই ছোট্ট তেমুজিন সব বাঁধা অতিক্রম করে হয়ে উঠেছিল এক মহানায়ক, চেঙ্গিস খান।চেঙ্গিস খানের নাম শোনেনি এমন মানুষ পৃথিবীতে নেই বললেই চলে। তার রাজ্য জয়ের কাহিনী, নিষ্ঠুরতার কাহিনী কম বেশি সবারই জানা। কিন্তু ঠিক কোন পরিস্থিতিতে পরে এতো নিষ্ঠুর হলেন চেঙ্গিস খান? তা কি আমরা সবাই জানি? জানলেও ঠিক কতটুকুই বা জানি? আজ সেই সম্পর্কেই গল্প করবো।

Image Source: Google

তেমুজিনের বাবা ইয়েসুগেই ছিলেন মঙ্গোলিয়ার বোরজিগিন বংশের সর্দার। ১১৬২ সালের এক বিশেষ দিনে ইয়েসুগেই তাতারদের সাথে এক যুদ্ধে জয়ী হয়ে ফেরেন। সেই তাতারদের এক নেতার নাম ছিল তেমুজিন। যুদ্ধ জয়ের খুশিতে ইয়েসুগেই নিজের ছেলের নাম সেই পরাজিত নেতার নামে রাখেন, তেমুজিন। ভালো মতোই বেড়ে উঠছিলো তেমুজিন। কোরাইট গোত্রের মেয়ে বোরটের সাথে বিয়ে ঠিক করেন তার বাবা। প্রাপ্তবয়স্ক হলেই দুজনকে বিয়ে দেয়া হবে এমনটাই কথা ছিলো। কিন্তু ভাগ্য হয়তো তার এই ভালো থাকা মেনে নিতে পারেনি। তাই মাত্র ৯ বছর বয়সে হারাতে হয় বাবাকে। পুরোনো শত্রুতার জের ধরে তাতাররা কৌশলে ইয়েসুগেইকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলে। সর্দারের মৃত্যুর পর তার ছেলেই হবে পরবর্তী সর্দার- এমনটাই নিয়ম ছিল। কিন্তু নিজের গোত্রের কিছু লোক ছোট্ট তেমুজিনকে নিজেদের সর্দার হিসেবে মেনে তো নেয়নি, উল্টো মা, ভাই,বোনসহ তেমুজিনকে গোত্র থেকেই বের করে দেয়।

Image Source: Google

বাগদত্তা বোরটকে রেখে পরিবারের সবাইকে নিয়ে পথে নেমে আসে অসহায় তেমুজিন। পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য গাছের শিকড় বাকড় খেতে হয়েছে তাদের। মাঝে মাঝে যদি ভাগ্য ভালো থাকতো তাহলে খরগোশ শিকার করে খেত। মাঝে মাঝে সেই খাবারও ভাগ্যে জুটতো না। একবার এই খাবার নিয়ে ভাইদের মধ্যে ঝগড়ায় তার হাতে খুন হয় তার ভাই। তাদের এই চরম অসহায় মুহূর্তে কেউ তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এইভাবেই কেটে যায় সাত সাতটি বছর। তখন তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কোরাইট গোত্র তাদের মেয়ে বোরটকে তেমুজিনের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়। বোরটও যেনো এতদিন এই দিনেরই অপেক্ষায় ছিলো। কিন্তু বিধি বাম ! বিয়ের কিছুদিন পরেই আরেক পুরোনো শত্রু মেরকিটরা তেমুজিনের পরিবারে উপর হামলা চালায় আর বোরটকে ধরে নিয়ে যায়। নিজের স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য বাবার পুরোনো বন্ধুদের কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতে তেমুজিন। কিন্তু লোকবলের অভাবে তারা কেউই তেমুজিনকে সেই সময় সাহায্য করতে পারেননি। প্রায় এক বছর পর যখন তেমুজিন বোরটকে উদ্ধার করে তখন সে ছিল সন্তান সম্ভবা। সেইসময় সে বুঝতে পারে, পৃথিবীটা আসলে অসহায়দের জন্য নয়। তাকে এখানে টিকে থাকতে হলে, অন্যকে মেরেই থাকতে হবে। ধীরে ধীরে তেমুজিন নিজের লোকবল বাড়াতে থাকেন। গড়ে তোলেন মঙ্গোল বাহিনী। আর তেমুজিন হয়ে উঠলেন সেই বাহিনীর নেতা, চেঙ্গিস খান।

