সঙ্গীত জগতের এক উজ্জ্বল তারকা,যে কি না সুরের প্রতি এক মোহনীয় আকর্ষণে আবদ্ধ ছিল গোটা জীবন। আর আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন একের পর এক অনবদ্য সব সুর।তিনি অন্য কেউ নন,আঠারো শতকের অসাধারণ সুরকার মোজার্ট। পুরো নাম ভ্যালফগাং আমাদিউস মোজার্ট( Wolfgang Amadeus Mozart)।

১৭৭০ সালের জানুয়ারিতে ১৪ বছর বয়সী মোৎসার্ট।

১৭৫৬ সালে ২৭ জানুয়ারি অস্ট্রিয়ার সালসবার্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন মোজার্ট। শৈশবেই তাঁর সঙ্গীতের প্রতি গভীর  অনুরাগ প্রকাশ পায়।মাত্র ৩ বছর বয়সী শিশু মোজার্ট পিয়ানো বাজাতে শুরু করেন।পাঁচ  বছর বয়সে পিয়ানোতে ২ মিনিটের সুর সংযোজন করেন।আর সাত বছরে বিখ্যাত সোনাটা এবং আট বছর বয়সে একটি পূর্ণাঙ্গ সিম্ফনি রচনা; অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। তাঁর সঙ্গীতজ্ঞান ছিল মুগ্ধ করার মতো।মোজার্টের গীত সুরকে মনে হয় যেন দৈববাণী। শ্রোতারা সুরের আবেশে মাতোয়ারা হয়ে যায়, লীন হয়ে যায় অন্য এক জগতে। পাশ্চাত্য সঙ্গীত জগতের এই বিখ্যাত ধ্রুপদী শিল্পী তাঁর মোহিত সুরে জয় করেছেন অসংখ্য ভক্তের ভালোবাসা।

১৭৭০ সালে পোপ চতুর্দশ ক্লেমেন্তের নিকট থেকে গৃহীত অর্ডার অব দ্য গোল্ডেন স্পুর ব্যাজ পরিহিত মোৎসার্ট।

সেদিন ছিল ৫ ডিসেম্বর, ১৭৯১।অস্ট্রিয়ার রাজধানী শহর ভিয়েনার আকাশজুড়ে সকাল থেকেই কালো মেঘের আনাগোনা;তুমুল ঝড়ে  ভেসে যাচ্ছিল ছবির মতো শহরখানা।সেই দুর্যোগের দিনে বিদায় নেন এই মহান সুরকার মোজার্ট।

সঙ্গীত জগতের মেধাবী মোজার্ট কেবল ৩৫ বছর বেঁচেছিলেন। তাঁর কর্মময় সঙ্গীত জীবনে বিশ্বের সঙ্গীতানুরাগীদের জন্য রেখে যান ৬০০ অপেরা,নাতিদীর্ঘ অপেরা,পিয়ানো ও স্ট্রিং কোয়ার্টেটর অকেস্ট্রা,বেহালার সোনাটা,সেরিনেইডস মোটেটস,মাসেস সহ অনেক ধরনের সঙ্গীত। সম্ভবত অপেরাই তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ছিল। তাঁর শেষ তিনটি সিম্ফনি ( ৩৯,৪০ এবং ৪১ নং সিম্ফনি)  শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হয়।

মোজার্ট ১৯৮৮ সাথে ৫০০০ অস্ট্রিয়ান স্কিলিং নোটে

মৃত্যুর আগে অসমাপ্ত রেখে যান তাঁর অনন্য সৃষ্টি ‘ রিকোয়েম’।এ যেন তাঁর নিজেরই শোকগাঁথা।এ নিয়ে অনেকেই বলে থাকেন, নিজের মৃত্যুর শোক সঙ্গীত রচনা করে গেলেন এই মহান সুরস্রষ্টা।

একদিন যার সুর ঝঙ্কারে মানুষ ভুলে ছিলো জীবনের দুঃখ -কষ্ট, বেদনার কথা, যার সিম্ফনি বিমোহিত হতো সারা দুনিয়ার মানুষ – সেই সুর সম্রাট বড় একাকী, প্রায় নিঃস্ব অবস্থায় এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।