মধ্যযুগের ইউরোপে গির্জাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক এক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন গির্জার যাজক বা পোপ।  একসময় খ্রিস্টান চার্চগুলো ছিল সাধারণ উপাসনালয়। সহজ সরল ও অনাড়ম্বর ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনই ছিল চার্চগুলোর প্রতিদিনকার কাজ। আর সেই চার্চের দায়িত্বে থাকা পোপও ছিলেন সাধারণ ধর্মীয় নেতা। কিন্তু একসময় গির্জাগুলোর আলাদা এক সংগঠন তৈরি হয়৷ এই সংগঠনের মাধ্যমে গির্জায় থাকা যাজকরা শক্তিশালী হয়ে উঠেন। রোমান সাম্রাজ্যব্যাপী মধ্যযুগে চার্চের পোপরা প্রাধান্যপ বিস্তার করতে থাকেন। তারা হয়ে উঠেন সাম্রাজ্যের ত্রাণকর্তা। মানুষ তাঁদের ওপর বিশ্বাস রাখত। এমনকি রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাটগণও ক্ষমতা লাভের জন্য পোপদের ওপর নির্ভর করতেন। কিন্তু একসময় পোপদের অবাধ ক্ষমতার প্রশ্নে সংঘাত বাঁধে সম্রাটদের। ফলে মধ্যযুগের ইউরোপের পোপতান্ত্রিক হেজিমনির পতন হয়।

রোমান ক্যাথলিক চার্চের নিয়ন্ত্রণ ও প্রশাসন ব্যবস্থার ভিন্ন নাম ছিল পোপতন্ত্র বা Papacy. এই ক্যাথলিক চার্চ আর তার পোপদের নিয়ে বিকাশ লাভ করেছিল পোপতন্ত্রের। এই পোপতন্ত্রের আওতায় ছিল পশ্চিম ইউরোপ, পূর্ব ইউরোপে ছিল গ্রিক অর্থোডক্স চার্চের আধিপত্য। বিশাল রোমান সাম্রাজ্যের পোপদের আধিপত্যের শুরু হয় গির্জা সংগঠন প্যাট্রিয়ার্কেটের মাধ্যমে। গ্রামীণ চার্চগুলো একটা সময় শহরের চার্চের অধীন হয়ে পড়ে। শহরের চার্চের প্রধান ছিলেন প্রেসবাইটর। তিনি আবার ছিলেন জেলা বা ডায়োসেসের বিশপের অধীন। ডায়োসেস আবার থাকত প্রাদেশিক চার্চের অধীন। এই প্রাদেশিক চার্চগুলো মিলে গড়ে তুলেছিল প্যাট্রিয়ার্ক। সমগ্র রোমান সাম্রাজ্য বিভক্ত ছিল ৫ টি প্যাট্রিয়ার্কেটে। এগুলো ছিল রোম, কনস্টান্টিনোপল, আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেম ও এন্টিওর্ক। কিন্তু এদের মধ্যে প্রভাবশালী হয়ে পড়েছিল রোম প্যাট্রিয়ার্কেট। আর এই চার্চের প্রধান হিসেবে পোপ ধর্মীয় কর্তৃত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন।
রোমের চার্চ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল কেন?