Image Source: Google

চেঙ্গিস খানের মাথায় তখন বিশ্ব জয়ের নেশা। চলতে থাকে মঙ্গোল বাহিনীর ধ্বংসলীলা। যখন যার প্রতি ক্ষোভ হয়েছে, তাকেই নির্দ্বিধায় হত্যা করেছে তারা। কোনো রাজ্যকে আক্রমণের আগে তাদেরকে তিনি আত্মসমর্পনের সুযোগ দিতেন। যদি তারা কোনরকম সহিংসতায় না গিয়ে আত্মসমর্পণ করতো, তবে মৃত্যু কিছুদিন পরে আসতো। আর কেউ যদি চেঙ্গিসের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতো, তবেই চেঙ্গিস হিংস্র হয়ে উঠতেন। মঙ্গলবাহিনী একবার সমরকন্দে আক্রমণ করে বসে। সমরকন্দও এক লক্ষ সৈন্য নিয়ে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু তবুও মঙ্গোল বাহিনী ভয় পায়নি। চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে। সমরকন্দে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। একটা সময় সমরকন্দ মঙ্গোল বাহিনীর সাথে আর পেরে উঠেনি। ঠিক তখনি শুরু হয় চেঙ্গিস খানের ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ। সৈন্য-সামন্ত থেকে শুরু করে সাধারণ নারী পুরুষ কেউই বাদ পড়েনি তার হত্যার তালিকা থেকে। তাদের হত্যাকান্ড এতটাই নিষ্ঠুর ছিল যে, গর্ভবতী মায়ের পেট কেটে সেই সন্তানকেও তারা হত্যা করেছে। সেই নবজাত শিশুও তাদের পৈচাশিকতা থেকে রেহাই পায়নি।

Image Source: Google

বেশিরভাগ সময় তার ক্ষোভের আওতায় পড়তো মুসলমান ও ইহুদিরা। চেঙ্গিস খানের নিয়ম ছিল, যেইসব এলাকা সে জয় করবে, সেই সব জায়গায় তার নিয়ম মতো ধর্মীয় বিধিনিষেধ পালন করতে হবে। মঙ্গোলীয়দের মতো খাবারও খেতে হবে। যারা তার এই নিয়ম মানতে চায়নি, তাদের ভাগ্যেই নেমে এসেছিলো করুন পরিণতি। তার যুদ্ধের ইতিহাসগুলো ঘাটলে বোঝা যায়, যুদ্ধের ক্ষেত্রে তার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম ছিল না। চেঙ্গিস খানের প্রতিপক্ষরা যদি তার কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পাওয়ার আশায় আত্মসমর্পণ করতো, তবে বেশিরভাগ সময়ই তিনি তাদের হত্যাই করেছেন। তাদের মধ্যে যদি কেউ ভালো সৈন্য থাকতো তবে তাদের তিনি নিজের সৈন্যদলে নিয়ে নিতেন। এই যুদ্ধবন্দীদের প্রস্তুত করা হতো পরবর্তী যুদ্ধের জন্য। যুদ্ধের সময় তাদেরকে পাঠিয়ে দেয়া হতো একেবারে সামনে সারিতে। আর কেউ যদি যেতে না চাইতো তবে মঙ্গোল বাহিনীর হাতে প্রাণ দিতে হতো। ব্যাপারটা এমন যে, বেঁচে থাকতে হলে তাদের যুদ্ধ করেই বাঁচতে হবে।

Image Source: Google

চেঙ্গিস খানের নৃশংসতার বর্ণনা দিতে গেলে আরেকটি ঘটনা উল্লেখ করতে হবে। খারেজিয়াম সাম্রাজ্য জয়ের জন্য মঙ্গোল বাহিনী তখন উরগেঞ্চে অবস্থান নিচ্ছিলো। খারেজিয়াম সাম্রাজ্যের কঠিন প্রতিরোধের বিরুদ্ধে মঙ্গোল বাহিনী তেমন কোনো সুবিধাই করতে পারছিলো না। প্রায় ছয় মাসের মতো তারা সেখানে জয়ের জন্য আক্রমণ করে যাচ্ছিলো। অন্যদিকে খারেজিয়ামরাও গেরিলা পদ্ধতিতে মঙ্গোলিয়াদের উপর আক্রমণ করেই যাচ্ছিলো। এত সুরক্ষিত ছিল এই শহর যে মঙ্গোল সেনারা প্রতিবারের মতো তাদের হত্যাযজ্ঞ চালাতে ব্যর্থ হচ্ছিলো। নিজেদের এই হার তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। তারা সিদ্ধান্ত নিলো, পুরো শহরটাকে জ্বালিয়ে দেবে। যেই কথা, সেই কাজ। পুরো শর্ত আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে যাওয়ার পরেও বেঁচে থাকা সৈন্যরা আশা ছাড়েনি। তারা তখনও মঙ্গোল সেনাদের আক্রমণ করেই যাচ্ছিলো। কারণ তারা জানতো, ধরা পড়া মানে নিশ্চিত মৃত্যু। তারচেয়ে যুদ্ধ করে মরে যাওয়া তাদের কাছে বেশি সম্মানের ছিল। এই সময় চেঙ্গিস খান নিজেও অধৈর্য্য হয়ে পড়লেন। তিনি তখন নদীর বাঁধ ভেঙে দিয়ে উরগেঞ্চকে বন্যায় ভাসিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন আর এটাও বলে দিলেন, সেইসময় যাকেই পাবে তাকেই যেন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঐতিহাসিকদের মতে, সেইসময় উরগেঞ্চে চালানো হত্যাকাণ্ডে প্রায় দশ লাখের মতো মানুষ মারা গিয়েছিলো।

Image Source: Google

বিখ্যাত ইতিহাসবিদ রশিদ আল দীনের মতে, চীনের জনসংখ্যা মঙ্গোল বাহিনীর এই হত্যাকাণ্ডের দ্বারা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। কারণ আক্রমণ করার আগে তাদের জনসংখ্যা ছিল প্রায় দশ কোটির মতো। ১২৭৯ সাল পর্যন্ত চীনে মঙ্গোল বাহিনীর ধ্বংসলীলা চলতে থাকে। ১৩০০ সালের আদমশুমারিতে দেখা যায় সেই জনসংখ্যার পরিমান মাত্র ছয় কোটি। বাকি চার কোটি জনগণের কি হলো তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে আছে নানা মতভেদ। কিন্তু যায় হোক না কেন, এই চার কোটির বড়ো একটা অংশ যে মঙ্গোল বাহিনীর শিকার হয়েছে, তা নিয়ে কারও মতভেদের অবকাশ নেই। এতসব অত্যাচার, নিষ্ঠুরতার পরেও ১৯৯৫ সালে আমেরিকার একটি সংবাদপত্র “‘ওয়াশিংটন পোস্ট” এবং নিউজ চ্যানেল “সিএনএন” চেঙ্গিস খানকে হাজার বছরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হিসেবে “ম্যান অব দ্য মিলেনিয়াম” নির্বাচিত করে। কারণ তার নিসংশতার পরিমান যতই থাকুক না কেন, সাফল্য নেহাতই কম নয়। সেইসময় তার দূরদর্শিতা ছিল অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। একজন অশিক্ষিত, নিষ্ঠুর, বর্বর শাসকের পক্ষে কি করে এতো সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল তা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু এতো সাফল্য অর্জন করেও কোনোদিন নিজের কোনো ছবি আঁকানানি, কোনো মনুমেন্ট তৈরী করাননি, তার সাম্রাজ্যের মুদ্রায় তার প্রতিকৃতি বসাননি, এমনকি নিজ দেশে তার নামে কোনো প্রাসাদ বা উপাসনালয়ও নেই। বরং মৃত্যুশয্যায় তার শেষ ইচ্ছা ছিল, তাকে যেন নিজের জন্মভূমিতে কবর দেয়া হয় এবং তার সন্ধান যেন কেউ না পায়। এই মহান নেতার মৃত্যু নিয়েও আছে নানা রহস্য। পরবর্তীতে আমরা সেই সম্পর্কেও জানাবো।

 

শিউলি ফুলের বিষণ্ণতার গল্প

শরতের রাতের সৌন্দর্য বলতে যে ফুলকে বোঝানো হয়, তা হলো শিউলি ফুল। তবে এ সৌন্দর্য আনন্দের নয়, বেদনার প্রতীক। শিউলি ফুলের নাকি সব সময়ই মন খারাপ থাকে। সূর্যের ওপর তার এক রাশ অভিমান। তাই তো রাতের আঁধারেই নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পছন্দ করে সে এবং সূর্য ওঠার আগেই লুকিয়ে ঝরে পড়ে।...

মিশরীয় সিন্ডারেলা

মিশরে তখন ১৬ তম রাজবংশের যুগ। পার্সিয়ান আক্রমনের সম্ভাবনায় দিন গুণছে মিশর। সে সময় মিশরীয় সৈন্যদের তুলনায় গ্রীক সৈন্যদের কদর ছিলো অনেক বেশি। কারণ গ্রীক সৈন্যদের দক্ষতার গল্প প্রচলিত ছিলো বিশ্ব জুড়ে। এমন সময় ফারাও এপ্রিয়েজকে হত্যা করে মিশরের নতুন ফারাও হলেন রাজবংশের...