মধ্যযুগের ইউরোপে রোমান সাম্রাজ্য বলতে বুঝানো হতো পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্য বা বাইজান্টাইনকে। ফলে বাইজান্টাইনের রাজধানী শহর কনস্টান্টিনোপল প্যাট্রিয়ার্কেট স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবশালী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেখা গেল তুলনামূলক ভঙ্গুর ও নামসর্বস্ব পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী রোম হয়ে উঠল পোপতন্ত্রের কেন্দ্রভূমি৷ খ্রিস্টানদের কাছে রোমান চার্চ ও রোম প্যাট্রিয়ার্কেটই ছিল শ্রদ্ধার প্রতিষ্ঠান। এর কারণও ছিল অনেক। প্রথমত, রোমে চার্চ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যীশুখ্রিস্টের প্রধান সহচর পিটার। পিটার ও তার পরবর্তী বিশপগণ রোমান শাসক ও ইহুদিদের অনেক অত্যাচার সহ্য করেও সেখানে খ্রিস্টধর্মের প্রচার চালিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে খ্রিস্টান জগতে এই কারণে রোমের চার্চের গুরুত্ব ছিল। দ্বিতীয়ত, রোমান সাম্রাজ্যের খ্রিস্টধর্ম প্রচারের নেতৃত্বে ছিলেন রোমের সেন্ট পিটার গির্জার যাজকগণ। তাদের কারণেই রোম ইউরোপের খ্রিস্ট ধর্মের প্রধান অঞ্চলে পরিণত হয়েছিল। যিশুখ্রিষ্টের প্রধান সহচর পিটার সম্পর্কে বলা হয়, তাঁকে পাপ ও পুণ্যের শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা দিয়ে স্বর্গের চাবি দেয়া হয়েছিল। এ ক্ষমতাকে বলা হয় Petrine succession. পিটারের পর রোমের যাজকরা নিজেদের এই ক্ষমতার অধিকারী বলে দাবি করেন। ফলে তারা সহজেই অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। পোপ প্রথম ডামাসাস ঘোষণা করেন, যিশুখ্রিস্ট কর্তৃক পিটারকে ক্ষমতা দানের মাধ্যমে প্রমাণ হয় রোমান চার্চই হল খ্রিস্টধর্মের প্রধান চার্চ। তৃতীয়ত, পূর্বে কনস্টান্টিনোপল নগর বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী হলে পশ্চিমের রোম শহর হিসেবে গুরুত্ব হারায়। ফলে রোমের সিংহাসন প্রায়ই শূন্য থাকত। এ সময় ধর্মীয় সিদ্ধান্তের পাশাপাশি রাজনৈতিক সিদ্ধানও পোপ নিতেন। ফলে রোমের চার্চ ও পোপ উভয়েরই গুরুত্ব বাড়তে থাকে। চতুর্থত, বর্বর জার্মানদের আক্রমণের মুখে খ্রিস্টধর্ম টিকিয়ে রাখার কৃতিত্বও ছিল রোমের পোপদের। রোমের চার্চের প্রাধান্য বিস্তারের পেছনে পোপ প্রথম গ্রেগরির ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে হবে। তিনি বুঝেছিলেন, রোমের চার্চকে ভাল অবস্থানে নিয়ে যেতে হলে প্রথমে বাইজান্টাইন রাজধানী কনস্টান্টিনোপলের প্রভাব থেকে  রোমান চার্চকে মুক্ত করতে হবে। প্রথম গ্রেগরি এর আগে কনস্টান্টিনোপলে চার্চে যাজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাই তিনি বুঝেছিলেন বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের বিরোধিতা করে কখনোই রোমের চার্চ তার প্রাধান্য তৈরি করতে পারবে না। তাই তিনি ব্রিটেন, উত্তর ইউরোপ ও মধ্য ইউরোপে ধর্মপ্রচারে যাজক প্রেরণ করেন। এই অঞ্চলগুলো ছিল বাইজান্টাইন প্রভাবের বাইরে। ফলে নতুন খ্রিস্টানরা রোমের চার্চকে নিজেদের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে।

তবে একথা বলতে হবে, রোমের গির্জার এই হেজিমনি মানতে পারেনি অন্য ৪ প্যাট্রিয়ার্কেট। বিশেষ করে কনস্টান্টিনোপল। ফলে এই দুই চার্চের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। পশ্চিম ইউরোপের চার্চগুলো রোমান চার্চকে অনুসরণ করে। আর পূর্ব ইউরোপের চার্চ অনুসরণ করে কনস্টান্টিনোপলকে। ফলে পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রিক অর্থোডক্স গির্জা আর পশ্চিমে রোমান ক্যাথলিক গির্জা।

পোপতন্ত্রের শক্তিশালী হয়ে উঠা

পোপতন্ত্র ও পোপদের শক্তিশালী করে তোলার প্রথম কাজটি করেন পোপ প্রথম গ্রেগরি। তার সময়ে রোমের পোপরা ঈশ্বরের সেবক হিসেবে পরিচিতি পান। তিনি খ্রিস্টানদের ঐক্যবদ্ধ করতে গড়ে তুলেন Society of christian Commonwealth নামের সংগঠন। তিনি জাগতিক অনেক কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতাকে পোপের আওতায় নিয়ে আসেন। সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর সার্বভৌম প্রধান করা হয় পোপকে। এমনকি সম্রাটের পক্ষে মুদ্রা জারি করা, আদালত পরিচালনার দায়িত্বও পান পোপ। এছাড়া প্রথম গ্রেগরি নিজে বিভিন্ন জনহিতকর কাজে  জড়িয়ে পোপতন্ত্রকে শক্তিশালী করেন। পোপদের ক্ষমতার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়েছিলেন রোমান সম্রাট ৩য় ভ্যালেন্টাইন। ৪৪৫ খ্রিস্টাব্দে এক ডিক্রি জারি করে তিনি পশ্চিমাঞ্চলের সকল বিশপ ও খ্রিস্টানদের রোমের পোপের অধীনতা স্বীকারের আহ্বান জানান। এভাবে পোপের ক্ষমতা এতোই বাড়তে থাকে যে সবাই পোপকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ভাবতে শুরু করে। পশ্চিমাঞ্চলের রোমান সাম্রাজ্যের পতনের প্রায় ৩০০ বছর পর ফ্রাংক টিউটন যোদ্ধা শার্লামেনকে পুনর্গঠিত রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট হিসেবে মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন পোপ তৃতীয় লিও সেন্টপিটার। শার্লামেনকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য থেকেও। এরপর থেকে সম্রাটের অভিষেক পোপের মাধ্যমে হবে’ এমন একটা রীতির প্রচলন হয়ে যায়। পোপদের মনে এই ধারণার জন্ম হয় যে, তাদেরকে ছাড়া কেউই সিংহাসনে বসতে পারবে না। আবারো শক্তিশালী হয় পোপতন্ত্র। পোপতন্ত্র সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে পড়েছিল এগারো ও বারো শতকে। সপ্তম গ্রেগরি, তৃতীয় আলেকজান্ডার, তৃতীয় ইনোসেন্ট নিজেদের ব্যক্তিগত চাতুর্যে পোপতন্ত্রকে বিকশিত করেন। পোপ সপ্তম গ্রেগরি পোপ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করার পর সম্রাটকে নিজের অধীন বলে রায় দেন।পোপের ক্ষমতা ও অধিকারের বর্ণনা দিয়ে ১০৭৫ সালে তিনি রচনা করেন Bictatus papae নামের এক গ্রন্থ। এই গ্রন্থে পোপের একচ্ছত্র আধিপত্য বিষয়ে বিশদ বর্ণনা দেয়া হয়। পোপতন্ত্র বিকাশে সবচেয়ে বড় ভূমিকাটি রেখেছিলেন পোপ তৃতীয় ইনোসেন্ট। তিনি মনে করতেন পোপের শক্তি অবিভাজ্য এবং অখণ্ড । তিনি ঘোষণা করেন আধ্যাত্মিক ও পার্থিব জগতের একমাত্র অধিপতি পোপ। তার মতে, ঈশ্বরের সকল নির্দেশ আসে পোপের কাছে। জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ইত্যাদি দেশকে তিনি পোপের আধিপত্য মানতে বাধ্য করেন।