প্রাচীন সভ্যতায় ঈশ্বরের ধারণার উৎপত্তি ও সংখ্যাগত অবনমন

যে কোন সভ্যতার প্রাচীন ইতিহাস ঘাটলেই আমরা বহু ঈশ্বর বা গডের অস্তিত্বের কথা জানতে পারি। তবে আজকের প্রেক্ষাপটে ঈশ্বর সম্পর্কে এ ধারণা অনেকটাই পাল্টেছে। কেননা বর্তমান বিশ্বে বহু ধর্মমত এখনও বিদ্যমান থাকলেও ঈশ্বরের সংখ্যার বিষয়টি কমে এসেছে। একেশ্বরবাদ কিংবা বহুঈশ্বরবাদী...

হিন্দু দেব-দেবীর ধারণা প্রাচীন মধ্য এশীয় বিশ্বাসেরই প্রতিরূপ নয় তো?

সিংহবাহনের ওপর এক হাতে চাঁদ ও এক হাতে সূর্য নিয়ে চার হাতবিশিষ্ট এক দেবী যুদ্ধবাজ ভঙ্গিমায় আসীন নিজের সন্তানদের প্রতিরক্ষার জন্য। খুব পরিচিত লাগছে তাই না? নিশ্চয়ই দেবী দুর্গার সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন। কিন্তু এ তো দুর্গা নয়, ব্যাক্ট্রিয়ান মাতৃদেবী ‘নানায়াহ’ বা ‘ননা’...

মহাবীর কর্ণের অন্তিম যাত্রা

সূর্যদেব অস্তে চলে যাচ্ছেন। গোধূলিবেলার লালচে আলোতে আমি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি আমার এই জন্মের শত্রুকে। তার গান্ডিব ধরা উদ্ধত হাতে চকচক করছে অঞ্জলিক বাণ, যা আমার মস্তক ছেদ করার জন্য একটু পরেই ছুটে আসবে।পান্ডব বীর অর্জুন, যে আমার চরম শত্রু আবার আমার সহদর কনিষ্ঠ ভ্রাতা।ওই...

মেহেদী হাসান খান

মেহেদী হাসান খান ১৮ বছর বয়সের মেহেদী হাসান খান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়তে ভর্তি হলেন,কিন্তু পড়াশোনায় তার মন নাই! কিন্তু কেন? তিনি নাওয়া- খাওয়া, পড়াশোনা বাদ দিয়ে একটা ছোট্ট কম্পিউটার সম্বল করে বাংলা ভাষায় লেখার জন্য লড়াই শুরু করলেন। একটাই জেদ, বাংলা...

ঢাকার হারিয়ে যাওয়া সংগ্রহশালা- বলধা জাদুঘর

১৯২৫ সালের ঢাকা; ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে বেরিয়ে রেললাইন ধরে নারায়ণগঞ্জের দিকে কিছুদূর এগুলে উয়ারি। উয়ারির শেষ সীমানায় এক সরু রাস্তা চলে দিয়েছে নারিন্দার দিকে। সরু সেই রাস্তার একপাশে বহু পুরাতন খ্রিস্টান কবরখানা আর তার বিপরীতে উঁচু পাচিলঘেরা কম্পাউন্ডের ভেতর দোতলা...

সুন্দরবন ধ্বংসের ইতিবৃত্ত

ব্রাজিলের চিরসবুজ বিস্তৃত এমাজন (Amazon Rainforest) গহীন বনাঞ্চলকে বলা হয় বিশ্বের ফুসফুস, তেমনি সুন্দরবনও বাংলাদেশের শ্বাস-প্রশ্বাসের এক অঙ্গ। এই ঘন বনাঞ্চল বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও এক প্রতিরোধ। সুন্দরবনকে ঘিরে আশেপাশের জনপদে ছড়িয়ে আছে অনেক পৌরাণিক কাহিনী। এমনি...

ঢাকার এক বিস্মৃত চিকিৎসক

দিনটি ছিল ১৫ই নভেম্বর ১৮৬৪ সাল, মঙ্গলবার। সন্ধ্যা নামতে আর বেশি দেরি নেই। নারিন্দার খ্রিস্টান কবরস্থানের দীর্ঘ ঘাসের ঝোপে অবশ্য তখনই অন্ধকার নেমে এসেছে। সন্ধ্যা হলে এই এলাকায় সহজে কেউ পা বাড়ায় না। কিন্তু সেদিন পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য- আছে ইংরেজ, আরমেনিয়, দেশী সব...

ঢাকার ঐতিহাসিক তারা মসজিদ

পূর্বকথাঃ উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের কথা। আরমানিটোলার মহল্লা আলে আবু সাঈদে তখন এক প্রভাবশালী জমিদারের বাস, নাম- মীর্জা গোলাম পীর। দাদা মীর আবু সাঈদ  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রমরমা যুগে তুরস্ক থেকে এসে ঢাকায় থিতু হয়েছিলেন। মীর্জা গোলাম পীরের আরেক নাম মীর্জা আহমেদ জান। তবে...