পোপতন্ত্রের উত্থান যে দ্রুততার সাথে শুরু হয়েছিল তেমনিভাবে এর পতনও ঘটে। পোপদের অবাধ ক্ষমতা অনেক সম্রাটই মেনে নিতে চাননি। এছাড়া জার্মান আক্রমণের পর ধর্মপ্রাণ ও ধনী খ্রিস্টানরা দান ও কর দিয়ে রোমান চার্চকে আর্থিক দিক থেকে শক্তিশালী করে তুলেন। অনেকেই চার্চকে জমিজমাও প্রদান করেন। ফলে চার্চ হয়ে উঠে একটি সামন্ত প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি পোপ সপ্তম গ্রেগরি ও রোমান সম্রাট চতুর্থ হেনরির মধ্যকার দ্বন্দ্ব পোপতন্ত্রের কবর রচনা করে।  এছাড়া পোপ তৃতীয় আলেকজান্ডার কর্তৃক সম্রাট প্রথম ফ্রেডরিকেকে সমাজচ্যুত করার ঘোষণাও পোপতন্ত্রকে দুর্বল করে তোলে। তৃতীয় ইনোসেন্ট,তৃতীয় আলেকজান্ডার প্রমুখ পোপের দেখাদেখি পরবর্তী পোপেরাও জাগতিক বিষয়ে মনোনিবেশ করতে থাকেন। তাদের বিলাসী জীবনযাপন সাধারণ খ্রিস্টানদের হতাশ করে। শেষপর্যন্ত পনেরো শতকের দিকে ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকা পোপতন্ত্রের পতন ঘটে। মধ্যযুগীয় ইউরোপের এই পোপরা অবশেষে  কিংবদন্তির খাতায় নাম লেখান। অনেক সংস্কার করেও পোপতন্ত্রের পুরনো প্রভাব আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

তথ্যসূত্র

সভ্যতার ইতিহাস : প্রাচীন ও মধ্যযুগ

আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন ,  মোঃ আব্দুল কুদ্দুস সিকদার
https://www.britannica.com/topic/papacy

https://www.newworldencyclopedia.org/entry/papacy

 

শিউলি ফুলের বিষণ্ণতার গল্প

শরতের রাতের সৌন্দর্য বলতে যে ফুলকে বোঝানো হয়, তা হলো শিউলি ফুল। তবে এ সৌন্দর্য আনন্দের নয়, বেদনার প্রতীক। শিউলি ফুলের নাকি সব সময়ই মন খারাপ থাকে। সূর্যের ওপর তার এক রাশ অভিমান। তাই তো রাতের আঁধারেই নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পছন্দ করে সে এবং সূর্য ওঠার আগেই লুকিয়ে ঝরে পড়ে।...

মিশরীয় সিন্ডারেলা

মিশরে তখন ১৬ তম রাজবংশের যুগ। পার্সিয়ান আক্রমনের সম্ভাবনায় দিন গুণছে মিশর। সে সময় মিশরীয় সৈন্যদের তুলনায় গ্রীক সৈন্যদের কদর ছিলো অনেক বেশি। কারণ গ্রীক সৈন্যদের দক্ষতার গল্প প্রচলিত ছিলো বিশ্ব জুড়ে। এমন সময় ফারাও এপ্রিয়েজকে হত্যা করে মিশরের নতুন ফারাও হলেন রাজবংশের...

প্রাচীন সভ্যতায় ঈশ্বরের ধারণার উৎপত্তি ও সংখ্যাগত অবনমন

যে কোন সভ্যতার প্রাচীন ইতিহাস ঘাটলেই আমরা বহু ঈশ্বর বা গডের অস্তিত্বের কথা জানতে পারি। তবে আজকের প্রেক্ষাপটে ঈশ্বর সম্পর্কে এ ধারণা অনেকটাই পাল্টেছে। কেননা বর্তমান বিশ্বে বহু ধর্মমত এখনও বিদ্যমান থাকলেও ঈশ্বরের সংখ্যার বিষয়টি কমে এসেছে। একেশ্বরবাদ কিংবা বহুঈশ্বরবাদী...

হিন্দু দেব-দেবীর ধারণা প্রাচীন মধ্য এশীয় বিশ্বাসেরই প্রতিরূপ নয় তো?

সিংহবাহনের ওপর এক হাতে চাঁদ ও এক হাতে সূর্য নিয়ে চার হাতবিশিষ্ট এক দেবী যুদ্ধবাজ ভঙ্গিমায় আসীন নিজের সন্তানদের প্রতিরক্ষার জন্য। খুব পরিচিত লাগছে তাই না? নিশ্চয়ই দেবী দুর্গার সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন। কিন্তু এ তো দুর্গা নয়, ব্যাক্ট্রিয়ান মাতৃদেবী ‘নানায়াহ’ বা ‘ননা’...

মহাবীর কর্ণের অন্তিম যাত্রা

সূর্যদেব অস্তে চলে যাচ্ছেন। গোধূলিবেলার লালচে আলোতে আমি পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি আমার এই জন্মের শত্রুকে। তার গান্ডিব ধরা উদ্ধত হাতে চকচক করছে অঞ্জলিক বাণ, যা আমার মস্তক ছেদ করার জন্য একটু পরেই ছুটে আসবে।পান্ডব বীর অর্জুন, যে আমার চরম শত্রু আবার আমার সহদর কনিষ্ঠ ভ্রাতা।ওই...

মেহেদী হাসান খান

মেহেদী হাসান খান ১৮ বছর বয়সের মেহেদী হাসান খান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়তে ভর্তি হলেন,কিন্তু পড়াশোনায় তার মন নাই! কিন্তু কেন? তিনি নাওয়া- খাওয়া, পড়াশোনা বাদ দিয়ে একটা ছোট্ট কম্পিউটার সম্বল করে বাংলা ভাষায় লেখার জন্য লড়াই শুরু করলেন। একটাই জেদ, বাংলা...

ঢাকার হারিয়ে যাওয়া সংগ্রহশালা- বলধা জাদুঘর

১৯২৫ সালের ঢাকা; ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে বেরিয়ে রেললাইন ধরে নারায়ণগঞ্জের দিকে কিছুদূর এগুলে উয়ারি। উয়ারির শেষ সীমানায় এক সরু রাস্তা চলে দিয়েছে নারিন্দার দিকে। সরু সেই রাস্তার একপাশে বহু পুরাতন খ্রিস্টান কবরখানা আর তার বিপরীতে উঁচু পাচিলঘেরা কম্পাউন্ডের ভেতর দোতলা...

সুন্দরবন ধ্বংসের ইতিবৃত্ত

ব্রাজিলের চিরসবুজ বিস্তৃত এমাজন (Amazon Rainforest) গহীন বনাঞ্চলকে বলা হয় বিশ্বের ফুসফুস, তেমনি সুন্দরবনও বাংলাদেশের শ্বাস-প্রশ্বাসের এক অঙ্গ। এই ঘন বনাঞ্চল বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও এক প্রতিরোধ। সুন্দরবনকে ঘিরে আশেপাশের জনপদে ছড়িয়ে আছে অনেক পৌরাণিক কাহিনী। এমনি...

ঢাকার এক বিস্মৃত চিকিৎসক

দিনটি ছিল ১৫ই নভেম্বর ১৮৬৪ সাল, মঙ্গলবার। সন্ধ্যা নামতে আর বেশি দেরি নেই। নারিন্দার খ্রিস্টান কবরস্থানের দীর্ঘ ঘাসের ঝোপে অবশ্য তখনই অন্ধকার নেমে এসেছে। সন্ধ্যা হলে এই এলাকায় সহজে কেউ পা বাড়ায় না। কিন্তু সেদিন পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য- আছে ইংরেজ, আরমেনিয়, দেশী সব...

ঢাকার ঐতিহাসিক তারা মসজিদ

পূর্বকথাঃ উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের কথা। আরমানিটোলার মহল্লা আলে আবু সাঈদে তখন এক প্রভাবশালী জমিদারের বাস, নাম- মীর্জা গোলাম পীর। দাদা মীর আবু সাঈদ  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রমরমা যুগে তুরস্ক থেকে এসে ঢাকায় থিতু হয়েছিলেন। মীর্জা গোলাম পীরের আরেক নাম মীর্জা আহমেদ জান। তবে...